• বঙ্গবন্ধু বিপিএল
  • " />

     

    রংপুরকে বিদায় করে প্লে অফে ঢাকা

    রংপুরকে বিদায় করে প্লে অফে ঢাকা    

    ঢাকা প্লাটুন ২০ ওভারে ১৪৫/৯

    রংপুর রেঞ্জার্স ১৫.৩ ওভারে ৮৪ অলআউট

    ফলঃ ঢাকা ৬১ রানে জয়ী


    প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে ম্যাচটা জিততেই হতো রংপুর রেঞ্জার্সকে। আর এই ম্যাচ জিতলে শীর্ষ চার নিশ্চিত হয়ে যেত ঢাকা প্লাটুনসের। রংপুর সেই চ্যালেঞ্জ নিতে পারল না, ৬১ রানের বড় পরাজয়ে এক ম্যাচ আগেই ছিটকে পড়ল প্লে অফের দৌড় থেকে।

    অথচ লক্ষ্যটা ছিল ১৪৬ রানের। মিরপুরের উইকেট খুব ব্যাটিং বান্ধব না হলেও খুব কঠিন কোনো লক্ষ্যও নয়। কিন্তু রংপুরের বড় সর্বনাশ হয়ে গেল মাহেদীর প্রথম ওভারেই। পঞ্চম বলে মাহেদীকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তামিমকে ক্যাচ দিলেন নাঈম শেখ, ফিরলেন ৪ রানে। শেন ওয়াটসন মুখোমুখি প্রথম বলেই এলবিডব্লু, আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটা বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। রিভিউ নিয়েছিলেন, কিন্তু লাভ হয়নি। এক ম্যাচ রান পেয়ে আবার সেই রানখরায় চলে গেছেন রংপুর অধিনায়ক।

    ক্যামেরন ডেলপোর্ট ফাহিম আশরাফকে দুইটি ছয় মেরে বড় কিছুর আভাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ হাসিটা হাসলেন ফাহিমই, মাশরাফির বলে ক্যাচ দিলেন ১২ বলে ২০ রান করে। ফজলে মাহমুদ হাসান মাহমুদের বলে ক্যাচ দিলেন মাহেদীকে, ফিরলেন মাত্র ৩ রান করে। সপ্তম ওভারে লুইস গ্রেগরি যখন মাশরাফির বলে আউট হয়ে গেলেন, ৩৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছে রংপুর।

    আল আমিন জুনিয়র ও মোহাম্মদ নবী এরপর খানিকক্ষণ চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু লাভ হয়নি। ২২ রান করে মাশরাফির বলে ক্যাচ দিয়েছেন ডিপ মিড উইকেটে। নবীর জন্য কাজটা অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছিল, অন্যপাশে জহুরুল ও আরাফাত সানিকে পর পর দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। সেটা না হলেও রংপুরের পতন ঠেকাতে পারেনন নবী। ১২ রান করে ফিরে গেছেন। শেষ পর্যন্ত ১৫.৩ ওভার খেলে ৮৪ রানে অলআউট হয়ে গেছে রংপুর।

    তার আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ঢাকা প্লাটুনসের শুরুটা একেবারে খারাপ হয়নি, আরাফাত সানির প্রথম ওভারেই চার মেরেছিলেন তামিম ইকবাল। তবে মোস্তাফিজুর রহমানের করা তৃতীয় ওভারে তিনটি চার নিলেন তামিম ও বিজয়। ওই ওভার থেকে এলো ১৪ রান।

    প্রথম উইকেট ঢাকা হারিয়েছে একটু অদ্ভুতভাবেই। লুইস গ্রেগরির বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন বিজয়, সেটা জমা পড়ে জহুরুলের গ্লাভসে। জহুরুল আবেদন করেছিলেন তখনই, তবে গ্রেগরির গলায় জোর ছিল না। আম্পায়ারও আউট দিলেন না, পরে রিভিউ নিল রংপুর। সেখানে এজ ধরা পড়ল, বিজয়কে ফিরতে হলো প্যাভিলিয়নে।

    তামিম এক প্রান্তে ছিলেন। ঢাকার কোচ সালাউদ্দিনের চাওয়া অনুযায়ী খুব বেশি তেঁড়েফুড়েও খেলছিলেন না। কিন্তু যার আগ্রাসী হওয়ার কথা, সেই মাহেদী হাসান টিকলেন না বেশিক্ষণ। নবীর অফ স্পিনে বোল্ড হওয়ার আগে করেছেন ১ রান। আরিফুল শুরুটা ভালোই করেছিলেন, তাসকিনের এক ওভারে দুইটি চারও মেরেছিলেন। কিন্তু শেষ হাসিটা হাসলেন তাসকিনই। ১৩ রান করে গ্রেগরিকে তাসকিনের বলেই ক্যাচ দিয়ে এলেন আরিফুল।

    মুমিনুল শুরুতেই আউট হতে পারতেন, নবীর বলে টপ এজ হয়েও বেঁচে গেছেন। শেষ পর্যন্ত বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন সেই নবীর বলে। ৭৮ রানে ৪ উইকেট নেই ঢাকার। তামিম ৪০ রান করে ফেলেছিলেন, কিন্তু যখনই আগ্রাসী হতে গেছেন এরপরেই ঘটেছে বিপত্তি। তাসকিনের বলটা মারতে গিয়ে মিসটাইম হয়ে আউট হয়েছেন ৩৮ বলে ৪০ রান করে। আসিফ আলী ছিলেন তখনও, কিন্তু ঝড় তোলেননি। পরের বলেই থেমে গেলেন, তাসকিনের ফুল লেংথ বলের লাইন মিস করে হয়ে গেলেন বোল্ড। হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল তাসকিনের, যদিও শেষ পর্যন্ত সেটি হয়নি।

    থিসারা পেরেরা ছয় মেরেছিলেন, কিন্তু বড় কিছুর আগেই মোস্তাফিজের বলে কাট করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে আউট হলেন। ফিরলেন ৯ বলে ১০ রান করে। তবে শেষের দিকে এসে দায়িত্বটা নিজের কাঁধে তুলে নিলেন শাদাব খান। তাসকিনের পর পর দুই বলে দুইটি ছয় মারলেন, শেষ ওভারে মাশরাফিও মোস্তাফিজকে মারলেন ছয়। শাবাদের ১৯ বলে ৩১ রানের জন্য একের পর এক উইকেট হারিয়েও ১৪৫ রান পর্যন্ত যেতে পেরেছে ঢাকা। সেটাই হয়েছে জয়ের জন্য যথেষ্ট।