জোড়া সেঞ্চুরিতে জাতীয় দলকে টেস্টের আগে বার্তা দিলেন তামিম, আল-আমিন
প্রস্তুতি ম্যাচ, বিকেএসপি
জিম্বাবুয়ে ২৯১/৭ (কাসুজা ৭০, মাম্বা ৫৪*, শাহাদাত ৩/১৬, আল-আমিন ২/৪০) বনাম বিসিবি একাদশ
বিসিবি একাদশ ২৮৮/৫ (তামিম ১২৫*, আল-আমিন ১০০, নদলোভু ২/৫১)
ম্যাচ ড্র
টেস্ট দলের বিপক্ষে এমন এক দলের ম্যাচ, যে দলের মূল ‘আকর্ষণীয়’ প্যাকেজ অ-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের ছয় সদস্য। তাদেরকে ধরে বিসিবি একাদশের দলটা ছিল অপেক্ষাকৃত তরুণ, জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে যেখানে মাত্র একজনের। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ৬৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে পার্থক্যটা যেন ক্ষণিকের জন্য বুঝিয়ে দিচ্ছিল বিসিবি একাদশ। তবে তানজিদ হাসান তামিম ও আল-আমিন জুনিয়র বিকেএসপির মাঠটা নিজেদের করে নিলেন। অপরাজিত সেঞ্চুরি, ৬ষ্ঠ উইকেটে ২১৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে সিনিয়রদের জন্য একটা বার্তাই দিলেন তারা।
আগেরদিন ২৯১ রানে ৭ উইকেট নিয়ে দিন শেষ করা জিম্বাবুয়ে ওভারনাইট ডিক্লেয়ার করে দিয়েছিল, বোলারদের প্রস্তুতির সুযোগ করে দিতে। পারভেজ হোসেনের ইমনের ৩৪ রানের পর মিডল অর্ডার একটু হড়কে গেল বিসিবি একাদশের। তবে তামিম ও আল-আমিন এরপর তুললেন ঝড়। অ-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের তামিম সেঞ্চুরি করলেন ৮৭ বলে, পরে তাকে অনুসরণ করলেন আল-আমিনও।
নাঈম শেখ ও ইমনের ওপেনিং জুটি সকালে টিকেছিল ৬.৩ ওভার, কার্ল মাম্বার শর্ট বল পুল করতে গিয়ে লিডিং-এজড হয়ে নাঈম ফিরলেন ১৭ বলে ২ চারে ১১ রান করেই। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে সেঞ্চুরিয়ান মাহমুদুল হাসান জয় চার্লটন টিশুমাকে কাট করতে গিয়ে এজড হলেন ৫ বলে ১ রান করে। শাহাদাত হোসেন ২২ বল খেললেন, তবে ২ রানের বেশি করতে পারলেন না এইনলে নদলোভুর বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ায়।
ইমন শট খেলছিলেন, অধিনায়ক আল-আমিনের সঙ্গে টিকলেন প্রায় ৮ ওভার। নদলোভুর দ্বিতীয় শিকার হয়ে অবশ্য ফিরতে হয়েছে তাকে এরপর। বিকেএসপির এ ম্যাচের অনেকটা আগ্রহ ছিল যাকে ঘিরে, সেই আকবর আলি টিকলেন মাত্র ৩ বল। টিনোটেনডা মুতোমবদজির গুগলি পড়তে না পেরে ব্যাকফুটে গিয়ে বোল্ড হলেন ১ রান করেই। ৬৯ রানে ৫ উইকেট নেই তখন বিসিবি একাদশের, জিম্বাবুয়ে হয়তো আরেকবার ব্যাটসম্যানদের নামানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। অন্তত লাঞ্চে তারা গিয়েছিল দাপট দেখিয়েই।
বিশ্বকাপে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করা তামিম সাত নম্বরে নেমে সেসব ভেস্তে দিলেন, জিম্বাবুয়ের বোলারদের বরং সুযোগ করে দিলেন আরও দীর্ঘক্ষণ অনুশীলনের। তামিম ব্যাটিং করলেন ফাস্ট-ফরোয়ার্ড মুডে, যেন বিশ্বকাপের ওয়ানডে ফরম্যাটটা ভুলতে পারেননি এখনও। আল-আমিন অবশ্য কাজটা সহজ করে দিলেন তামিমের, দিলেন দারুণ সহায়তা।
৮৭ বলে কাভারে ঠেলে সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করলেন তামিম। উদযাপনটাও করলেন উচ্ছ্বাস-মাখানো। সেঞ্চুরির পর ১২ বলে করলেন আরও ২৫ রান। শেষ পর্যন্ত তার ইনিংসে ১৪টি চারের সঙ্গে ৫টি ছয় মেরেছেন এই বাঁহাতি।
আল-আমিন সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে খেললেন ১৪৫ বল। তার সেঞ্চুরির পরপরই ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছে বিসিবি একাদশ। তিনি মেরেছেন ১৬টি চার। দিনের খেলার ঘন্টাখানেকের বেশি বাকি থাকলেও আর খেলা হয়নি দুই দলের সম্মতিতে। ৮ জন বোলার ব্যবহার করেছেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ এরভিন, সবচেয়ে বেশি ১১ ওভার করেছেন নদলোভু।
ম্যাচ শেষে আল-আমিন অবশ্য দিলেন প্রস্তুতি ম্যাচের সবচেয়ে বড় বার্তাটাই, “আমার কাছে মনে হয় জিম্বাবুয়ে দল ও আমরা এখন যে ক্রিকেট খেলছি, তাতে আমরা ভালোভাবে তাদের সামলাতে পারবো এবং খুব দাপট দেখিয়েই টেস্টটা জিততে পারবো।”
প্রস্তুতি ম্যাচে জিম্বাবুইয়ান বোলারদের সামলানোর কাজটা আল-আমিন, তামিমরা করলেন তাই দারুণভাবেই। এবার পালা ‘সিনিয়র’দের।