জিম্বাবুয়ে সিরিজই শেষ অধিনায়ক মাশরাফির?
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে ফিট থাকলে বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাই থাকবেন, তবে পরের বিশ্বকাপকে সামনে রেখে 'শীঘ্রই' ‘অধিনায়কত্বের ব্যাপারে ঘোষণা’ দেবে বিসিবি। বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, পরের বিশ্বকাপের আগে অধিনায়ক নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চান না তারা। সঙ্গে এরপর মাশরাফির দলে থাকা তার ফিটনেস ও অন্যান্য মানদন্ডের ওপর নির্ভর করবে বলেও জানিয়েছেন পাপন।
গত বিশ্বকাপে জাতীয় দলের হয়ে শেষ খেলা মাশরাফির ভবিষ্যত নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই। শেষ বিপিএল দিয়ে মাঠে ফিরেছেন মাশরাফি, এরপর নিজের পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে না ভাবলেও খেলা চালিয়ে যেতে চান তিনি। বিশ্বকাপের পর শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজ চোটের কারণে মিস করেছিলেন মাশরাফি। এরপর বাংলাদেশ টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেললেও ওয়ানডে খেলেনি।
বুধবার মিরপুরে বিসিবি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘টার্ন-ওভারে’ মাশরাফির অবদান ভুলে না গেলেও ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে হবে তাদের। সেক্ষেত্রে ‘দ্রুত’ সিদ্ধান্ত নিতে চান তারা, “মাশরাফি এই সিরিজে অবশ্যই খেলছে এবং সেটা অধিনায়ক হিসেবেই। ও ফিট না হলে সেটা ভিন্ন কথা। ওর জন্য আমরা অতোটা কড়াকড়ি করেতে চাচ্ছি না (ফিটনেসের ব্যাপার)। তবে খুব তাড়াতাড়ি আমাদের যে বিশ্বকাপটা আছে সামনে, হঠাৎ করে আগ মুহুর্তে অধিনায়ক দিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পাঠানো তো সম্ভব নয়। দুই বছর আগে অধিনায়ক লাগবে আমার। সুতরাং খুব শীঘ্রই আমাদের এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের হাতে খুব বেশি সময় নেই। এই সিরিজটা পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করছি।”
“সাকিবের বদলি ক্রিকেটার আমাদের নেই, আবার মাশরাফির মতো অধিনায়ক এই মুহুর্তে আমাদের কাছে নেই। সব সময়ই বলে এসেছি”, বলেছেন পাপন। “এটা মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে যেভাবে টার্ন-ওভার করে এসেছিলো, সেখানে মাশরাফির অবদানকে অস্বীকার করা যাবে না। তার নেতৃত্ব ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। আবার এটাও মনে রাখতে হবে ওর একটা সময় এসেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ও আর কতদিন খেলবে।”
অধিনায়ক মাশরাফির এটিই শেষ সিরিজ কিনা, সে বিষয়ে সরাসরি জবাব না দিলেও পাপন বলেছেন, ৮-৯ মার্চ বোর্ড মিটিংয়ের পরই অধিনায়কত্বের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন তারা, “অধিনায়ক আমরা ঘোষণা করে দিবো। কারো যদি পারফরম্যান্স ফিটনেস ঠিক থাকে তাহলে খেলতে তো কোনো সমস্যা নেই। কেউ যদি খেলে যেতে চায়, খেলবে। জাতীয় দলে সুযোগ পেতে হলে যা যা মানদন্ড আছে সেটা পূর্ণ করতে হবে।”
সেক্ষেত্রে ফিটনেস ও বিপ-টেস্ট একটি ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে, “আগেতো বিপ টেস্ট পাশের কোন ব্যাপার ছিলো না। এখনতো এটা পাশ করতে হয়। প্রথম কথা মাশরাফিকে বিপ টেস্টে পাশ করতে হবে। হয়তো ওর জন্য কিছুটা বিবেচনা করা হবে।”
আপাতত অবসরের ব্যাপারটি মাশরাফির ওপর ছেড়ে দিয়ে শুধু অধিনায়কত্বের ব্যাপারেই সিদ্ধান্ত নিতে চায় বিসিবি, “এটা খেলোয়াড়ের উপর নির্ভর করে (অবসর নেওয়ার বিষয়)। আমরা দেখেছি নামি-দামি খেলোয়াড়রা পরিকল্পনা করেই বলে দেয়, ‘এটা আমার শেষ সিরিজ’। আমাদেরও ইচ্ছে ছিলো, ও যদি এমন সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমরা ঘটা করে তাকে বিদায় জানাবো।”
“(তবে) ও যদি খেলতে চায়, ও খেলতে পারে। আমরা কেবল অধিনায়কত্ব নিয়ে ভাবছি। আমরা যদি অন্য কাউকে অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করে দেই, তারপর সে যদি নিজের পারফরম্যান্সে দলে ঢুকতে পারে ঢুকবে। এটাতো কারো জন্য বাধা নয়। অধিনায়কত্বের ব্যাপারটিতে কিছুদিনের মধ্যে আমরা সিদ্ধান্ত নিবো।”
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলে সাকিব আল হাসানও ওয়ানডের নেতৃত্বের বিবেচনায় আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট।
২০১৪ সালে শেষ দফা অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছিল মাশরাফিকে, এরপর ৭৮টি ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার আগেও এ ফরম্যাটের অধিনায়ক ছিলেন তিনি।