অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মাশরাফি
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষে মাশরাফি বিন মুর্তজা অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে পারেন, সিরিজ শুরুর আগে স্পষ্ট একটা ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। আজ সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডের আগে মাশরাফি ঘোষণা দিলেন, বাংলাদেশের হয়ে আর টস করতে দেখা যাবে না তাকে। তবে ক্রিকেটার হিসেবে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ রেখেছেন।
বিসিবি সভাপতির ঘোষণার পরও পাকিস্তান সফরে মাশরাফির অধিনায়ক হিসেবে যাওয়ার একটা গুঞ্জন উঠেছিল। এমনকি সাকিব আল হাসান নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার আগ পর্যন্ত মাশরাফিকে ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে রেখে দিতে পারেন পাপন, একটি গণমাধ্যম সে খবরও জানিয়েছিল। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে মাশরাফি নিজেই জানালেন, অধিনায়ক পর্ব এখানেই শেষ। এই সিদ্ধান্ত বদলানোর সুযোগ নেই কোনো।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ ঘোষণাটা দেওয়ার সময় একটু ধরেই এসেছিল মাশরাফির গলা। খানিকটা আনুষ্ঠানিক কথার মতোই বললেন, ‘এতদিন আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই। ধন্যবাদ জানাই আমার সঙ্গে খেলা সব সতীর্থ ক্রিকেটারকে। শেষ পাঁচ ছয় বছরে যে জার্নি ছিল। টিম ম্যানেজমেন্ট যারা ছিল, যাদের অধীনে আমি খেলেছি সবাই আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে। হাথুরুসিংহের সময়ে আমার যতদূর মনে পড়ে অধিনায়কত্বের শুরু। তার আগে দায়িত্ব পেলেও চোটের জন্য কাজ চালিয়ে যেতে পারিনি। এরপর খালেদ মাহমুদ সুজন, স্টিভ রোডস, এরপর ডমিঙ্গো দিয়ে শেষ হচ্ছে। বোর্ডের নির্বাচক, কর্মকর্তা ও বোর্ডের সব স্টাফকে। আমি মিডিয়ার সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আল আমি অধিনায়ক হিসেবে নিজের শেষ ম্যাচ খেলব। আমার শুভকামনা থাকবে পরবর্তী অধিনায়ককে। এবং যদি আমি দলে থাকি তাহলে চেষ্টা করব আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার।’
আমি সব সময় গর্ব বোধ করেছি জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পেরেছি। অধিনায়কত্বের দায়িত্ব বিসিবি আমাকে দিয়েছে। কখনো আমি পেরেছি, কখনো পারিনি। সামনে ২০২৩ বিশ্বকাপের আগে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। আমার মনে হয় নতুন কারও অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেওয়ার এটাই ঠিক সময়। তবে আমি আশা করব, তাকে নিয়ে যাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হয়। আমি বিশ্বাস করি আমি পেশাদারভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি মনে করি পরের অধিনায়কের ক্ষেত্রেও যেন এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। আর খেলোয়াড় হিসেবে সুযোগ পেলে নতুন অধিনায়ককে আমি সব ধরনের সহযোগিতা করব।’
২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নটিংহামে প্রথম ওয়ানডে অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন মাশরাফি। ওই বছর সাতটি ওয়ানডেতে টস করার পর চোটের জন্য ছিটকে যান। এরপর ২০১৪ সালের শেষে ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবে আবার ফেরেন। ২০১৭ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব করেছেন, সে বছর শ্রীলংকা সিরিজের সময় ২০ ওভারের ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। সব মিলে ৮৭টি ওয়ানডের মধ্যে ৪৯টি জিতেছেন, কাল শেষ ম্যাচে জয় হলে ৫০টি ওয়ানডে ম্যাচে জয় পাবেন অধিনায়ক হিসেবে। আর ২৮টি টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক হিসেবে জিতেছেন ১০টিতে।