রেকর্ড বুক : তামিম আর লিটনের দিনে মাশরাফির ফিফটি
তামিমকে ছাড়িয়ে তামিম, তামিমকে ছাড়িয়ে এবার লিটন
৩ তারিখে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের নিজের রেকর্ডটা ভেঙেছিলেন তামিম ইকবাল। তাকে টপকে যেতে লিটন দাস বেছে নিলেন ঠিক পরের ম্যাচটাই। প্রথম ম্যাচে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১২৬* ছাড়িয়ে লিটন এবার করলেন ১৪৩ বলে ১৭৬ রান। কোনও ওপেনারের ১৭০-পেরুনো ৩৯তম ইনিংস এটি সব মিলিয়ে।
১৬ চারের সঙ্গে এ ইনিংসে তিনি মেরেছেন ৮টি ছয়। ছয়ে সংখ্যায় কোনো বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানের এটি রেকর্ড, এর আগে ২০১০ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৯৫ রানের ইনিংসে তামিম মেরেছিলেন ৭টি ছয়।
চারের সংখ্যায় লিটনের এ ইনিংসের ওপরে আছে আর ৩টি।
অনেক রেকর্ডের এক জুটি
১৯৯৯ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই মেহরাব হোসেন অপি ও শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুত ওপেনিংয়ে করেছিলেন ১৭০ রান, বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যেদিন প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন অপি। এতদিন ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল সেটিই।
সিলেটে শুধু ওপেনিংয়ের রেকর্ড তামিম-লিটন ভাঙলেন না, ভেঙে দিলেন যে কোনও উইকেটেই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ডটা। ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৩ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ যোগ করেছিলেন ২৭০ রান। লিটন আউট হওয়ার আগে তামিমের সঙ্গে এদিন যোগ করেছেন ২৯২ রান।
সব মিলিয়ে ওপেনিংয়ে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। বৃষ্টি-বাধার পর ৪৩ ওভারে ম্যাচ নেমে আসায় তামিম-লিটনের নাগালের মাঝে ছিল ফাখার জামান ও ইমাম-উল-হকের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই করা ৩০৪ রানের জুটিটি। শেষ পর্যন্ত গত বছর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন ক্যামবেল ও শেই হোপের ৩৬৫ রানের জুটির সঙ্গে অক্ষত থেকে গেছে সেটিও।
ওপেনিংয়ে ১০০
বাংলাদেশের ২০তম সেঞ্চুরি ওপেনিং জুটি এটি। লিটন-তামিমের দ্বিতীয়, এর আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে গত বছর ডাবলিনে করেছিলেন দুজন।
১২ বার তামিম ওপেনিংয়ে শতরানের জুটির অংশ হলেন বাংলাদেশের। লিটন অংশ থাকলেন ৪র্থ বার। তামিম ছাড়া মেহেদি হাসান মিরাজ ও ইমরুল কায়েসের সঙ্গে দুটি শতরানের জুটি আছে তার ওপেনিংয়ে।
এ নিয়ে চতুর্থবার
তামিমের পর লিটন- এ নিয়ে চতুর্থবার দুইজন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান একই ইনিংসে সেঞ্চুরি পেলেন। সর্বশেষ সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ পেয়েছিলেন কার্ডিফে। তবে দুই বাংলাদেশ ওপেনারের একই ইনিংসে সেঞ্চুরির কীর্তি এটাই প্রথম।
তামিম ও লিটন- দুজনেরই সিরিজে এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তিন ম্যাচ সিরিজে দুইজন ব্যাটসম্যানের দুই বা ততোধিক সেঞ্চুরির এটি দ্বিতীয় ঘটনা, ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই এমন করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স ও হাশিম আমলা।
৩০০ ছাড়িয়ে
এ ম্যাচে সেঞ্চুরি ইনিংসের পর লিটন ও তামিম- দুজনেরই সিরিজে রান ছাড়িয়ে গেছে ৩০০। তামিম ইকবাল করেছেন ৩১২ রান, লিটন তার চেয়ে ১ রান কম। দ্বিপক্ষীয় একটি সিরিজে একাধিক বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানের এমন কীর্তি এই প্রথম।
৩ বা এর বেশি ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে কোনও ব্যাটসম্যানের ৩০০ বা এর বেশি রান করার ঘটনা এর আগে ছিল আর ৩টি। সবার ওপরে ইমরুল কায়েস, ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ সিরিজে তিনি করেছিলেন ৩৪৯ রান। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম করেছিলেন ৩১২, ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করেছিলেন ঠিক ৩০০ রান।
এবং মাশরাফির ৫০
অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম জয় পেলেন মাশরাফি। বেশ বড় ব্যবধানে অন্য অধিনায়কদের চেয়ে এগিয়ে তিনি জয়ের সংখ্যায়। মাশরাফির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯টি ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছে হাবিবুল বাশারের অধিনায়কত্বে।
মাশরাফির অধিনায়কত্বে খেলা ম্যাচগুলির মাঝে ২টি শুরু হয়েও শেষ হতে পারেনি বাংলাদেশের- দুটিই ২০১৭ সালে। মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ডাম্বুলার পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে।
এছাড়া ৪টি ম্যাচ শুরুই হতে পারেনি। ২০১০ সালে গ্লাসগোতে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে, ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্রিসবেনের ম্যাচের পর ২০১৯ সালে ত্রিদেশীয় সিরিজে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে মালাহাইড ও ২০১৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্রিস্টলের ম্যাচটি কোনও বল হওয়ার আগেই হয়েছিল পরিত্যক্ত।