• লা লিগা
  • " />

     

    ভিএআর-এর ম্যাচে সোসিয়েদাদকে হারিয়ে শীর্ষে উঠল রিয়াল

    ভিএআর-এর ম্যাচে সোসিয়েদাদকে হারিয়ে শীর্ষে উঠল রিয়াল    

    ফুলটাইম
    রিয়াল সোসিয়েদাদ ১-২ রিয়াল মাদ্রিদ


    এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করলো না রিয়াল মাদ্রিদ। ঘটনাবহুল ম্যাচে  রিয়াল সোসিয়েদাদকে হারিয়ে বার্সেলোনাকে টপকে গেছে তারা। লা লিগার ৩০ ম্যাচ শেষে এখন রিয়ালের আর বার্সার পয়েন্ট সমান। তবে হেড টু হেডে এগিয়ে থেকে শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে এক ধাপ এগিয়ে গেছে জিনেদিন জিদানের দল। 

    গত বেশ কিছু মৌসুম ধরেই রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে জয় পেতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদের। এবারও ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। রিয়াল ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ৮৩ মিনিটে এক গোল শোধ দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল সোসিয়েদাদ। অবশ্য রিয়াল আর পথ হারায়নি, বাকি সময় শক্ত রক্ষণে সোসিয়েদাদকে আর ম্যাচে ফিরতে দেয়নি তারা।

    তবে এর আগে ভাগ্য রিয়ালের ওপর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। ম্যাচে রেফারির গুরুত্বপূর্ণ ৩টি সিদ্ধান্তই গেছে ভিএআরে। আর সব সিদ্ধান্ত পক্ষে পেয়ে শক্ত অবস্থানেও চলে গিয়েছিল রিয়াল, পরে ম্যাচের ভাগ্যও নির্ধারণ করেছে  রেফারির ওই সিদ্ধান্তগুলো।


    গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর ৫০ মিনিটে মার্সেলোর দারুণ এক লং বল ধরে এগিয়ে গিয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। প্রথমার্ধেও সোসিয়েদাকে ভোগাচ্ছিলেন তিনি। এ দফায়ও তাকে আটকাতে ব্যর্থ সোসিয়েদাদ ডিফেন্ডাররা। সিক্স ইয়ার্ড বক্সের কোণা থেকে ভিনিসিয়াস শট নেওয়ার আগেই তাকে পেছন থেকে ট্যাকেল করে বসেন ডিয়েগো ইয়োরেন্তে। রেফারিও সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। ইয়োরেন্তের টাচ অবশ্য কতোখানি শক্তিশালী ছিল সেটি নিয়ে তর্কাতর্কি হতেই পারে। তবে ভিএআরও রেফারির পক্ষে রায় দিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। সার্জিও রামোস স্পটকিক থেকে গোলরক্ষককে উলটোদিকে পাঠিয়ে নিচু শটে বটম কর্নারে বল জড়ান। রিয়াল মাদ্রিদও সোসিয়েদাদের হতাশা দ্বিগুণ করে এগিয়ে যায় ম্যাচে।

    টানা দ্বিতীয় ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে ম্যাচের লাগাম তখন অনেকটাই নিজেদের টেনে নিয়েছিল রিয়াল। তবে ৬৯ মিনিটে আচমকা আদনান ইয়ানুজাইর বক্সের ঠিক বাইরে থেকে করা দারুণ এক শট রিয়ালের জালে জড়িয়ে যায়। সোসিয়েদাদের উল্লাস অবশ্য স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পায়নি। ওই গোলের সিদ্ধান্তও পরে গেছে ভিআরে। ইয়ানুজাই গোলে শট করার সময় সোসিয়েদাদের মিকেল মেরিনো ছিলেন অফসাইডে। নিজে নড়াচড়া না করলেও, কোর্তোয়ার ভিউ আটকে দিয়েছিলেন তিনি। পরে তাই গোল বাতিলই হয়েছে। তবে সোসিয়েদাদ সমর্থকেরা অবশ্য এই ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত হবেন না!

    ওই ঘটনার পরের মিনিটেই সোসিয়েদাদের স্বপ্নে বড় ধাক্কা হানেন করিম বেনজেমা। ফেদেরিকো ভালভার্দের কাছ থেকে উড়ে আসা বল বক্সের ভেতর রিসিভ করেন বেনজেমা। এরপর ইনসাইড কাট করে সোসিয়েদাদ ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে ডান পায়ের শটে আরও একবার লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ম্যাচে মিনিট বিশেক বাকি থাকতে দুই গোলের লিডে তখন বড় স্বস্তিই পেয়েছিল রিয়াল।

    গোলে সমস্যা ছিল না, সংশয় ছিল বেনজেমার বল রিসিভ করার প্রক্রিয়া নিয়ে। ওই গোলও তাই লম্বা সময় ধরে ভিএআরে চেক করাতে হয়েছে রেফারিকে। বল রিসিভ করার সময় বাহু আর বুকের মাঝামাঝি জায়গায় বল লেগেছিল বেনজেমার। পরে অবশ্য গোলের সিদ্ধান্তও বেনজেমার পক্ষেই গেছে। 

    অফসাইড পজিশনে থেকে যিনি ইয়ানুজাইকে গোল পেতে দেননি সেই মেরিনোই ৮৩ মিনিটে দারুণ এক গোল করে রিয়ালকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলেন। রামোস পায়ের ইনজুরি নিয়ে ৬০ মিনিটে মাঠ ছেড়েছিলেন। তরুণ এডার মিলিতাও, রাফায়েল ভারানদের একসঙ্গে হয়ে শেষের দিকে তাই আবার লড়াই করতে হয়েছে।

    সোসিয়েদাদের বিপক্ষে ম্যাচটা কঠিন হবে জেনেও অবশ্য একাদশে চমক রেখেছিলেন জিদান। এডেন হ্যাজার্ডকে এদিন আর মাঠেই নামাননি তিনি। ভিনিসিয়াস, বেনজেমাদের সঙ্গে গত বছর অক্টোবরের পর প্রথমবারের মতো একাদশে সুযোগ পেয়ে মাঠে নেমেছিলেন হামেস রদ্রিগেজ। ভিনিসিয়াস, বেনজেমারা প্রথমার্ধে গোলে শট নিলেও রদ্রিগেজ তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি ম্যাচে।

    প্রথমার্ধেও রিয়ালের আধিপত্য থাকলেও বলার মতো আক্রমণ করতে পারেনি তারাও। তবে এর ভেতর একবার পেনাল্টি পেয়ে যেতে পারত রিয়াল। গোলে শট নিতে যাচ্ছিলেন মার্সেলো, তখন মিকেল অরাইজাবাল পেছন থেকে বাধা দিয়েছিলেন তাকে। তখন অবশ্য ভিএআরের সরণাপন্ন হননি আর রেফারি।   

    শুক্রবার রাতে রিয়াল মায়োর্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে পরের ম্যাচ রিয়ালের। কাসেমিরো সোসিয়েদাদের বিপক্ষে হলুদ কার্ড দেখায় তাকে দলে পাবেন না জিদান। তবে সেটি নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ার কথা নয় জিদানের। আপাতত কঠিন ম্যাচের হ্যাপা শেষ রিয়ালের। ভ্যালেন্সিয়ার পর সোসিয়েদাদকে হারিয়ে দিয়েছে রিয়াল। জিদান আর রিয়াল আছে সঠিক পথেই।