• লা লিগা
  • " />

     

    ১০ জনের বেটিসের বিপক্ষে রিয়ালকে জয় এনে দিল রামোসের পেনাল্টি

    ১০ জনের বেটিসের বিপক্ষে রিয়ালকে জয় এনে দিল রামোসের পেনাল্টি    

    ফুলটাইম

    রিয়াল বেটিস ২ - ৩ রিয়াল মাদ্রিদ


    ছন্দে ফিরল রিয়াল মাদ্রিদ। মৌসুমের প্রথম ম্যাচ ড্র করার পর এই রিয়াল মাদ্রিদ ছন্দে ফিরল পুরোনো রূপে। ৫ গোল, লাল কার্ড আর আত্মঘাতী গোলের ম্যাচে শেষ পর্যন্ত নায়ক হয়ে গেলেন সার্জিও রামোস। পেনাল্টি থেকে ৮২ মিনিটে রামোসের করা গোল ভাগ্য গড়ে দিল ম্যাচে। টানটান উত্তেজনার লড়াইয়ে রিয়াল বেটিসকে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম জয়ও পেল জিনেদিন জিদানের দল।

    সেভিলের দলটির বিপক্ষে শেষ তিন ম্যাচে কোনো জয়হীন ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। প্রথমে এগিয়ে গিয়েও ৩৫ এবং ৩৭ মিনিটে দুই গোল হজমের পর মনে হচ্ছিল, আরও একবার বেটিসের বিপক্ষে হতাশ হতে হবে লস ব্লাঙ্কোদের। তবে ঘটনাবহুল দ্বিতীয়ার্ধে বেটিসের আত্মঘাতী গোল, দশজনে পরিণত হওয়া এবং শেষ মুহুর্তে সার্জিও রামোসের পানেনকা স্পটকিকে ভর করে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মাদ্রিদ।


    এস্তাদিও ভিলামারিনে ম্যাচের প্রথম বাঁশি থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে দুই দল। মাত্র দ্বিতীয় মিনিটেই মধ্যমাঠ থেকে দারুণ দলীয় সংযোগের পর বাম প্রান্ত থেকে বক্সে থাকা করিম বেনজেমার উদ্দেশ্যে বলের জোগান দেন ফারলান মেন্ডি। নিখুঁত ফিনিশে মাদ্রিদের নাম্বার নাইন বল জালে জড়ালেও সঙ্গে সঙ্গেই অফসাইডের বাঁশি বাজান রেফারি। পরিষ্কার অফসাইডের ফাঁদে পড়ে সে যাত্রায় লিড নেওয়া হয়নি মাদ্রিদের। এরপরই বেটিসের পাল্টা আক্রমণ, সপ্তম মিনিটে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে সানাব্রিয়ার হেডার দুর্দান্তভাবে কব্জির সাহায্য গোলবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া।

    আক্রমণে জিদান এদিন বেনজেমার সঙ্গে লুকা ইয়োভিচকে একাদশে রেখেছিলেন। গত মৌসুমে মাদ্রিদে আসার পর মাত্র পঞ্চমবারের মতো জিদানের প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। আক্রমণে ইয়োভিচ থাকায় ম্যাচে বেনজেমা অনেকটা ফ্রি রোলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। কখনো নিচে নেমে এসে আক্রমণ শুরু করেছেন তো কখনো আবার উইং দিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন। মাদ্রিদের প্রথম গোলটিও বেনজেমার দারুণ উইং প্লে থেকেই এসেছে।

    মধ্যমাঠ ফেদেরিকো ভালভার্দে বল ইন্টারসেপ্ট করে দানি কারভাহালের কাছে পাস করেন, তার থেকে বল পান বেনজেমা। বেটিসের লেফটব্যাক অ্যালেক্স মোরেনো নাচিয়ে বাইলাইনের কাছ থেকে ছয়ইয়ার্ড বক্সের ভেতর কাটব্যাক করেন তিনি, আর সেখান থেকে এক টাচে বল জালে জড়ান ভালভার্দে। ১৪ মিনিটেই ম্যাচে এগিয়ে যায় রিয়ালও।

    এরপর আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে চলতে থাকে খেলা। গতি কিছুটা কমলেও দুই দলই পালা করে হানা দিচ্ছিল একে অন্যের বক্সে। তবে ৩৫ থেকে ৩৭ মিনিটের মধ্যে মাদ্রিদের ওপর দিয়ে যেন ঝড় বয়ে যায়। প্রথমে ৩৫ মিনিটে কর্নার থেকে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর বক্সের বাইরে সার্জিও ক্যানালেসের পায়ে আসে বল। তার দারুণ ক্রসে মাথা ছুঁয়ে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান আলজেরিয়ান ডিফেন্ডার আইসা মান্দি। আর এর এক মিনিট পরেই নাবিল ফেকিরের দারুণ কাটব্যাক থেকে জোরালো শটে বেটিসকে ম্যাচে এগিয়ে দেন উইলিয়াম কারভালহো। কাছের পোস্টে সেই শটে হাত ছোঁয়াতে পারলেও ঠেকাতে ব্যর্থ হন কোর্তোয়া। পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। বিরতির আগে পড়ে দুটি দলে দুটি বদল আনেন জিদান। ক্রুসকে উঠিয়ে মডরিচ এবং ওডেগার্ডকে উঠিয়ে ইসকোকে মাঠে নামান জিদান।

    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমতায় ফিরে আসে জিদান। ৪৮ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে কারভাহালের লো ক্রস ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের জালেই বল পাঠিয়ে দেন বেটিসের এমারসন। ৫১ মিনিটে বেনজেমার দুর্দান্ত ভলি ক্রসবারে না লাগলে এগিয়েও যেতে পারত রিয়াল মাদ্রিদ।

    ৬৫ মিনিটে নিজেদের বক্স থেকে দারুণ একটি প্রতি আক্রমণ শুরু করে মাদ্রিদ। মধ্যমাঠ থেকে বেনজেমার পাস ইয়োভিচকে উন্মুক্ত করে দেয়। সার্বিয়ান স্ট্রাইকারের সামনে তখন শুধুই গোলরক্ষকের বাধা, তবে বক্সের কিছুটা সামনে থাকা অবস্থাতেই তাকে পেছন থেকে ট্যাকল করেন আত্মঘাতী গোল করে বেটিসকে বিপদে ফেলা এমারসন। দীর্ঘ ভিএআর চেকের পর তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। ম্যাচের শেষ ২৫ মিনিটে তাই দশজন নিয়ে খেলতে হয় বেটিসকে।


    ৭২ মিনিটে ইয়োভিচকে উঠিয়ে বোরয়া মায়োরালকে মাঠে নামান জিদান। ৮০ মিনিটে বক্সের ভেতর সেই মায়োরালের কাছে বল যাওয়া ঠেকাতে গিয়ে বেটিস ডিফেন্ডার মার্ক বার্ত্রার হাতে ছুঁয়ে যায় বল। রেফারিও বাজান পেনাল্টির বাঁশি। বেটিস খেলোয়াড়রা ঘোর প্রতিবাদ জানালেও কোনো কাজ হয়নি। রামোস পরে বাকি কাজটা সেরেছেন রামোসের মতো করেই।

    রিয়াল বেটিস একাদশ

    রোবলস, এমারসন, মান্দি, বার্ত্রা, অ্যালেক্স মোরেনো, উইলিয়াম, গিদো রদ্রিগেজ, হোয়াকিন, ফেকির, ক্যানালেস, সানাব্রিয়া

    রিয়াল মাদ্রিদ একাদশ

    কোর্তোয়া, কারভাহাল, রামোস, ভারান, ফারলান মেন্ডি, ক্রুস, কাসেমিরো, ফেদেরিকো ভালভার্দে, ওডেগার্ড, বেনজেমা, ইয়োভিচ