• ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০২১
  • " />

     

    সাকিব-বিতর্কে আড়াল আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ আর শুভাগতর ঘূর্ণি

    সাকিব-বিতর্কে আড়াল আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ আর শুভাগতর ঘূর্ণি    

    আবাহনী-মোহামেডান, মিরপুর
    মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ১৪৫/৬, ২০ ওভার (সাকিব ৩৭, মাহমুদুল ৩০, ইমন ২৬, স্বাধীন ৩/২৪, তানজিম ২/১৭, সাইফউদ্দিন ১/২৯) 
    আবাহনী লিমিটেড ৪৪/৬, ৯ ওভার (লক্ষ্য ৯ ওভারে ৭৬) (মুশফিক ১৮*, শান্ত ১৫, শুভাগত ৩/১৭, তাসকিন ২/৫, আবু জায়েদ ১/৬)
    মোহামডান ডি এল পদ্ধতিতে ৩১ রানে জয়ী 


    হয়তো আবাহনী-মোহামেডান লড়াইয়ে এমন ঝাঁঝ একসময় প্রত্যাশিতই ছিল। তবে সেটি হওয়ার কথা মাঠের লড়াইয়ে। সেখানে চলে এলো বিতর্ক, যার কেন্দ্রবিন্দুতে সাকিব আল হাসান। এবং সাকিব নিয়ন্ত্রণ হারালেন আম্পায়ারের ওপর। তার মেজাজ হারিয়ে স্টাম্পে লাথি মারা ও উপড়ে ফেলার ঘটনায় উত্তপ্ত ম্যাচে শুভাগত হোমের ঘূর্ণিতে আবাহনীকে আটকে দিয়েছে মোহামেডান। ১৪৬ রানতাড়ায় শুভাগতর তোপে ৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল আবাহনী, এরপর বৃষ্টিতে ৯ ওভারে ইনিংস নেমে এলে ৭৬ রানের লক্ষ্যে ৪৪ রানেই থমকে গেছে তারা।



    টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব। পেস আক্রমণে এদিনও আবাহনী খেলিয়েছিল আগের ম্যাচে অভিষেক করানো একেএস স্বাধীনকে। মোহামেডানকে চাপে ফেলেছিলেন তিনিই। তবে পাওয়ারপ্লেতে আসেননি তিনি। সাইফউদ্দিন ইনিংসের প্রথম বল নো করার পর পুষিয়ে নিয়েছিলেন। প্রথম ২১ বলে ১৬ রান করা পারভেজ হোসেন ইমন আফিফ হোসেনকে ছয় মেরেছিলেন একটা, পরে কাউ কর্নার দিয়ে মেরেছিলেন চার। এরপর তানজিম হাসান সাকিবের বলে জীবন পেয়েছিলেন আব্দুল মজিদ। মজিদ না ফিরলেও সে ওভারেই তাকে তুলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন ২৫ বলে ২৬ করা পারভেজ হোসেন ইমন। 
     


    তিনে মোহামেডান পাঠিয়েছিল ইরফান শুক্কুরকে, তবে সমানসংখ্যক বলে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। এর আগেই স্বাধীনকে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে বোল্ড হয়েছেন ১৭ বলে ১৬ করা মজিদ, এর আগে তিনিও একবার বেঁচেছিলেন ডিরেক্ট থ্রো থেকে। শুক্কুর ফিরেছেন হুক করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে। শামসুর রহমান স্বাধীনের তৃতীয় শিকার, তিনি তুলেছেন ক্যাচ। 

    টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত সেভাবে রানের দেখা না পাওয়া সাকিব এদিন শুরুটা ভালই করেছিলেন, মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে জুটিতে দ্রুতই তুলেছিলেন ৪৬ রান। ৩৫ রানে একটা জীবনও পেয়েছিলেন, তবে সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। আর ২ রান যোগ করেই সাইফউদ্দিনের বলেই ক্যাচ তুলেছেন তিনি। শেষের দিকে মাহমুদুল হাসানের ২২ বলে অপরাজিত ৩০ ও আবু হায়দার রনির ৭ বলে ১২ রানের ক্যামিওতে ১৪৫ পর্যন্ত গিয়েছিল মোহামেডান। 
     


    রানতাড়ায় এরপর শুরুতেই শুভাগতর সামনে বিপর্যয়ে পড়েছিল আবাহনী, ইনিংসের প্রথম বলে বোল্ড হয়েছিলেন আগের ম্যাচে আবাহনীর নায়ক নাইম শেখ। এক বল পর বোল্ড হয়েছেন স্বাধীনও। পরের ওভারে এসে শুভাগত ফিরিয়েছেন আফিফকে, তাকে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা পড়েছেন তিনি। 

    আবাহনীর এরপরের ভরসার অনেকটুকু নিয়ে নেমেছিলেন মুশফিক, সাকিবের দ্বিতীয় বলে স্লগ করে ছয়ও মেরেছিলেন। সে ওভারের শেষ বলেই তার বিপক্ষে এলবিডব্লিউর ক্লোজ একটা আবেদন আম্পায়ার নাকচ করে দেওয়ার পর প্রথমবার মেজাজ হারিয়েছেন সাকিব, আবেদন শেষের সঙ্গে সঙ্গেই স্টাম্পে গিয়ে মেরেছেন লাথি। পরের ওভারে এসেছিলেন শুভাগত, তবে শেষ বল করার আগেই আম্পায়ার ডেকেছিলেন কাভার। 

    সেটিও ‘ক্ষুব্ধ’ করেছে সাকিবকে, যদিও সে সময় ডিএল পদ্ধতিতে বেশ এগিয়ে ছিল মোহামেডান। এবার তিনি তিন স্টাম্পই উপড়ে ফেলেছেন। বৃষ্টির কারণে প্রায় ঘন্টা দেড়েক বন্ধ ছিল খেলা, বিরতির পর আবাহনীর লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল আরও কঠিন। ৩.১ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৪৪ রান, তবে তাসকিন আহমেদ ও আবু জায়েদ সেটির ধারেকাছেও যেতে দেননি তাদের। তাসকিন দারুণ ইয়র্কারে শান্তকে বোল্ড করার পর ক্যাচ বানিয়েছেন সাইফউদ্দিনকে, মাঝে মোসাদ্দেককে ফিরিয়েছেন সাইফউদ্দিন। শেষ পর্যন্ত সমানসংখ্যক বলে ১৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। 

    তবে এদিন তিনি ছিলেন আড়ালেই। দল যেমন হেরেছে, তেমনি ম্যাচটাও তো আড়ালে পড়ে গেছে সাকিব-বিতর্কে।