• অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর ২০২১
  • " />

     

    আফিফ-নুরুলে অস্ট্রেলিয়াকে 'ব্যাক টু ব্যাক' পরাজয়ের স্বাদ দিল বাংলাদেশ

    আফিফ-নুরুলে অস্ট্রেলিয়াকে 'ব্যাক টু ব্যাক' পরাজয়ের স্বাদ দিল বাংলাদেশ    

    অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের প্রথম জয়ের জন্য বাংলাদেসশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক বছর। তবে দ্বিতীয় জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে মাত্র এক দিন। এবার আফিফ হোসেন-নুরুল হাসানের দুর্দান্ত জুটিতে বাংলাদেশ পেয়েছে ৫ উইকেটের জয়। ৫-০ ম্যাচে এগিয়ে গেছে ২-০ ব্যবধানে। 

    বাংলাদেশের শুরুটা আগের ম্যাচের মতোই হয়েছিল দুঃস্বপ্নের মতো। সৌম্য তৃতীয় ওভারে মিচেল ন্সটার্কের সোজা বলে ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড, ফিরে গেছেন দুঃস্বপ্নের আরেকটি শটে। নাঈম শেখও টেকেননি বেশিক্ষণ, জশ হ্যাজলউডের নিচু হয়ে যাওয়া বলে বোল্ড হয়ে ফিরে গেছেন ৯ রানে। 

    তবে ১২২ রানের ছোট লক্ষ্যের জন্য কিছু চারই যথেষ্ট হতো। সেটা প্রথম তিন বলেই করে ফেলেছেন সাকিব আল হাসান। প্রথম দুই বল প্যাডের ওপর, ফ্লিক করে সাকিব পেয়েছেন দুর্দান্ত দুইটি চার। পরের বলটা অবশ্য এজ হয়েছিল, দুর্ভাগ্য স্টার্কের প্রথম স্লিপের ফাঁকা জায়গা দিয়ে চলে গেছে বাইরে। এই মোমেন্টামটা ধরে রেখেছেন সাকিব, সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক রোটেট করছিলেন। 

    তবে অদ্ভুত কাণ্ড হচ্ছিল অন্য প্রান্তে। মাহেদী হাসান চারে উঠে এসেছিলেন। প্রথম দুই ওভারেই অন্তত তিন বার আউট হতে পারতেন। অ্যাগারের বলেই হতে পারতেন আসলে। কিন্তু বল তুলে দিয়েও কীভাবে যেন প্রতিবারই বেঁচে গেছেন। সেখান থেকে দুই রান করে এসে স্ট্রাইক রেটও ঠিক করে ফেলেছিলেন। আর জাম্পাকে উড়িয়ে ইনিংসের বাংলাদেশের প্রথম ছয়ও পেয়ে গিয়েছিলেন। 

    ওদিকে সাকিব টাইয়ের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন তখন। মাহমুদউল্লাহ এসেছেন, আর অ্যাগারের বলটা স্টাম্পে টেনে ফিরেছেন শুন্য রানে। আর মাহেদীও বেশিক্ষণ থাকেননি, শেষ পর্যন্ত ২৪ বলে ২৩ রান করে স্টাম্পড জাম্পার বলে।

    তবে ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর পথ হারাতে দেননি আফিফ-নুরুল। দুজন সুযোগ পেলেই সিঙ্গেল নিচ্ছিলেন, আবার চারও মারছিলেন আলগা বলে। আফিফ টাকে মেরে পেয়েছেন দ্বিতীয় ছয়। স্টার্কের বলে দুজন দুইটি চার মেরে সমীকরণ সহজ করে ফেলেছেন, নিয়ে এসেছেন রান রেট পাঁচের ঘরে। আর যেটুকু সংশয় ছিল সেটা দূর হয়ে গেছে টাইয়ের ১৮তম ওভারে। দুই চারে আফিফ নিয়ে এসেছেন নাগালে। দুজনের ৫০ রানের জুটিও হয়ে গেছে পূর্ণ। এরপর বাকি কাজটা সেরেছেন সহজেই। ৩১ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন আফিফ, আর নুরুল ছিলেন ২১ বলে ২২ রান করে।

    প্রথম ম্যাচের ইনিংসটাই যেন মঞ্চায়ন করল অস্ট্রেলিয়া আবার। মিরপুরে আবার সেই স্লথ, মন্নথর উইকেট। যেখানে রান নিতে নাভিশ্বাস উঠে গেছে ব্যাটসম্যানদের। এবারও মিচেল মার্শই যা করার করেছেন মূলত, আগের ম্যাচের মতো এবারও করেছেন ৪৫। মোস্তাফিজুর-শরিফুলদের কাটার আর সাকিবদের স্পিনে অস্ট্রেলিয়া আটকে গেছে ১২১ রানে। 

    আগের মাচের মতো শুরুটা আজ অতটা খারাপ হয়নি অস্ট্রেলিয়ার, অন্তত প্রথম ওভারে উইকেট হারাতে হয়নি। জশ ফিলিপ ও অ্যালেক্স ক্যারি সতর্ক ছিলেন আগের অভিজ্ঞতা থেকে। নাসুমের দ্বিতীয় ওভারে অবশ্য দুইটি চার মেরেছিলেন ক্যারি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধৈর্য হারিয়েছেন ক্যারিই আগে। এবারও মাহেদী হাসানই ঘাতক, তাগে মিড অনের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যারি করতে পারেননি ক্যারি। জশ ফিলিপ আউট হয়েছেন মোস্তাফিজের আক্টারে, যেটা এত নিচু হয়ে এসেছিল ক্যারি বুঝতেই পারেননি। ৩১ রানে তাই ২ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়ার। 

    এরপর মিচেল মার্শ আর ময়জেস হেনরিকস মিলে একটু লাইনে আনার চেষ্টা করেছেন অস্ট্রেলিয়াকে। দুজন সুযোগ পেলে বাজে বলের ফায়দা লুটছিলেন। মার্শ দারুণ কিছু শটে চার পাচ্ছিলেন, অন্যদিকে হেনরিকস নাসুমকে মেরে পেয়েছেন ইনিংসের একমাত্র ছয়। দুজনের জুটিতে রান উঠে গেছে ৫০। এরপর যখন রান রেট বাড়াতে যাবেন, তখনই সাকিবকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে গেলেন হেনরিকস, ফিরলেন ২৫ বলে ৩০ রান করে। 

    তবে মার্শ ছিলেন ঠিকই, মনে হচ্ছিল আজ ফিফটিটা পেয়ে যাবেন। কিন্তু শরিফুলের বলে স্লগ করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে সোহানকে, করলেন ঠিক ৪৫। এরপরেই পথ হারানো শুরু করল অস্ট্রেলিয়া। মোস্তাফিজ পর পর দুই বলে ফেরালেন ওয়েড আর অ্যাগারকে। প্রথমজন বোল্ড, দ্বিতীয়জন ক্যাচ। বলা বাহুল্য দুজনেই শিকার কাটারে। শরিফুল পরে ফিরিয়েছেন টার্নারকে। শেষ ওভারে চার মেরে রান ১০ পার করেছেন স্টার্ক।