রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারে পাকিস্তানের হৃদয় ভেঙে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয় এনে দিলেন রোচ-সিলস
পাকিস্তান ২১৭ ও ২০৩
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫৩ ও ১৬৮/৯
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ উইকেটে জয়ী
বলটা পয়েন্ট আর কাভারের মধ্য দিয়ে ঠেলে দিয়েই উদযাপন শুরু করলেন কেমার রোচ। স্যাবাইনা পার্কের গুটিকয়েক দর্শকেরা নাচ শুরু করে দিয়েছেন তখন। হাসান আলী হতাশায় বসে পড়েছেন মাটিতে, তার চোখেমুখে তীরে এসে তরী ডুবে যাওয়ার হতাশা। ১ উইকেটে ম্যাচটা জিতে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০০ অ্যান্টিগা, ২০১৭ ডমিনিকার পর পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট দেখল আরেকটু শ্বাস রোধ করা থ্রিলার। এবার জয়ী দলের নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ম্যাচের প্রথম তিন ইনিংসের পরেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে পাল্লাটা একটু বেশি ভারি ছিল। কিন্তু সেটা মেঘের মতো রঙ বদলাতে শুরু করল শেষ ইনিংসে এসে। শুরুতেই আউট কাইরন পাওয়েল শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে। খানিক পর প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ত্রাতা ক্রেইগ ব্রাথওয়েটকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের দিকে পেন্ডুলামটা নিয়ে এলেন শাহীন। ১৫ রানে ২ উইকেট নেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেটা ১৬ রানে ৩ উইকেট হলো যখন আফ্রিদি আবার বোনারকে ফিরিয়ে দিলেন।
কিন্তু এরপর মঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিকেরা। জার্মেইন ব্ল্যাকউড ও রস্টন চেজের ৫০ ছাড়ানো জুটিতে আবার ম্যাচে ফেরে। লক্ষ্য ১৬৮, তাই একটা বড় জুটি হলেই চলত ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু সেটা খুব বড় হতে দিলেন না ফাহিম আশরাফ, ২২ রানে ফেরালেন চেজকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে মহাকাব্যিক জয় এনে দিয়েছিলেন কাইল মেয়ার্স। কিন্তু এবার প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও কোনো রান না করেই আউট। তখন মনে হচ্ছিল পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের মধ্যে একমাত্র বাধা ব্ল্যাকউড।
১১১ রানে ব্ল্যাকউডকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করে তুললেন হাসান আলী। জেসন হোল্ডারের সামান্য প্রতিরোধের পর স্বাগতিকদের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জশুয়া ডা সিলভা যখন আউট হলেন, তখনো জয় থেকে ২৬ রান দূরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু টেল এন্ডারদের নিয়ে কেমার রোচ এগিয়ে চললেন জয়ের দিকে। ১৫১ রানে ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও ছাড়েননি হাল। শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন রোচ, নিজে অপরাজিত ছিলেন ৩০ রানে। আর দুই ইনিংস মিলে ৮ উইকেট পেয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ সিলস সঙ্গ দিয়ে গেছেন শেষ পর্যন্ত।