• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১
  • " />

     

    লো-স্কোরিং থ্রিলারে বাভুমাদের হারিয়ে ফিঞ্চদের স্বস্তির শুরু

    লো-স্কোরিং থ্রিলারে বাভুমাদের হারিয়ে ফিঞ্চদের স্বস্তির শুরু    

    সুপার ১২, আবু ধাবি (টস- অস্ট্রেলিয়া/ বোলিং)

    দক্ষিণ আফ্রিকা ১১৮/৯, ২০ ওভার (মার্করাম ৪০, রাবাদা ১৯*, মিলার ১৬, হেজলউড ২/১৯, জাম্পা ২/২১, স্টার্ক ২/৩২)

    অস্ট্রেলিয়া ১২১/৫, ১৯.৪ ওভার (স্মিথ ৩৫, স্টোইনিস ২৪*, ম্যাক্সওয়েল ১৮, নরকিয়া ২/২১, শামসি ১/২২, মহারাজ ১/২৩)

    ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৫ উইকেটে জয়ী


    অধিনায়ক হিসেবে অ্যারন ফিঞ্চের ৫০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি স্মরণীয় হয়ে থাকল অস্ট্রেলিয়ার ৫ উইকেটের জয় দিয়েই। অস্ট্রেলিয়া বোলারদের দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে দক্ষিণ আফ্রিকা মাত্র ১১৮ রান তুলতে পারলেও স্বল্প পুঁজি নিয়েই চেপে বসেছিল তারা। স্টিভ স্মিথের ৩৫ রানের পর মাঝের বিপদ সামলে মার্কাস স্টোইনিস-ম্যাথিউ ওয়েডের ৪০* রানের জুটিতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে স্বস্তির জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে অস্ট্রেলিয়া। 

    ১১৮ রানের পুঁজি নিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল বেশ আত্মবিশ্বাসী। তারই প্রতিফলনস্বরূপ প্রথম ওভারেই আনরিখ নরকিয়া ফেরান অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে। উইকেটের আশায় কাগিসো রাবাদাকে পাওয়ারপ্লেতে টানা তৃতীয় ওভার দেওয়া হলে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে তিনি ফেরান ১৪ রানে থাকা ডেভিড ওয়ার্নারকে। পাওয়ারপ্লেতে এক উইকেট কম হারালেও দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে এক কম-২৮ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। 

    অষ্টম ওভারে কেশভ মহারাজকে তুলে মারতে গিয়ে মিচেল মার্শও ফিরে গেলে আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে নিয়ে এরপর ঠাণ্ডা মাথায় বিপদ সামাল দেন স্টিভ স্মিথ। বাউন্ডারি বের করতে বেগ পেতে হলে দুজনেই প্রান্ত বদল করায় মনোযোগ দেন। নরকিয়ার করা ১৫তম ওভারে এরপর হাত খুলতে গেলেই থামতে হয় স্মিথকে। চার মারার পরের বলেই একই জায়গা দিয়ে উড়িয়ে মারলে লং অন থেকে নিজের ডানে অনেকটুকু দৌড়িয়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে অসাধারণ এক ক্যাচ নেন মার্করাম, ৩৫ রানে ফেরেন স্মিথ। পরের ওভারেই তাব্রেইজ শামসির বলে সুইচ হিট করতে গিয়ে স্টাম্প খুইয়ে তার ৫০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি শিকার হয়ে ১৮ রানে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। 

    শেষ ৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সামনে জয়ের সমীকরণ ছিল ৪০ রানের। উইকেটে এসে এরপর ম্যাথিউ ওয়েড ও মার্কাস স্টোইনিস দুজনেই ছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসী। নরকিয়া-প্রিটোরিয়াসরা চেষ্টা করলেও ১৬ বলে স্টোইনিসের ২৪ ও ওয়েডের ১০ বলে ১৫* রানের সময়োপযোগী ইনিংসে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অজিরাই। 

    এর আগে টসে জিতে বোলিং নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা হয় দুর্দান্ত। দ্বিতীয় ওভারেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অফ স্পিনে স্টাম্প খুইয়ে ফিরে যান প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। এরপর আক্রমণে এসে প্রথম বলেই জশ হেজলউড উইকেটের পিছনে ক্যাচে ফেরান রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে। নিজের পরের ওভারের প্রথম বলে এরপর অদ্ভুতুড়ে কায়দায় ফেরান কুইন্টন ডি কককে। স্কুপ করতে গিয়ে বল কিছুটা আকাশে ভাসিয়ে দেন ডি কক, বল কোথায় বুঝে ওঠার আগেই দেখেন বেল পড়ে গিয়েছে। পাওয়ারপ্লেতে ঐ তিন উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলতে পারে ২৯ রান। 

    পাওয়ারপ্লের পরের ওভারেই প্যাট কামিন্সের বল লেগে ঠেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যাওয়ার পর স্মিথের দারুণ ক্যাচের শিকার হয়ে ১৩ রানে ফিরে যান হাইনরিখ ক্লাসেন। ডেভিড মিলারকে নিয়ে এরপর বিপদ কিছুটা সামলে উঠেছিলেন এইডেন মার্করাম। কিন্তু ১৪তম ওভারে এসে সেসব ভেস্তে দেন অ্যাডাম জাম্পা, মিলারকে ফেরানোর পর ফেরান উইকেটে আসা ডুয়েইন প্রিটোরিয়াসকেও। পরের ওভারে অদ্ভুত ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে কেশভ মহারাজও ফিরে যান। 

    বিপদের মাঝেও এক প্রান্ত আগলে রাখা মার্করাম হেজলউডের শেষ ওভারে বড় এক ছয় মেরে হাত খোলার ইঙ্গিত দেন। মিচেল স্টার্কের করা পরের ওভারেও একই কাজ করতে গেলে ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচের শিকার হয়ে ৪০ রানে থামতে হয় তাকে। শেষ ওভারে নরকিয়াকেও স্টার্ক ফেরালে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে থামে ১১৮ রানে। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে সেই লক্ষ্য পেরিয়ে গিয়ে জয় দিয়েই বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করে অজিরা।