নেট সেশন: গরম, স্পিন এবং 'অপ্রস্তুত' বাংলাদেশের সামনে 'চনমনে' শ্রীলংকা
বাংলাদেশ-শ্রীলবগকা
সুপার ১২ ম্যাচ
শারজা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম
২৪ অক্টোবর, বিকেল ৪টা
সুপার-১২ মিশন শুরু হচ্ছে আজ বাংলাদেশের। খুব সম্ভবত কাগজে কলমে এই গ্রুপের সবচেয়ে সহজ ম্যাচটা হতে যাচ্ছে প্রথমে। তবে বাংলাদেশের এই নির্দিষ্ট ম্যাচ নিয়ে কতটা পরিকল্পনা করতে পেরেছে, আইসিসির খামখেয়ালিপনায় সেই প্রশ্নটা উঠেই যাচ্ছে।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে আইসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বাংলাদেশ সুপার-১২ এ উঠলে বি১ হিসেবেই উঠবে। অর্থাৎ প্রথম বা দ্বিতীয় যাই হয়ে উঠুক না কেন, পড়বে ভারত-পাকিস্তানের গ্রুপে। কিন্তু পরে আইসিসির আরেক সিদ্ধান্তে বদলে গেছে ওই সমীকরণ। বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে বি২ হয়ে চলে গেছে গ্রুপ ওয়ানে। সেখানে এমন পাঁচ প্রতিপক্ষ, যাদেরকে নিয়ে হয়তো খুব একটা হোমওয়ার্কও করতে পারেনি বাংলাদেশ। বাছাইপর্ব শেষ হয়েছে দুইদিন হয়েছে, এর মধ্যেই প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে শ্রীলংকার ম্যাচের।
আর বাংলাদেশের সূচিটাও হয়েছে অন্যরকম। মাত্র একদিন করে বিরতি পাচ্ছে দুই ম্যাচের মাঝে, আবার ম্যাচগুলো সবই শুরু হচ্ছে দুপুর বেলায়। মরুর প্রখর রোদে খেলোয়াড়েরা কতটা ধকল সহ্য করতে পারবে, এ নিয়ে প্রশ্ন আছে। আবার রাতের ম্যাচে শিশিরের হ্যাপা থেকে বেঁচে যাওয়ার স্বস্তিও আছে।
প্রতিপক্ষ হিসেবে শ্রীলংকাকে নিয়েও একটা চাপা উদ্বেগ থাকতে পারে বাংলাদেশ। র্যাঙ্কিং আর ফর্ম হিসেব করলে বাংলাদেশ হয়তো এগিয়ে ছিল এই বিশ্বকাপের আগেও। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচেই শ্রীলংকার কাছে হারতে হয়েছে, তাও জেতার মতো অবস্থা থেকে। তার চেয়েও বড় কথা, বাছাইয়ের তিনটি ম্যাচ জিতেই লংকানরা ঝালাই করে নিয়েছে আত্মবিশ্বাস। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বিশেষ করে ১০ রানের ভেতর ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটা মূল পর্বের জন্য তাদের বাড়তি শক্তি যোগাবে। লড়াইটা দুই দলের হবে সম্ভবত স্পিন আক্রমণেই। সাকিব-নাসুম-মাহেদীদের সঙ্গে এখানে টক্কর হবে হাসারাঙ্গা-দনঞ্জয়াদের।
আগে কী হয়েছিল?
শ্রীলংকা বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত মুখগুলোর একটি। এই বছরেও তাদের সঙ্গে খেলেছে বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের দেখা সেই ২০১৮ নিদাহাস ট্রফিতে। ঘটনাবহুল সেই দুই ম্যাচেই জিতেছিল বাংলাদেশ, মুশফিক ও মাহমুউল্লাহ দুই ম্যাচে ছিলেন নায়ক। সব মিলে এই ফরম্যাটে দুই দলের ১১ দেখায় শ্রীলংকা জিতেছে সাতবার, বাংলাদেশ জিতেছে চারবার। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই দলের দেখা হয়েছিল একবারই, সেটা সহজেই জিতেছিল শ্রীলংকা। শারজার মাঠে অবশ্য দুই দলের দেখা হয়নি এখনো।
রঙ্গমঞ্চ
শারজা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের উইকেট একটু মন্থর ও স্পিনারদের পক্ষে থাকবে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। আইপিএলেও আমিরাতের তিন ভেন্যুর মধ্যে এখানে লো স্কোরিং ম্যাচ হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
দলের খবর
টানা দুই ম্যাচ জেতার পর বাংলাদেশ দল হয়তো এই ম্যাচেও উইনিং কম্বিনেশন নিয়ে খেলতে চাইবে। তবে কন্ডিশন বিবেচনায় বাড়তি একজন স্পিনার খেলাতে পারে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে নাসুম আহমেদ আসতে পারেন তাসকিন আহমেদের জায়গায়। আর ওপেনিং জুটিতে যে নাঈম-লিটন থাকছেন, সেটা কোচ রাসেল ডমিঙ্গো সরাসরি বলে রেখেছেন।
শ্রীলংকায় অবশ্য একটা উদ্বেগ আছে, চোটের জন্য সম্ভবত এই ম্যাচ খেলতে পারছেন না রহস্য স্পিনার মাহিশ থিকসানা। তার জায়গায় আসতে পারেন স্পিনার আকিলা দনঞ্জয়া।
যাদের ওপর চোখ
সাকিব আল হাসান
আর এক উইকেট পেলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট হয়ে যাবে সাকিব আল হাসানের। এখন পর্যন্ত তার ঘাড়ে চড়েই সুপার-১২ এ এসেছে বাংলাদেশ, আজও ব্যাটে-বলে তার দিকে তাকিয়ে থাকবে দল।
ওয়ানিদু হাসারাঙ্গা
সাকিব যদি হন বাংলাদেশের বড় ভরসা, শ্রীলংকায় অবশ্যই তা হাসারাঙ্গা। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন এই অলরাউন্ডার। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংসের পাশাপাশি দারুণ বল করেছেন।