• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১
  • " />

     

    দুই দলের শক্তির পার্থক্য বুঝিয়ে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল ইংল্যান্ড

    দুই দলের শক্তির পার্থক্য বুঝিয়ে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল ইংল্যান্ড    

    সুপার ১২, আবু ধাবি (টস- বাংলাদেশ/ ব্যাটিং)

    বাংলাদেশ ১২৪/৯, ২০ ওভার (মুশফিক ২৯, নাসুম ১৯*, মাহমুদউল্লাহ ১৯, মিলস ৩/২৭, লিভিংস্টোন ২/১৫, মঈন ২/১৮)

    ইংল্যান্ড ১২৬/২, ১৪.১ ওভার (রয় ৬১, মালান ২৮*, বাটলার ১৮, নাসুম ১/২৬, শরিফুল ১/২৬, মোস্তাফিজ ০/২৪) 

    ফলাফল: ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী


    টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে বাংলাদেশের সাথে প্রথম দেখায় ৮ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ক্রিস ওকসের আঁটসাঁট বোলিংয়ে দিশেহারা বাংলাদেশ মঈন আলি ও লিয়াম লিভিংস্টোনের কাছে উইকেট খুইয়ে কোনও পর্যায়েই রানের চাকা সচল করতে পারেনি। শেষে টিমাল মিলসের দারুণ ডেথ বোলিংয়ের পরেও নাসুম আহমেদের ১৯* রানের ক্যামিওতে ১২৪ রানে গিয়ে থামে বাংলাদেশ। জবাবে জেসন রয়-ডাভিড মালানের ৭৩ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে নিয়ে ছেলেখেলা করে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে অইন মরগানের দল। ন

    ১৩০ এর নিচে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে মাত্র একবার ম্যাচ হেরেছে ইংল্যান্ড, তাও সেই ২০১১ সালে। বাংলাদেশকে ম্যাচ জিততে তাই করতে হত অসাধারণ কিছুই। তবে সেরকম কিছু হয়নি। ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার ভালো একটা শুরু এনে ম্যাচটা শুরুতেই বের করে ফেলেছেন। শেষ পর্যন্ত নাসুম আহমেদ আক্রমণে এলে তাকে তুলে মারতে গিয়ে নাঈমের ক্যাচে থামেন বাটলার। ঐ এক উইকেট হারিয়ে পাওয়ারপ্লেতে ইংল্যান্ড তুলে ফেলে ৫০ রান।

    পাওয়ারপ্লের পরেও ডাভিড মালানকে নিয়ে রয় ছিলেন সপ্রতিভ। বাংলাদেশের লাগামছাড়া বোলিংয়ের সুবিধা নিয়ে কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়েই এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। নাসুমের মাথার ওপর দিয়ে সজোরে ছয় মেরে ৩৩ বলে নিজের ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে

    দ্রুত ম্যাচ শেষ করার তাড়নায় থামতে হয় তাকে, শরিফুল ইসলামের বলে র‍্যাম্প শট খেলতে গিয়ে নাসুমের কাছে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে তিনি খেলেন ৩৮ বলে ৬১ রানের ইনিংস। আরেক প্রান্তে থাকা মালান অবশ্য ২৫ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থেকে এরপর জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন।  

    টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মঈন আলীকে দুই চার মেরে লিটন দাস শুরু করলেও সেই মঈনের পরের ওভারেই সুইপ করতে গিয়ে ফেরেন ৯ রানে। ঠিক পরের বলেই আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম বেরিয়ে এসে মিড অনের ওপর দিয়ে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ফিরে যান। উইকেটে নবাগত দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমও সুবিধা করতে পারছিলেন না। ফলস্বরূপ পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ক্রিস ওকসের গুড লেংথের বলে ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে গিয়ে আদিল রশিদের দুর্দান্ত ক্যাচে থামতে হয় সাকিবকে। তিন উইকেট হারিয়ে ঘোর বিপদে পড়া বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে তুলতে পারে মোটে ৬ রান। 

    পাওয়ারপ্লের পরে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে বিপদ সামলানোর চেষ্টা করেন মুশফিক। উইকেটে থিতু হয়ে দুই পেসার ক্রিস জর্ডান ও টাইমাল মিলসের ওভার থেকে দুজন মিলে ১০+ রানও নেন। কিন্তু স্পিনারদের বলে র‍্যাম্প শট খেলতে গিয়েই হয় কাল। লিয়াম লিভিংস্টোনের লেগ স্টাম্পের ওপরের বলে রিভার্স সুইপ করে চার পান মুশফিক। কিন্তু ইংল্যান্ড খেলোয়াড়দের জোরালো আবেদনের পর মরগান রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত নিলে রিপ্লেতে দেখা যায় বল ব্যাটে লাগেনি, ফলাফল এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ৩০ বলে ২৯ রান করে মুশফিকের ফেরা। লিভিংস্টোনের পরের ওভারে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় আফিফ হোসেনকে। পরের দুই বলেও রান আউটের সুযোগ তৈরি হলেও টিকে যায় নুরুল হাসান-মাহমুদউল্লাহ জুটি। বাউন্ডারির খোঁজে হন্যে হয়ে ওঠা মাহমুদউল্লাহকে অবশ্য থামতে হয় সেই লিভিংস্টোনের বলেই, বের হয়ে এসে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সোজা ক্যাচ তুলে দিয়ে ২৪ বলে ১৯ রান করে ফিরে যান তিনি।

    শেষের দিকে হাত খুলে খেলার কোনও বিকল্প না থাকলে মিলসের দারুণ স্লোয়ারে স্কুপ করতে গিয়ে সোজা ক্যাচ তুলে দিয়ে এরপর ফিরে যান মাহেদী হাসান। স্রোতের বিপরীতে দারুণ দুই ছয় আর এক চারে রশিদের করা ১৯তম ওভারে ১৭ রান নেন নাসুম আহমেদ। শেষ ওভারে মিলসের ধীরগতির বাউন্সারে উইকেটের পেছনে ক্যাচে দিয়ে ১৮ বলে ১৬ রান করে নুরুল ফেরার পর শেষ বলে স্টাম্প খুইয়ে ফিরেন মোস্তাফিজুর রহমানও। নাসুমের ৯ বলের ১৯* রানের ক্যামিওতে বাংলাদেশ তাই ১২৪ রান পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। দিনশেষে বাংলাদেশি বোলারদের পাত্তা না দিয়ে সেই লক্ষ্যকে রীতিমত মামুলি বানিয়েই টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।