• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১
  • " />

     

    জাম্পা-স্টার্কের পর ওয়ার্নারের ফেরায় শক্তিটা জানান দিল অস্ট্রেলিয়া

    জাম্পা-স্টার্কের পর ওয়ার্নারের ফেরায় শক্তিটা জানান দিল অস্ট্রেলিয়া    

    সুপার ১২, দুবাই (টস- অস্ট্রেলিয়া/ বোলিং)

    শ্রীলংকা ১৫৪/৬, ২০ ওভার (আসালাঙ্কা ৩৫, কুসাল ৩৫, রাজাপাকসে ৩৩, জাম্পা ২/১২, স্টার্ক ২/২৭)

    অস্ট্রেলিয়া ১৫৫/৩, ১৭ ওভার (ওয়ার্নার ৬৫, ফিঞ্চ ৩৭, হাসারাঙ্গা ২/২২) 

    ফলাফলঃ অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেট জয়ী


    অস্ট্রেলিয়া জিতেছে, তার সাথে সমান গুরুত্বপুর্ণ খবর, ওয়ার্নার ফিরেছেন ফর্মে। বাকিদের জন্য যা অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারণ! তবে শ্রীলংকার দুর্ভাগ্য, ওয়ার্নারের ব্যাট হাসা শুরু করলো এ ম্যাচ দিয়েই। যে ম্যাচে তারা হেরে গেল ৭ উইকেটে। আসালাঙ্কার ব্যাটে ঝড়ো সুচনার পর বড় স্কোরে চোখ রাখা শ্রীলংকা রাজাপাকসের ব্যাটে ব্যাটিং ধ্বস সামলে শেষমেশ অস্ট্রেলিয়াকে ১৫৫ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল। ফিঞ্চের ক্যামিওর পর ওয়ার্নারের ৬৫ রানের ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া তা পেরিয়ে গেছে তিন ওভার হাতে রেখেই।

    ওয়ার্নার ফর্মে নেই হলো বহুদিন! টি-টোয়েন্টিতে ওয়ার্নারের প্রিয় প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা, পঞ্চাশের বেশি গড়ে লংকানদের বিপক্ষেই তার সবচেয়ে বেশি রান। সেই লংকানদের সাথেই ফর্মে ফেরার মঞ্চ বেছে নিলেন! ভাগ্যও সহায় ছিল যদিও, ১৮ রানে জীবন পেলেও ছন্দে ছিলেন পুরো ইনিংসেই। অবশ্য লংকানদের মহাচাপে ফেলার কাজটা শুরু করেছিলেন ফিঞ্চ। ফিঞ্চ-ওয়ার্নারের ব্যাটিং ছিল ‘বিউটিফুল টু ওয়াচ’! ২৩ বলে ফিঞ্চ ৩৭ রানে ফেরার পর ওয়ার্নার এগিয়ে নিয়ে গেছেন অস্ট্রেলিয়াকে। ম্যাচে ফেরার জন্য উইকেটের কোন বিকল্প ছিল না শ্রীলংকার। ওয়ার্নারের সহজ ক্যাচ মিসে সে সুযোগ হারায় শ্রীলংকা, ক্যাচটা এতটাই সহজ ছিল চামিরা উইকেটের পেছনে কুসাল ক্যাচ নিতে পারলেন কি না, তাতে খেয়াল না করেই উদযাপন শুরু করে দিয়েছিলেন! 

    শ্রীলংকা উইকেটের দেখা যখন পেল, তখন স্কোরবোর্ডে অস্ট্রেলিয়ার রান ৬.৪ ওভারে ৭০ পূর্ণ হয়ে গেছে। ফিঞ্চ চলে গেলেও ওয়ার্নার সমান তালেই খেলে গিয়েছেন। ফিঞ্চের পর ম্যাক্সওয়েলও এরপর হাসারাঙ্গার বলে ফিরে গেলে ওয়ার্নারের সাথে স্মিথ স্ট্রাইক রোটেটের মাধ্যমে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে লক্ষ্য তাড়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছিলেন। সে যাত্রায় ওয়ার্নার ফিফটিতে পৌছে গেছেন ৩১ বলে। দ্রুত খেল খতমের চেষ্টায় এরপর ৬৫ রানে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন তিনি। তবে অপর প্রান্তে থাকা স্মিথ স্টইনিসের সাথে মিলে তিন ওভার হাতে থাকা অবস্থায় যখন জিতিয়ে মাঠ ছাড়ছেন, তখন স্মিথ অপরাজিত ছিলেন ২৬ রানে এবং স্টইনিস ৮ বলে ১৬ রানে। এবং দুবাইয়ে আরও একবার পরে ব্যাট করা দলই জিতল!

    টসে জিতে ফিল্ডিং করার ইচ্ছে ছিল সানাকারও। অবশ্য আগে ব্যাট করতে নেমে যে শুরু পেয়েছেন তাতে বরং তার খুশি না হয়ে উপায় নেই! আরব আমিরাতে পাওয়ারপ্লে বেশ গুরুত্বপুর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, আর শ্রীলংকা তো এ ম্যাচে প্রথম ছয় ওভারে তুলে ফেলেছিল ৫৩ রান। ৭ রান করা নিসাঙ্কার উইকেট হারিয়েছিল শুধু পাওয়ারপ্লেতে, এরপর আসালাঙ্কা এসে শুরু করেছেন যেখান থেকে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই! শুরু থেকেই সেট হয়ে! প্রথম দুই বলেই মারেন দুই চার। আগের ম্যাচের চেনা ছন্দে থেকে আত্মবিশ্বাসের সাথে ঝড় তুলে গেছেন এ ম্যাচেও। একটা সময় ৮ বল খেলেই করে ফেলেছিলেন ২০ রান! এর আগে ম্যাক্সওয়েলের ১৩ বলেই দুবার আউট হয়েছিলেন কুসাল পেরেরা, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার ওভার করা ম্যাক্সওয়েলকে তার সামনে এদিন আনলে তাকে সন্তুষ্ট থাকতে হলো এক ওভারেই। আসালাঙ্কা যে তাকে অসহায়ই বানিয়ে ছাড়ছিলেন! 

    প্রথম বলই সীমানা ছাড়া হতে দেখতে হয়েছে ম্যাক্সওয়েলকে, স্লগ সুইপের পর আরেকটি দুর্দান্ত সুইপে এরপর চারের মারের পর সেই চাপেই কিনা ম্যাক্সওয়েল ওয়াইড বাইয়ে দিয়ে দিলেন আরও পাঁচটি রান। পাওয়ারপ্লের পর শ্রীলংকার রানের চাকার গতি কিছুটা কমেছে! টানা চার ওভারে বাউন্ডারির পর টানা তিন ওভারে আসেনি কোন বাউন্ডারি। ৮ ওভার শেষে ৬৪ রানের পর কুসাল পেরেরা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন, তখন ছিলেন তিনি ১৭ বলে ১৭ রানে। তবে এরপর আরও ৯ বলে ১৮ রান এনে স্টার্কের দুর্দান্ত ইয়র্কারে তার ইনিংস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৩৫ রানে কুসালের ফেরার আগের ওভারেই শুরুতে ঝড় তুলা আসালাঙ্কাও ফিরে গিয়েছিলেন একই রানে। 

    খানিক আগেও বড় স্কোরে চোখ রাখা শ্রীলংকা হঠাৎই চাপে পড়ে যায়! ২০ রানের ব্যবধানেই চারটি উইকেট হারালে বিপদ তাদের বেড়ে যায় আরও। তখন লড়ে যাওয়ার পুঁজি গড়া নির্ভর করছিল রাজাপাকসে ও সানাকার উপর। দুজনেই শুরুতে সেই ধাক্কা সামলানোড় জন্য সময় নিয়েছেন। তবে সানাকা আর সেই খোলস থেকে বেরুতে পারেননি। ১৯ বলে ১২ রানে তিনি ফিরে গেলেও রাজাপাকসে এদিনও ধরে রেখেছেন তার ফর্ম। ১২ বলে ১১ রানে ছিলেন একটা সময়, পরের ১৪ বলে ২২ রান এনেছেন। তার সে ইনিংসের সাথে কারুনারত্নের ছোট্ট ইনিংসের সহায়তায় বোলাররা লড়ে যাওয়ার মতো একটা পুঁজি পেয়েছিলেন। তবে ফর্মে ফেরা ওয়ার্নারের সাথে ফিঞ্চ-স্মিথে তারা যে অসসহায়ই বনে গেলেন!