• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১
  • " />

     

    তাসকিনদের চেষ্টার পরও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সেই পুরনো গল্পই

    তাসকিনদের চেষ্টার পরও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সেই পুরনো গল্পই    

    সুপার ১২, আবুধাবি (টস-দক্ষিণ আফ্রিকা/ বোলিং)

    বাংলাদেশ ৮৪/১০, ১৮.২ ওভার (মাহেদী ২৭, লিটন ২৪, নরখিয়া ৩/৮, রাবাদা ৩/২০)

    দক্ষিণ আফ্রিকা (বাভুমা ৩১, ডুসেন ২২, তাসকিন ২/১৮)

    ফলাফলঃ দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেট জয়ী


     

    সেমিফাইনালের স্বপ্ন অনেকটুকু মাটি হয়ে গেলেও বাংলাদেশের জন্য অন্তত দুটি জয় নিয়ে ফেরাটাই হতো গর্বের। কিন্ত রাবাদা-নরখিয়ার পেস-বাউন্সারে দুমড়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ৮৪ রানেই আটকে যাওয়া বাংলাদেশের বোলিংয়ে তাসকিনের পেস ছিল আশাজাগানিয়া। তবে এ ম্যাচে বাংলাদেশের জুটেছে ৬ উইকেটের হারই। যার ফলে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল স্বপ্নেরও মৃত্যু ঘটলো। এবং সেই সাথে এ ম্যাচের খেলা মনে করিয়ে দিলো বাকি থাকা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেও জয়ের মিটমিটে আশাটা নিভিয়ে নেয়াই ভালো!

    ৮৪ রানের পুঁজিতে নিজেদের অনুপ্রেরণা দিয়ে লড়ে যাওয়াটা কষ্টকরই বটে! তবে আবুধাবিতেও হাজির বাঙ্গালীদের ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ চিৎকার অনুপ্রেরণা খুঁজে নেওয়ার জন্য যথেষ্টই। বাংলাদেশ শুরুটা করলো দারুণভাবেই, প্রথম ওভারের শেষ বলেই তাসকিনের ভেতরে ঢুকা বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বাইজ গজ ছেড়ে বাইরে গেছেন হেনড্রিক্স। তাসকিনের পেসের সাথে সুইং বাঙ্গালী দর্শকদের ক্ষুদ্র আশা জাগিয়ে তুলেছে! উজ্জীবিত বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে নিতে পারে তিন উইকেট। তাসকিন মারক্রামকে ফিরিয়ে দেন স্লিপে নাঈমের ভালো ক্যাচে। তার আগে পরপর দুই বলে দুই চার মারার পর মাহেদীর সে ওভারেই বোল্ড হয়ে ডি কক প্যাভিলিয়নে ফিরেন ১৬ রানে।

    তাসকিন ২ উইকেট শিকারে ১৮ রানে তার চার ওভার শেষ করে ফেলেন প্রথম আট ওভারেই। ডুসেনের সাথে মিলে কাপ্তান বাভুমা মিলে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যান। পাওয়ারপ্লেতে ৩৩ রান আনা দক্ষিণ আফ্রিকা ১০ ওভারে আর কোন উইকেট না হারিয়ে তুলে ফেলে ৫৫ রান। বাকি থাকা ৩০ রানও তারা নিয়ে ফেলে আরও ৩.৩ ওভারে। ডুসেন ২২ রানে ফেরা পর মিলার এসেছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে শেষ দেখায় করেছিলেন সেঞ্চুরি, এবার তার করার মতো কিছু ছিল না। উইনিং রানটা চার মেরে এনে দিলে দক্ষিণ আফ্রিকা জিতে যায় ৩৯ বল হাতে রেখেই।

    তার আগে টসে হেরে ব্যাট করতে বাধ্য বাংলাদেশ শুরুটা করেছিলো ভালৈই। বলপ্রতি রানে নাঈম-লিটন এগুচ্ছিলেন। কোনও উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ চার ওভার শেষ করতেই যাচ্ছিলো! রাবাদা শেষ দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে নিলেন। এই প্রথম ২২ বলে উইকেট না দেওয়াটার বিশেষ কোন তাৎপর্য অন্য কোন সাধারণ দিনে না থাকলেও এদিন বাংলাদেশের পরবর্তী দশাই যে তা গুরুত্বপূর্ণ করেই তুলেছে। 

    মিড উইকেটে নাঈম ধরা খেয়ে ৯ রানে ফেরার পর রাবাদার লেট সুইং করা প্রায় ইয়র্কারে সৌম্য এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান প্রথম বলেই। আম্পায়ার আউট দেননি, পরে দক্ষিণ আফ্রিকা রিভিউ নিলে দেখা যায় প্রথমে বল প্যাডে গিয়েই পরে লাগে ব্যাটে। সৌম্যের মতো রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মুশফিকও। দক্ষিণ আফ্রিকার তৈরি ফাঁদে পা দিয়েছেন স্বেচ্ছায়ই, রাবাদার বাউন্সারে থার্ড ম্যান দিয়ে সিঙ্গেলের চেষ্টায় গালিতে থাকা হেনড্রিক্সের হাতে দিয়ে দেন ক্যাচ। আরেক বাউন্সারে মাহমুদউল্লাকেও হারায় বাংলাদেশ। নরখিয়ার বাউন্সারে মাহমুদউল্লাহর গ্লাভস ছুঁয়ে কাঁধে লেগে বল চলে যায় মারক্রামের হাতে। ৯ বলে ৩ রানে অধিনায়কের ফেরার পর নামেন আফিফ। নেমেই প্রথম বলেই ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে খেলতে যান, প্রিটোরিয়াসের বল তার পায়ে লেগে ভেঙ্গে দিয়ে যায় তার স্টাম্প। 

    বিশ্বকাপের মঞ্চে শামিমের প্রথম ম্যাচ। এ ম্যাচে তিনি যখন নামছেন ব্যাটিংয়ে, ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদের মহাসাগরে তার দল। লিটনকে কিছুটা সময় তিনি সঙ্গ দিলে বাংলাদেশের ১০ ওভারে স্কোর হয় ৪০/৫। তখন বাংলাদেশের ইনিংসের অর্ধেক বল খেলে বাংলাদেশের সংগ্রহের অর্ধেক রানও লিটনের। লিটনও এরপর ৩৬ বলে ২৪ রানে শামসির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে গেলে মাহেদী আসেন বোলারদের অন্তত কিছুটা সময় বল করে যাওয়ার মতো রান দিতে। এসেই লেটকাটে মারেন একট বাউন্ডারি, ৫৫ বল পর বাংলাদেশ তৃতীয় বাউন্ডারির দেখা পায় ১৩তম ওভারে। শামিম তাকে ছেড়ে ১১ রানে এরপর ফিরে গেলেও মাহেদী আরও কয়েকটা বাউন্ডারি মারতে সক্ষম হয়েছেন। শামসিকে ইনসাইড আউটে মেরেছেন ইনিংসের একমাত্র ছয়। শেষমেশ তিনিও ২৫ বলে ২৭ রানে ফিরে গেলে বাংলাদেশ বাকি উইকেটও হারিয়ে ফেলে ১৮.২ ওভারেই, তাতে সংগ্রহ ৮৫।