• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১
  • " />

     

    রোহিত-রাহুলে আফগানদের উড়িয়ে অবশেষে জয়ের দেখা পেল ভারত

    রোহিত-রাহুলে আফগানদের উড়িয়ে অবশেষে জয়ের দেখা পেল ভারত    

    সুপার ১২, আবু ধাবি (টস- আফগানিস্তান/ বোলিং)

    ভারত ২১০/২, ২০ ওভার (রোহিত ৭৪, রাহুল ৬৯, হার্দিক ৩৫*, জানাত ১/৭, নাইব ১/৩৯)

    আফগানিস্তান ১৪৪/৫, ২০ ওভার (জানাত ৪২*, নবী ৩৫, গুরবাজ ১৯, শামি ৩/৩২, আশ্বিন ২/১৪, জাদেজা ১/১৯)

    ফলাফল: ভারত ৬৬ রানে জয়ী


    সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের কোনও বিকল্প ছিল না ভারতের; সেই চাপ মাথায় নিয়ে আফগানিস্তানকে রীতিমত উড়িয়ে দিল তারা। আরও একদিন টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামতে হলে রোহিত শর্মা-লোকেশ রাহুলের ১৪০ রানের ওপেনিং জুটির পর হার্দিক পান্ডিয়া-ঋশাভ পান্ট ঝড়ে এবারের আসরের সর্বোচ্চ ২১০ রান তোলে ভারত। ৪ বছর পরে দলে প্রত্যাবর্তনের দিনে রবিচন্দ্রন আশ্বিনের দুর্দান্ত স্পেলের পাশপাশি বোলিং ইউনিটের সম্মিলিত পারফর্ম্যান্সে ভারত তাতেই পেয়ে যায় ৬৬ রানের জয়।  প্রথমে ব্যাট করে ২০০+ রান করে কখনও না হারার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রেখে সেমিফাইনালের স্বপ্নও বাঁচিয়ে রাখে কোহলি-বাহিনী। 

    টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ আফগানিস্তানের দখলে থাকলেও এর আগে কখনও ২০০+ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেনি আফগানিস্তান। সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে আফগানিস্তানকে তাই করতে হত বিশেষ কিছুই। তবে তিন ওভারের মধ্যেই দুই পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ শামির আঘাতে দুই ওপেনার হজরতউল্লাহ জাযাই ও মোহাম্মদ শাহজাদ ফিরলে বিপাকে পড়ে আফগানিস্তান। ৫ম ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও গুলবদিন নাইব মিলে শামিকে দুই ছয় দুই চার মেরে ২১ রান তোলে; পাওয়ারপ্লে শেষে তাই তারা তুলতে পারে ৪৭ রান। 

    পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে রবীন্দ্র জাদেজা আক্রমণে এসেই অবশ্য থামান গুরবাজকে। এর কিছুক্ষণ পরেই রবিচন্দ্রন আশ্বিনের শিকার হয়ে ফিরে যান নাইবও। নিজের পরের ওভারে আশ্বিন এরপর ফেরান নাজিবুল্লাহ জাদরানকে। ১৫৭৭ দিন পর ভারতের জার্সি গায়ে টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে পূর্ণ করেন অসাধারনণ এক স্পেল: ৪-০-১৪-২! 

    ম্যাচে হার অনিবার্য হয়ে গেলেও রানরেটের কথা মাথায় রেখে মোহাম্মদ নবী-করিম জানাত জুটি এগিয়ে যাচ্ছিলেন। শামির ১৯তম ওভারে ৩৫ রান করে নবী ফিরলে ভাঙে ৫৭ রানের জুটি। পরের বলেই জাদেজার দুর্দান্ত ক্যাচে জানাতকে আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউতে দেখা যায় বল মাটি স্পর্শ করেছিল। জানাত বেঁচে গেলেও তার পরের বলেই উইকেটে এসেই ফিরে যান রশিদ খান। জানাত ২২ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকলেও দোর্দণ্ড প্রতাপেই এবারের আসরে নিজেদের জয়ের খাতা খোলে ভারত।  

    ভিরাট কোহলির টস-ভাগ্যে এদিনও আসেনি কোনও পরিবর্তন। তবে টসে হারাটা এদিন শাপেবর হয়েই এসেছিল ভারতের জন্য। ব্যাটিংয়ে নেমে রোহিত শর্মা-লোকেশ রাহুল জুটির শুরুটা হয় দারুণ। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে ১ রান তুলতে পারলেও এই জুটির বদৌলতে ভারতের স্কোরবোর্ডে ততক্ষণে উঠে গিয়েছিলো ৫৩ রান। 

    পাওয়ারপ্লের পর দুজনেই অবশ্য রয়েসয়ে খেলেন। ১২তম ওভারে গিয়ে চার মেরে নিজের ২৩তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফিফটি পূর্ণ করেন রোহিত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১০ ইনিংস পরে ফিফটির দেখা পান তিনি, শেষ ফিফটি করেছিলেন ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে। নাভিন-উল-হকের ঐ ওভারে দুই চার এক ছয়ে ১৬ রান নিয়ে দুজনেই গিয়ার পাল্টানোর ইঙ্গিত দেন, পূর্ণ করেন জুটির সেঞ্চুরি। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ নম্বর সেঞ্চুরি জুটি পূর্ণ করেন তারা। পরের ওভারে ৩৫ বলে নিজের ফিফটিও পেয়ে যান রাহুল। উড়তে থাকা জুটি অবশেষে থামে মোহাম্মদ নবীর আঘাতে, ১৪০ রানে। ৪৭ বলে ৭৪ রান করে রোহিত ফেরার এক ওভারে পরেই গুলবদিন নাইবের স্লো ইয়র্কারে স্টাম্প খুইয়ে তার পথ দেখেন রাহুলও; এর আগে করেন ৪৮ বলে ৬৯ রান। 

    উইকেটে এসেই রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন হার্দিক পান্ডিয়া ও ঋশাভ পান্ট। শেষ তিন ওভারে আফগান বোলারদের তুলোধোনা করে মাত্র ২১ বলে ৬৩ রান করে অবিচ্ছিন্ন থাকে এই জুটি। হার্দিকের ১৩ বলে ৩৫* আর ঋশাভ পান্টের ১৩ বলে ২৭* রানের ঝড়ে ভারত তাই পেয়ে যায় এই আসরের সর্বোচ্চ ২১০ রানের সংগ্রহ। ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে অবশ্য সেই লক্ষ্যের ধারেকাছেও আসতে পারেনি আফগানিস্তান।