অস্ট্রেলিয়া-দুঃস্বপ্নে বিশ্বকাপ হরর শো শেষ হলো বাংলাদেশের
সুপার ১২, দুবাই (টস- অস্ট্রেলিয়া/ বোলিং)
বাংলাদেশ ৭৩, ১৫ ওভার (শামীম ১৯, নাঈম ১৭, মাহমুদউল্লাহ ১৬, জাম্পা ৫/১৯, হেজলউড ২/৮, স্টার্ক ২/২১)
অস্ট্রেলিয়া ৭৮/২, ৬.২ ওভার ( ফিঞ্চ ৪০, ওয়ার্নার ১৮, মার্শ ১৬*, শরিফুল ১/৯, তাসকিন ১/৩৬)
ফলাফল: অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে জয়ী
আরও একটা ম্যাচ। আবারও বাংলাদেশের গুটিয়ে যাওয়া। এবার ৭৩ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ, বাজে থেকে পারফরম্যান্স হয়েছে জঘন্য। ৫ উইকেট পেয়ে অ্যাডাম জ্যাম্পা তাতে রেখেছেন বড় অবদান। পরে অ্যারন ফিঞ্চের ৪০ রানের ঝড়ে ৮২ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটের জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। দুঃস্বপ্নময় বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শেষটাও হল ভৌতিক কোনও গল্পের সবচেয়ে রোমহর্ষক অধ্যায়ের মতই।
৭৪ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়ায় অস্ট্রেলিয়া যে রানরেটের জন্য তড়িঘড়ি করেই ম্যাচ শেষ করতে চাইবে তা অনুমিতই ছিল। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ নিজেই সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন, সাথে কম যাননি ডেভিড ওয়ার্নারও। মোস্তাফিজুর রহমানের করা ৪র্থ ওভারে দুজন মিলে তিন চার এক ছয়ে নেন ২১ রান। তাসকিন আহমেদের পরের ওভারে টানা দুই ছয়ে ফিফটির কাছে গিয়েও ফিঞ্চ থামেন ঐ ওভারেই। স্টাম্প খুইয়ে ফেরার আগে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক করেন ২০ বলে ৪০ রান। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে স্টাম্প খুইয়ে ওয়ার্নারও ফেরেনে; স্কোরবোর্ডে অবশ্য ততক্ষণে উঠে গিয়েছে ৬৭ রান। পাওয়ারপ্লের পরের ওভারে চার-ছয়ে ম্যাচ শেষ করে রানরেট ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সারেন মিচেল মার্শ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। মিচেল স্টার্কের বল স্টাম্পে ডেকে এনে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন লিটন দাস। পরের ওভারে প্রায় একই ভঙ্গিমায় জশ হেজলউডকে উইকেট দিয়ে ফিরে যান সৌম্য সরকার। পরের ওভারে আক্রমণে এসে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান মুশফিকুর রহিমকে। প্রতি ওভারেই একজন মাথা নিচু করে প্যাভিলিয়নের পথ দেখার ধারায় এরপর ছেদ পড়লেও দৃশ্যপটে আসেনি কোনও বড়সড় পরিবর্তন। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে উইকেটে কালজ্ঞাপন শেষে হেজলউডের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১৭ রানে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈম। পাওয়ারপ্লেতেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বাংলাদেশ তাই তুলতে পারে ৩৩ রান।
পাওয়ারপ্লের ঠিক পরের বলেই অ্যাডাম জাম্পার করা প্রথম বলে শূন্য হাতে ফিরে যান আফিফ হোসেন। শামীম হোসেন পাটওয়ারিকে নিয়ে এরপর ক্ষুদ্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে অসহায় আত্মসমর্পণের দিনে সেই প্রতিরোধও টেকে মোটে চার ওভার। আক্রমণাত্মক কয়েকটি শট খেলার পর জাম্পার কাছে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শামীম ফেরার পরের বলে এসেই ফিরে যান মাহেদী হাসান। এক ওভার পরের স্টার্কের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১৬ রানে মাহমুদউল্লাহও ফিরে গেলে ইনিংস শেষ হওয়াটা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। সেই আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণ করেই জাম্পার শিকার হয়ে ফিরে আসেন মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম। জাম্পার ৫-উইকেটে তাসের ঘরের মত লুটিয়ে পড়া বাংলাদেশ তাই করতে পারে মোটে ৭৩ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ইতিহাসে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সংগ্রহকে ছেলেখেলা বানিয়ে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ শেষ করে ফেলে ৬.২ ওভারেই!