• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১
  • " />

     

    স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে রান রেটের দৌড়েও এগিয়ে গেল ভারত

    স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে রান রেটের দৌড়েও এগিয়ে গেল ভারত    

    সুপার ১২, দুবাই (টস-ভারত/ বোলিং)

    স্কটল্যান্ড ৮৫/১০, ১৭.৪ ওভার (মানসি ২৪, শামি ৩/১৫, জাদেজা ৩/১৫, বুমরাহ ২/১০)

    ভারত ৮৯/২, ৬.৩ ওভার (রাহুল ৫০, রোহিত ৩০, ওয়াট ১/২৭)

    ফলাফলঃ ভারত ৮ উইকেটে জয়ী


    জন্মদিনে বিরাট কোহলিকে কোন উপহার দেওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি নিশ্চিত এমন একটা জয়ের কথাই বলতেন। স্কটল্যান্ডের সাথে ভারত জয় পেয়েছে ৮১ বল হাতে রেখে। সেই জয়ে ভারত যেমন দুই পয়েন্ট পাওয়া নিশ্চিত করেছে তেমনই তাদের রান রেট বেড়ে এখন আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বেশি। বুমরাহ-জাদেজা-শামিদের বোলিংয়ে স্কটল্যান্ড ৮৫ রানেই আটকে গিয়েছিল। ভারতের জন্য লক্ষ্যতাড়ার হিসেব ছিল সহজ- যত দ্রুত হবে তত ভালো!ব

    ৭.১ ওভারে লক্ষ্য পেরিয়ে গেলে আফগানিস্তান, আর ৮.৫ ওভারে তা করলে নিউজিল্যান্ডের রান রেট ছাড়িয়ে যেত ভারত। রোহিত ও রাহুল শুরুটা করেন কিছুটা দেখেশুনে। এরপর দুবাইয়ে নেমে আসে  বাউন্ডারি বৃষ্টি! ওয়াটের প্রথম ওভারে ৮ রানের পর উইল, ইভান্স, শরিফ কেউ ১৫ রানের কমে ওভার শেষ করতে পারেননি। চতুর্থ ওভারেই ভারত পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যায়। অবশ্য তা করতে ভারতীয় ব্যাটারদের স্লগিংয়ের প্রয়োজন পড়েনি। দৃষ্টিনন্দন ক্লাসিকাল শটেই চার-ছক্কার উৎসব হয়েছে। সে উৎসবে বেশিক্ষণ যদিও থাকতে পারেননি রোহিত। পঞ্চম ওভারে উইলের করা ইয়র্কারে এলবিডব্লিউ হয়ে ১৬ বলে ৩০ রানে ফিরে গেছেন। এর আগে উইল ১৪ রান দেওয়ায় ততক্ষণে সত্তোরে পৌছে গেছে ভারত। ওয়াটকে পরের ওভারে চার-ছয় মারার পর সিঙ্গেল নিয়ে ১৮ বলেই রাহুল পূর্ণ করে ফেলেন ফিফটি। দ্রুত শেষ করতে গিয়ে লংঅনে ধরা খেয়ে গেলে তার রানটা আর বাড়েনি। তবে সূর্যকুমার সময় নেননি, ছয় মেরেই শেষ করে দিয়েছেন ম্যাচ। ৬.৩ ওভারেই ভারত জিতে নিয়েছে ম্যাচ। যার মানে, আফগানিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের রান রেট ছাড়িয়েই গেছে ভারত।

    বুমরাহর বলে কব্জির মোচড়ে স্কোয়ার লেগ দিয়ে ‘দেখার মতো’ এক ছয় মেরেছিলেন মানসি। এরপর আশ্বিনের ওভারে পরপর তিন বলে মেরেছেন তিন চার। তবে তার আগেই হারিয়ে ফেলেছিলেন ওপেনিং পার্টনার কোটজারকে। বুমরাহর স্লোয়ারে ক্রিজে আটকে থেকে ব্যাট চালিয়েছিলেন স্কটিশ কাপ্তান, ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে এসেছে স্টাম্পে। এরপর শামির এক হাফ ভলিতে ইনফিল্ড ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান মানসিও। দুই ওপেনার যে দুই ওভারে ফিরেছেন, দুটি ওভারই মেডেন হয়েছে। এক পাওয়ারপ্লেতেই দেখা মিলেছে দুটি উইকেট মেডেন ওভারের। পাওয়ারপ্লেতে স্কটল্যান্ডের ২৭ রানের ২৪টিই আসে মানসির ব্যাট থেকে। আশ্বিনের বলে রিভার্স সুইপে তৃতীয় ওভারে তার মারা চারের পর আরেকটি বাউন্ডারির মার দেখতে স্কটিশদের অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ৩৮ বল। সেই ৩৮ বলে ঘটে গেছে অনেক কিছুই! 

    আসলে ঘটেছে এক ওভারেই! পাওয়ারপ্লে শেষে জাদেজা এক ওভারেই এসে ফিরিয়ে দেন দুজনকে। প্রথমে জাদেজার বল হালকা টার্ন করে বেরিংটনের ব্যাটের পাশ দিয়ে গিয়ে ভেঙ্গে দেয় স্টাম্প। পরে ক্রস সুইপ খেলতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন এলবিডব্লিউর। টিকে থাকাটাই স্কটিশদের মুল লক্ষ্য হয়ে গিয়েছিল তখন। তবে লিস্ক কিছুটা সময় নিয়ে আক্রমণের পথই বেছে নিয়েছেন। সেই ৩৮ বল পরের বাউন্ডারিটা এসেছিলো তারই ব্যাট থেকে। সুইপে বরুনকে চার মারার চার বল পরে মানসির সেই প্রথম ‘দেখার মতো’ ছয়ের পর মেরেছেন স্কটিশদের দ্বিতীয় ছক্কাও। শামির বাউন্সারে ছয় মারার পরের বলেই মিড অফ দিয়ে মেরেছেন আরেকটি চার। তবে ১২ বলে ২১ রানে তাকেও থামতে হয়েছে জাদেজার বলে সুইপ খেলতে গিয়ে বল মিস করে আম্পায়ারের আঙ্গুল তুলার দৃশ্য দেখে!

    ৫৮ রানে পাঁচ উইকেট হারায় যখন স্কটল্যান্ড, তখনও এক পাশে ম্যাকলয়েড ছিলেন ১৬ বলে ৯ রানে। এরপর ২৮ বলে ১৬ রানে তিনি শামির ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরার আগে তাকে দেখতে হয়েছে আরও একজনের ফেরা। গ্রিভস এসে কয়েকটি বল ঠেকিয়েছেন, এরপর আর ভালো লাগেনি তার! আশ্বিনের ক্যারম বলে ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা খেয়ে গেছেন ৭ বলে ১ রানে। ম্যাকলয়েডকে শামি ফেরানোর পরে আরেকটি বোল্ডে ইভান্সকেও ফিরিয়ে দেন তিনি। মাঝখানে শরিফ রান আউট হয়ে গেলে স্কটল্যান্ডের বাকি থাকে আর একটি উইকেট! আর ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হতে হলে বুমরাহরও প্রয়োজন ছিল একটি উইকেট। মার্ক ওয়াটকে বোল্ড করে বুমরাহ এ ম্যাচে তা করেই নিলেন। যে ম্যাচটা দাপটের সাথে ভারত জিতে নিয়ে অধিনায়ক কোহলির জন্মদিনের উদযাপনের মাত্রাটাই বাড়িয়ে দিলো আরও!