• টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১
  • " />

     

    নিজেদের কাজটা সেরে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতকেও বাড়ি পাঠিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড

    নিজেদের কাজটা সেরে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতকেও বাড়ি পাঠিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড    

    সুপার ১২, আবু ধাবি (টস- আফগানিস্তান/ ব্যাটিং)

    আফগানিস্তান ১২৪/৮, ২০ ওভার (নাজিবুল্লাহ ৭৩, নাইব ১৫, নবী ১৪, বোল্ট ৩/১৭, সাউদি ২/২৪, সোধি ১/১৩)

    নিউজিল্যান্ড ১২৫/২, ১৮.১ ওভার (উইলিয়ামসন ৪০*, কনওয়ে ৩৬*, গাপটিল ২৮, রশিদ ১/২৭, মুজিব ১/৩১)

    ফলাফল: নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী 


    সেমিফাইনালের ত্রিমুখী লড়াইয়ের সবটুকুই নির্ভর করছিল এই ম্যাচের ওপরেই। নিউজিল্যান্ডের সমীকরণটা অবশ্য ছিল সোজাসাপ্টা: জিতো, সেমিফাইনালে যাও। অন্য কারও ওপরে ছেড়ে না দিয়ে নিজেদের কাজটা নিজেরাই সেরে আফগানিস্তাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ঠিক সেটাই করল কেন উইলিয়ামসনের দল। ট্রেন্ট বোল্ট-টিম সাউদি-অ্যাডাম মিলনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নাজিবুল্লাহ জাদরানের লড়াকু ৭৩ রান সত্ত্বেও মাত্র ১২৪ রানে আফগানদের বেঁধে ফেলে কিউইরা। কেন উইলিয়ামসন-ডেভন কনওয়ের ৬৮* রানের জুটিতে অনায়াসে সেই লক্ষ্যতাড়া করে সেমিফাইনালে পা রাখে তারা; সেই সাথে আফগানদের পাশাপাশি ভারতেরও বিদায়ঘন্টা বাজিয়ে দেয়। 

    সেমি ফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে জয়ের পাশাপাশি রান রেটটাও নিয়ে যেতে হত ভারতের ওপরে; আফগানিস্তানকে তাই নিউজিল্যান্ডকে বেঁধে ফেলতে হত ৮১ রানে। তবে জয় ছাড়া অন্য কিছুই না ভাবা নিউজিল্যান্ড সেসব সমিকরনের তোয়াক্কা না করে দারুণ শুরু করেন। ড্যারিল মিচেল-মার্টিন গাপটিল জুটি দারুণ শুরু করলেও এদিন একাদশে ফেরা মুজিব উর রহমানের আঘাতে ১৭ রান করে থামেন মিচেল। তা সত্ত্বেও পাওয়ারপ্লেতেই ৪৫ রান তুলে ফেলে নিউজিল্যান্ড। 

    পাওয়ারপ্লের পরে নিজের দ্বিতীয় ওভারে মার্টিন গাপটিলকে ২৮ রান ফিরিয়ে ৪০০ টি-টোয়েন্টি উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন রশিদ খান, যেখানে তার অভিষেকের পর অন্য আর কোনও বোলার ৩০০ উইকেটেরই দেখা পাননি! অনন্যসাধারণ এই অর্জন অবশ্য ম্লান হয়ে যায় কেন উইলিয়ামসন ও ডেভন কনওয়ের সুস্থির ব্যাটিংয়ে। ১৪তম ওভারে মোহাম্মদ নবীকে চার মেরে দলীয় ৮৪ রান পূর্ণ করেন কনওয়ে, ভেস্তে দেন আফগানদের সেমি ফাইনাল স্বপ্ন। কোনও রকম তাড়াহুড়া না করে এই জুটি অবিচ্ছিন্ন থেকে এরপর সহজেই দলকে পৌঁছে দেয় জয়ের বন্দরে, কেটে ফেলে সেমিফাইনালের টিকেট। 

    সেমি ফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় মোহাম্মদ নবী। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত হিতে বিপরিত হয়ে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে আফগানিস্তান। অ্যাডাম মিলনের আঘাতে মোহাম্মদ শাহজাদ ফিরলে তার পরের ওভারেই ট্রেন্ট বোল্টের আঘাতে ফেরেন আরেক ওপেনার হযরতউল্লাহ জাযাই। বিপদ আরও বাড়িয়ে টিম সাউদির শিকার হয়ে পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে রহমানউল্লাহ গুরবাজও ফিরলে পাওয়ারপ্লেতে মোটে ২৩ রান তোলে আফগানিস্তান। 

    গুলবদিন নাইবকে নিয়ে এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। কিন্তু আক্রমণে এসেই তাতে বাঁধ সাধেন ইশ সোধি, ফেরান নাইবকে। উইকেটে আসা মোহাম্মদ নবীকে নিয়ে এরপর ইনিংস মেরামতের কাজ করেন নাজিবুল্লাহ। মিচেল স্যান্টনারের করা ১৪তম ওভারে দুই ছয়ে তোলেন ১৯ রান, গিয়ার পাল্টানোর চেষ্টা করেন সেখান থেকেই। পরের ওভারে ৩৩ বলে নিজের এবারের আসরের ২য় ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। অন্য প্রান্তে অবশ্য নবী একেবারেই সুবিধা করতে পারছিলেন না। সাউদিকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সেই চাপেই ১৮তম ওভারে ফিরে যান তিনি।

    নবী ফেরার পরে রানের চাকা সচল রাখার দায়িত্ব পুরোপুরি নাজিবুল্লাহর কাঁধে বর্তালে পরের ওভারে থামেন তিনি। বোল্টকে উড়িয়ে মারতে গেলে জিমি নিশামের দারুণ ক্যাচে ৪৮ বলে ৭৩ রান করেই থামতে হয় তাকে। এক বল পরেই করিম জানাতকেও ফেরান বোল্ট। শেষ ওভারে এসে রশিদ খান চড়াও হওয়ার চেষ্টা করলে ড্যারিল মিচেলের অসাধারণ প্রচেষ্টায় ছয় পাননি। বরং শেষ বলে নিশামের শিকার হয়ে ফিরেছেন তিনি। আফগানিস্তান তাই পায় ১২৪ রানের পুঁজি। দিনশেষে অবশ্য সেই পুঁজিকে মামুলি বানিয়ে আফগানিস্তানের পাশাপাশি ভারতেরও স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড।