• লা লিগা
  • " />

     

    পেদ্রি-জাদুতে সেভিয়াকে টপকে দুইয়ে বার্সা

    পেদ্রি-জাদুতে সেভিয়াকে টপকে দুইয়ে বার্সা    

    বার্সেলোনা ১:০ সেভিয়া 


    ম্যাচের আগে বার্সেলোনা ম্যানেজার জাভি হার্নান্দেজ বলেছিলেন, এই ম্যাচ তার জন্য ফাইনালের মতো। তার শিষ্যরাও এই ম্যাচকে দিয়েছে ফাইনালের মতো গুরুত্বই। যে কারণে পেদ্রিদের উদ্যমী পারফরম্যান্সে সেভিয়াকে হারাতে সক্ষম হয়েছে বার্সা। আর এই জয়ে সেভিয়াকে টপকে বছরে প্রথমবারের মতো টেবিলের দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে কাতালান ক্লাবটি। 

    ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচের প্রথম মিনিটেই চোট পায় বার্সা অধিনায়ক সার্জিও বুস্কেটস। তবে এতে ছন্দপতন হয়নি বার্সার। বুস্কেটস যেমন কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরে আসেন মাঠে, তেমনি বার্সাও ফিরিয়ে আনে ইন্টারন্যাশনাল ব্রেক-পূর্ব রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষের ছন্দ। তবে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে গেলেও গোলমুখে পরিষ্কার কোনো শট নিতে পারছিল না বার্সার অ্যাটাকাররা। 

    প্রথমার্ধে ডেম্বেলে বেশ কয়েকটি জুতসই ক্রস ঢুকালেও বক্সের ভেতর জায়গামতো ছিল না কেউই। ফেরান তোরেস দুটি বাঁকানো শট নিলেও কোনোটিই সেভিয়া গোলরক্ষক ইয়াসিন বনোকে ভোগায়নি। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ৬৩তম মিনিটে ডেম্বেলের করা একটি ক্রস থেকে প্রায় গোলই দিয়ে বসেছিলেন তোরেস। তার ফার্স্ট টাচ শট বনো ঝাঁপিয়ে পড়ে সেভ না করলে তখনই এগিয়ে যেত বার্সা।

    তার পাঁচ মিনিটের মধ্যে আরেকটি আক্রমণ করে বার্সা। এবার আক্রমণে পিকে। তার ডিফ্লেক্টেড শট ফেরাতে বেশ বেগ পেতে হয় বনোর। এই শট থেকে হওয়া কর্নারে আবার হেড দেন পিকেই। কিন্তু বারে লেগে ফিরে আসে বল। 

    দু দুটি বড় সুযোগের পর অবশেষে ডেডলক ভাঙে বার্সা। ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে সেভিয়ার বক্সের সামনে বল পান পেদ্রি। শট দেবার ভান করে দুই ডিফেন্ডারকে ভূপাতিত করেন তিনি। এরপর একটু ডানে সরে এসে শট নেন গোলের বাম কোণ বরাবর। বল পায়ে তার আত্মবিশ্বাস ন্যু ক্যাম্পকে যেন মনে করিয়ে দেয় একজন আর্জেন্টাইন জাদুকরের কথা। 

    জালের নীচদিকের ডান কোণে বল ছোঁয়া মাত্রই উল্লাসে ফেটে পড়ে বার্সা। নজর কাড়ে জাভির আগ্রাসী উদযাপনও। এই ম্যাচকে যে ফাইনাল হিসেবেই নিয়েছিলেন তিনি, সেটি ফুটে উঠে উদযাপনে। 

    ইনজুরিতে জর্জরিত সেভিয়া এদিন তাদের সেরা খেলাটা উপহার দিতে না পারলেও পুরো সময়ই ম্যাচে ছিল তারা। দুই উইং দিয়ে বেশ কয়েকটি বলার মতো কাউন্টার অ্যাটাক করে মাঝেমধ্যেই বার্সা ক্যাম্পে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছিলেন ওকাম্পস-লামেলারা। যোগ করা সময়ে প্রায় সমতা ফিরিয়েই ফেলেছিল জুলেন লুপেতেগির দল। 

    ৯২তম মিনিটে টার স্টেগানের একটি দুর্বল পাঞ্চ থেকে বল চলে যায় সেভিয়ার বদলি খেলোয়াড় লুডউইগ অগুস্তিনসনের পায়ে। তবে এই ডিফেন্ডারের ফিরতি শট সাহসিকতার সঙ্গেই ফেরাতে সক্ষম হন স্টেগান। যার সাথে সাথে নিশ্চিত হয় বার্সার তিন পয়েন্ট।  

    মৌসুমের শুরুর দিকে এই দুই দলের মাঝে ব্যবধান ছিল অনেক। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ শিরোপার দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়ার পর শীর্ষে থাকা রিয়ালের নাগালের মধ্যে ছিল শুধু সেভিয়াই। আর অপরদিকে মেসি-পরবর্তী বার্সা মাঠে ও মাঠের বাইরে টালমাটাল অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল। 

    তবে জাভি দায়িত্ব নেওয়ার পর আবারও পরিচিত চেহারায় ফিরতে শুরু করে ব্লাগুরানারা। বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদকে ধবল-ধোলাই করার মাধ্যমে পেদ্রিরা বিশ্বকে দেখিয়ে দেয় এই কয়েক মাসেই কেমন উন্নতি করেছে দলটি। এখন কোনো শিরোপার লড়াইয়ে নেই বার্সা। তবে পর পর দুই ম্যাচে দুই স্প্যানিশ পরাশক্তিকে (রিয়াল ও সেভিয়া) হারিয়ে যেন ফুটবল বিশ্বকে একটি বার্তাই দিতে চাচ্ছে ১৪ ম্যাচ ধরে অপরাজিত থাকা জাভির বার্সা- আসছে মৌসুমেও কাউকে ছাড় দিয়ে খেলবে না তারা।