ফাইনালের মহড়ায় শক্ত সতর্কবার্তা দিয়ে রাখল শ্রীলঙ্কা
এশিয়া কাপ, সুপার ফোর, দুবাই (টস-শ্রীলঙ্কা/বোলিং)
পাকিস্তান-১২১, ১৯.২ ওভার (বাবর ৩০, নাওয়াজ ২৬, ইফতিখার ১৩, হাসারাঙ্গা ৩/২১, থিকশানা ২/২১, মাদুশান ২/২১)
শ্রীলঙ্কা-১২৪/৫, ১৭ ওভার (নিসাঙ্কা ৫৫*, রাজাপাকসা ২৪, শানাকা ২১, হারিস ২/১৯, হাসনাইন ২/২১, কাদির ১/৩৪)
ফলাফল: শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে জয়ী
ফাইনালের প্রিকুয়েলে পাকিস্তানের বিপক্ষে সহজ জয় দিয়ে বার্তা দিয়ে রাখল শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ জয়কেই লক্ষ্য বানানো শ্রীলঙ্কা যে এশিয়া কাপে জয় ছাড়া কিছু ভাবছে না তা বলার অপেক্ষা রাখে না, যার প্রমাণ মিলল পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে ৫ উইকেটের জয়ে। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও মাহিশ থিকশানার স্পিন জুটির সাথে অভিষিক্ত প্রমোদ মাদুশানের তোপে দাঁড়াতেই পারেনি পাকিস্তান। পাথুম নিসাঙ্কার অনবদ্য ফিফটিতে তিন ওভার হাতে রেখেই সেই লক্ষ্য পেরিয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
১২২ রানের লক্ষ্যে ম্যাচটা অবশ্য যেতে পারত পাকিস্তানের দিকে। শ্রীলঙ্কা ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই যে রানের খাতা খোলার আগে কুসাল মেন্ডিসকে ফিরিয়েছিলেন মোহাম্মদ হাসনাইন। পরের ওভারে হারিস রউফের কাছে দানুশকা গুনাতিলাকার একই পরিণতি হলে বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা। একবার আধা সুযোগ দিয়ে বেঁচে গেলেও ৫ম ওভারে হারিসের দ্বিতীয় শিকার হয়ে এবারের আসরে প্রথম নামা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ফিরে গেলে পাওয়ারপ্লেতে শ্রীলঙ্কা তুলতে পারে ৩৭ রান।
ভানুকা রাজাপাকসাকে নিয়ে সেখান থেকে দলের হাল ধরেন নিসাঙ্কা। দুজন মিলে উসমান কাদিরকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করতে থাকেন। ১২তম ওভারে কাদিরকে ছয়ে নিসাঙ্কা স্বাগত জানানোর পর রাজাপাকসাও স্লগ সুইপ করতে গেলে ভাঙে ৫১ রানের জুটি। অবশ্য ১৯ বলে ২৪ রানের ইনিংসে কাজটা অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছিলেন রাজাপাকসা। ৪১ বলে নিসাঙ্কা এরপর পূর্ণ করেন নিজের টানা দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের ৭ম ফিফটি। অন্য প্রান্তে সুযোগ বুঝে অধিনায়ক দাসুন শানাকা আক্রমণ করতে থাকেন; দলকে জয়ের বন্দরে রেখে অবশ্য তিনিও ফেরেন ১৬ বলে ২১ রান করে হাসনাইনের শিকার হয়ে। উইকেটে এসে ওই ওভারেই দুই চারে এরপর খেলার ইতি টানেন হাসারাঙ্গা।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানের এবারের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪র্থ ওভারেই ফিরেছিলেন মাদুশানের ক্যারিয়ারের প্রথম শিকার হয়ে। পাওয়ারপ্লেতে আর কোনও বিপদ ঘটতে না দিয়ে এরপর বাবর আজম ও ফাখার জামান দলকে ৪৯ রানে নিয়ে গিয়ে মনমতই আগাচ্ছিলেন।
চামিকা করুনারত্নের শিকার হয়ে ১০ম ওভারে ফাখার জামান ফেরার পরের ওভারেই হাসারাঙ্গাকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্প খুইয়ে ৩০ রানে ফেরেন বাবর। দুর্বিষহ এক এশিয়া কাপ কাটানো বাবর ফেরানোর পরপরই পাকিস্তানের মিডল অর্ডারের পরীক্ষা নেওয়ার মোক্ষম সুযোগ তৈরি ফেলেন হাসারাঙ্গা। আর সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাটা নিয়ে তিনিই হয়ে দাঁড়ান পাকিস্তানের কাল। ১৪তম ওভারে ধনঞ্জয়ার শিকার হয়ে খুশদিল ফিরলে পরের ওভারে নিজের স্পেল শেষ করতে এসে হাসারাঙ্গা হানেন জোড়া আঘাত; ফেরান ইফতিখার আহমেদ ও আসিফ আলীকে। দুর্দান্ত এক স্পেলের পরিক্রমায় এরপর সেই সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করে হাসারাঙ্গার স্পিন সতীর্থ থিকশানা ফেরান হাসান আলী ও কাদিরকে। মাঝে লড়াই করে যাওয়া মোহাম্মদ নাওয়াজ ১৯ বলে ২৬ রানে রান আউটের শিকার হয়ে ফেরার পর মাদুশাঙ্কা ও মাদুশান মিলে পাকিস্তানের শেষ দুই উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে ১২১ রানে গুটিয়ে ফেললে এরপর আর সেই পুঁজি নিয়ে লড়াই বৈ তেমন কিছু করতে পারেনি পাকিস্তান।