ছন্দময়, ক্ষিপ্র, খুনে ফুটবলে নিজেদের আগমনবার্তা জানান দিল ব্রাজিল
ব্রাজিল ২:০ সার্বিয়া
শুধু জয় নয়, সঙ্গে সুন্দর ফুটবলও; এটি যেন আবহমান কাল ধরেই ব্রাজিল ফুটবলের মটো। গ্যালারিতে বসে থাকা কিংবদন্তি কাফু, রবার্তো কার্লোসদের সামনে একটি আদর্শ ব্রাজিলীয় পারফরম্যান্স উপহার দিয়েই ২০২২ বিশ্বকাপ শুরু করল নেইমাররা। চিরায়ত সাম্বার ছন্দ, ক্ষিপ্র গতি ও খুনে ফুটবলের পসরা সাজিয়ে সার্বিয়াকে নাজেহাল করে জিতেছে ব্রাজিল। ২-০ ব্যবধানের এই জয়ের পথে দুটি গোলই করেছেন টটেনহাম তারকা রিচার্লিসন।
তর্কসাপেক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী দল নিয়ে বিশ্বকাপে এসেছে ব্রাজিল। তেমন কোনো ইনজুরি সমস্যায় না পড়া ল্যাটিন আমেরিকান দলটির শুধু শুরুর একাদশ না, বেঞ্চের লাইনআপও দুর্দান্ত। রদ্রিগো (রিয়াল মাদ্রিদ), ফ্রেড, অ্যান্টনি (ম্যান ইউনাইটেড), গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও মার্টিনেল্লি (আর্সেনাল); আজ বদলি নামা ব্রাজিলিয়ানদের সবাই-ই বিশ্বের প্রায় যেকোনো দলের শুরুর একাদশে জায়গা করে নিবেন।
ব্রাজিলের শুরুর একাদশও তর্কসাপেক্ষে অন্য যেকোনো দলের তুলনায় বেশি ভারসাম্যপূর্ণ এবং শক্তিশালী। থিয়াগো সিলভা-কাসেমিরো-নেইমারদের নিয়ে আজ ম্যাচের শুরু থেকেই বলের দখল রেখে খেলার ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে ব্রাজিল। ভিনিসিয়াস ও রাফিনহা দুই উইং থেকে গতি ও স্কিলের সাহায্যে ডিফেন্ডারদের খাবি খাওয়াতে থাকেন। তবে একের পর এক আক্রমণের মুখেও রক্ষণে নিজেদের দৃঢ়তা ধরে রাখে সার্বিয়া। যে কারণে গোলশূন্য অবস্থায় শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের আক্রমণের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। ইনভার্টেড ও ওভারল্যাপিং রান নিয়ে দুই উইং থেকে আক্রমণ, বক্সে ক্রস, কিংবা দ্রুত পাসিংয়ে বক্সে প্রবেশ; নানাভাবে গোলের সন্ধান করতে থাকে ব্রাজিল। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মিলে ৬২ মিনিটে। বক্সে নেইমারের কাছ থেকে বল নিয়ে ভিনিসিয়াস শট নিলে তা গোলকিপারের হাত থেকে রিবাউন্ডে পড়ে রিচার্লিসনের পায়ে। সহজ ট্যাপ-ইনে বল জালে জড়ান রিচার্লিসন, উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো মাঠ।
ম্যাচে এর আগে সার্বিয়ার বক্সে একবারও বলের দেখা পাননি রিচার্লিসন। সার্বিয়া বক্সে এই টটেনহাম স্ট্রাইকারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় টাচে অবশ্য একটি স্মরণীয় গোলের সাক্ষী হয় লুইসাইল স্টেডিয়াম। ৭৩ মিনিটে লেফট উইং থেকে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে বুটের বাইরের অংশ দিয়ে ক্রস করেন ভিনিসিয়াস। বক্সে এক টাচে সেই বল উপরে তুলেন রিচার্লিসন, পরের টাচে নেন দুর্দান্ত এক বাইসাইকেল কিক। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। কর্নার ফ্ল্যাগের সামনে উদযাপনে জড়ো হয় ব্রাজিলের পুরো বেঞ্চ, এমনকি কোচ তিতেও।
যোগ করা সময়সহ ম্যাচের বাকি ২৫ মিনিটে অবশ্য সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করে ব্রাজিল। রদ্রিগো-ফ্রেডসহ বদলি খেলোয়াড়েরাও গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। তবে বেশ কয়েকবার কাছাকাছি আসলেও আর গোলের দেখা পায়নি তিতের দল। ২-০ ব্যবধানেই প্রথম ম্যাচ শেষ করেছে ব্রাজিল।