• বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর, ২০২৩
  • " />

     

    নেপিয়ারে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়

    নেপিয়ারে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়    

    ১ম টি-টোয়েন্টি, নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ (টস-বাংলাদেশ/বোলিং)
    নিউজিল্যান্ড - ১৩৪/৯, ২০ ওভার (নিশাম ৪৮, স্যান্টনার ২৩, মিলনে ১৬*, শরিফুল ৩/২৬, মাহেদী ২/১৪, মোস্তাফিজ ২/১৫)
    বাংলাদেশ - ১৩৭/৫, ১৮.৪ ওভার (লিটন ৪২*, সৌম্য ২২, মাহেদী ১৯*, নিশাম ১/৭, সাউদি ১/১৬, স্যান্টনার ১/১৬)
    ফলাফল - বাংলাদেশ ৫ উইকেটে জয়ী


     

     

    নাজমুল হোসেন শান্তর অধীনে আরও একটি ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়ের আনন্দে ভাসার পাশাপাশি সেনা দেশগুলোর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের মাটিতেই তিন ফরম্যাটে জয়ের রেকর্ড গড়ল তারা।
     

    লক্ষা তাড়ায় এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে দারুণ এক ছয় মেরে শুরু করলেও রনি তালুকদার ৭ বলে ১০ রান করে থেমেছিলেন মিলনের শিকার হয়ে। অধিনায়ক শান্তকে নিয়ে এরপর লিটন সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন; তবে ভালো শুরু করে সেটা ছুঁড়ে দিয়ে আসেন শান্ত। বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে শান্ত ১৪ বলে ১৯ রানে ফিরলে সৌম্য এসেও দারুণ শুরু পান। পায়ের ওপরের বলগুলো সাবলীলভাবে বাউন্ডারির দিকে ঠেলে দিয়ে ফর্মের জানান দিচ্ছিলেন সৌম্য। তবে তিনিও শান্তর মিছিলেই যোগ দিলেন কিছুক্ষণ পরেই। সিয়ার্সের বলে আড়াআড়ি ব্যাট চালাতে গিয়ে স্টাম্প খুইয়ে ১৫ বলে ২২ রানে থামেন তিনি।
    সেখান থেকে বিপদে পড়তে পারত বাংলাদেশ। শান্ত-সৌম্যদের মতই শুরু ছুঁড়ে দিয়ে ১৮ বলে ১৯ রানে হৃদয় ফিরলে তার পরের ওভারেই সাউদির বাউন্সারে  মাত্র ১ রানে ফেরেন আফিফ। ওই ওভারে ২২ রানে থাকার সময় লিটনের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর রায় দেওয়া হলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। সেখান থেকেই যেন লিটন ঘুরে দাঁড়ান, সাথে মাহেদী দেন দারুণ সঙ্গ। সিয়ার্সকে দুজনেই লক্ষ্য বানিয়ে ইনিংস গুছিয়ে ফেলেন। লিটনের ক্যাচ অবশ্য ফাইন লেগে লুফে নিয়েও সোধি দড়িতে পা ফেলায় বেঁচে যান লিটন। সেখান থেকে ৮ বল হাতে রেখেই দুজনের ৪০* রানের জুটিতে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ।

     

    এর আগে প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন শেখ মাহেদী। টিম সাইফার্টের স্টাম্প উপড়ে তিনি মাত্র এক রান দিলে পরের ওভারে শরিফুল  তার প্রচেষ্টাকে আরও এক ধাপ ওপরে নিয়ে যান। দারুণ ফর্মে থাকা এই বাঁহাতি পেসারের বেরিয়ে যাওয়া বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে অ্যালেন ফিরলে তার ঠিক পরের বলেই ফেরেন গ্লেন ফিলিপস। ভেতরে ঢোকা বলে ফিলিপস পরাস্ত হলে আম্পায়ার বাংলাদেশের আবেদনে সাড়া না দিলেও রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউর সাফল্য পায় তারা। উইকেটে এসে নিজের স্বভাবজাত খেলা খেলে মিচেল পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও চতুর্থ ওভারে মাহেদীর লাইন ধরে রাখা বলে স্টাম্প খুইয়ে ফেরেন তিনিও। তানজিম সাকিবের করা পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে টানা ছয়-চারে চ্যাপম্যান পরে দলকে নিয়ে যান ৩৬ রানে।
     

    অবশ্য আক্রমণের ধারা বজায় রাখতে গিয়ে চ্যাপম্যানও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মাত্র ১৪ রান গোণার পর মাহেদীর স্পেল শেষ হলে তার পরের ওভারে রিশাদকে আক্রমণে আনেন শান্ত। লেগ স্পিনারের ওপর চড়াও হতে যেয়েই ডিপ এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দিয়ে থামেন চ্যাপম্যান। অধিনায়ক স্যান্টনারকে নিয়ে এরপর নিশাম ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও সেই অর্থে সাহায্য পাননি তিনি। ৫০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসার পর দুজনে মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করলও শরিফুল আক্রমণে ফেরায় জুটি ভাঙে ৪১ রানে। সেটার জন্য অবশ্য মিড উইকেটে নিচু হয়ে আসা ক্যাচ দারুণভাবে লুফে নেওয়াতে সৌম্যের ধন্যবাদটা প্রাপ্য। ২৩ রানে স্যান্টনার তখন ফিরলে গিয়ার পাল্টানোর জন্য খেলতেই হত নিশামকে। সাকিবের চড়াও হয়ে সেটা তিনি করেও চলেছিলেন। তবে মোস্তাফজি আক্রমণে আসতে বাইরের এক ফুল টসে বাউন্ডারিতে ক্যাচ অনুশীলনের সুযোগ করে দিয়ে ২৯ বলে ৪৮ রানে ফেরার আক্ষেপে পোড়েন তিনি। নিউজিল্যান্ডকে পরে লড়াইয়ের রসদ যোগান ১২ বলে ১৬* রান করা মিলনে। সাকিবের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ডিপ পয়েন্টের ওপর দিয়ে দুর্দান্ত ছয়ে তিনি শেষ করলেও দিনশেষে বাংলাদেশের ব্যাটারদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে আর কাজে আসেনি সেই সংগ্রহ।