গিল-পান্টের জোড়া সেঞ্চুরির দিনে টিকে রইল বাংলাদেশ
১ম টেস্ট, চেন্নাই (টস - বাংলাদেশ/ফিল্ডিং)
ভারত - ৩৭৬ ও ২৮৭/৪ ডি. (গিল ১১৯*, পান্ট ১০৯, রাহুল ২২*, মিরাজ ২/১০৩, রানা ১/১২, তাসকিন ১/২২)
বাংলাদেশ - ১৪৯ ও ১৫৮/৪ (শান্ত ৫১*, সাদমান ৩৫, জাকির ৩৩, আশ্বিন ৩/৬৩, বুমরাহ ১/১৮)
৩য় দিন, স্টাম্পস
জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩৫৭ রান
দিনের শুরুটা হয়েছিল ভারতের ব্যাটিং দৌরাত্ম্য দিয়ে। গত দিনের ধারাবাহিকতায় এদিনও সকালের সেশনটা নিজেদের করে রেখেছিল ভারত। আগের ইনিংসের শাপমোচন করতে বদ্ধপরিকর গিলের ডিফেন্স যেন দুর্ভেদ্য! অন্যদিকে পান্ট সপাটে ব্যাট চালিয়েছেন নিজের মতো করেই। দুজনেই ফিফটি তুলে নেন, পান্ট তো ফিফটির পর গিয়ার বদলে গিলের চেয়েও সময়ে সময়ে এগিয়ে ছিলেন। তবে লাঞ্চে যাওয়ার ঠিক আগে সাকিবের বলে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে একবার আকাশে বল ভাসিয়েছিলেন। অধিনায়ক শান্ত অবশ্য বলের নিচে ঠিকঠাকমত যেতেই পারলেন না। সেই যাত্রায় বেঁচে পান্ট বেঁচে গেলে সকালের সেশন কোনো উইকেট না হারিয়েই শেষ করে ভারত।
লাঞ্চের পর এসেই পান্ট পেয়ে যান সেঞ্চুরি। ২০২৩ সালে ভয়ংকর দুর্ঘটনার পর খেলতে পারবেন কি না তা নিয়েই ছিল সন্দেহ। সেই পান্ট টেস্ট ক্রিকেটে ফিরলেন রাজসিক ভঙ্গিমায়। ভারতের উইকেটকিপার হিসেবে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ডে ধোনির পাশে নাম লেখালেন ষষ্ঠ সেঞ্চুরি দিয়ে, সেটাও মাত্র ৫৮ ইনিংসে! সেঞ্চুরির পরও যে একই ধারেই ব্যাট চালাবেন তা অনুমেয় ছিল। তবে মিরাজকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে যেভাবে ফিরলেন তা হয়ত নিজেও আশা করেননি পান্ট। তবে ১২৮ বলে ১০৯ রানের ইনিংসে ভারতের হয়ে নিজের কাজটা ততক্ষণে সেরে ফেলেছিলেন। অন্যদিকে একই পথে হাঁটতে থাকা গিল নিজের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়ে যান কিছুক্ষণ পরেই। উইকেটে আসা রাহুল আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে লিডটা পাঁচশো পার করতে সাহায্য করেন। লিড ৫১৪ রান ছুঁতেই তাই ইনিংস ঘোষণা করেন অধিনায়ক রোহিত। ১১৯* রানে অপরাজিত থেকেই তাই মাঠ ছাড়েন গিল।
৫১৫ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশের আশা খুব একটা ছিল না বাস্তবিকভাবেই। কিছুটা নির্ভার হয়ে খেলতে পারছিলেন বলেই কি না, জাকির-সাদমান জুটির শুরুটা ভালো হয়। চা-বিরতিতে দুজনেই যান অপরাজিত থেকে। তার আগে একটা অদ্ভুত রেকর্ডও করে ফেলেছিলেন তারা। ভারতের মাটিতে প্রথম কোনো বাংলাদেশি ওপেনিং জুটি পঞ্চাশ পেরিয়েছিল এই জুটির সুবাদে; আগের সর্বোচ্চ ছিল তামিম-সৌম্য জুটির ৩৮ রান!
তবে বিরতি থেকে ফিরে দুজনের মনঃসংযোগে যেন বিচ্যুতি ঘটে। সপাটে ড্রাইভ করতে গিয়ে জয়সওয়ালের দুর্দান্ত ক্যাচে ৩৩ রানে থামতে হওয়ায় জাকির হয়ত কিছুটা মনঃক্ষুণ্ণ হবেন। তবে আশ্বিনের নিরীহ এক বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে যেভাবে সাদমান ফিরেছেন তার আসলে কোনো ব্যাখ্যা নেই। দুজনেই ভালো খেলছিলেন, দুজনেই ফিরে গেলেন বিরতির পরপরই। তবে এদিন এরপর শক্ত হাতে হাল ধরেছিলেন অধিনায়ক শান্ত। অন্য প্রান্তে অবশ্য আশ্বিন জুজু কাটাতে আক্রমণের পথ বেঁছে নিয়েই আত্মাহুতি দেন দুই অভিজ্ঞ মুমিনুল ও মুশফিক। বলের লাইন পড়তে না পেরে স্টাম্প খুইয়ে ১৩ রানে ফেরেন মুমিনুল। উইকেটে এসেই আশ্বিনকে আক্রমণ করতে চাওয়া মুশফিক ছয় একটা মেরেছিলেন। এরপর বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে সংযোগটা করতে না পারলে রাহুলের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়া ক্যাচে থামতে হয় তাকে। এর মাঝে আশ্বিনকে ছয় মেরেই ৫৬ বলে ফিফটি পেয়েছিলেন শান্ত। মুশফিক ফেরার কিছুক্ষণ পরেই আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হলে শান্ত তাই অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন।