দিল্লিতে বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের ছেলেখেলা
২য় টি-টোয়েন্টি, দিল্লি (টস - বাংলাদেশ/ফিল্ডিং)
ভারত - ২২১/৯, ২০ ওভার (নিতিশ ৭৪, রিঙ্কু ৫৩, হার্দিক ৩২, রিশাদ ৩/৫৫, তাসকিন ২/১৬, মোস্তাফিজ ২/৩৬)
বাংলাদেশ - ১৩৫/৯, ২০ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৪১, ইমন ১৬, মিরাজ ১৬, বরুণ ২/১৯, নিতিশ ২/২৩, সুন্দর ১/৪)
ফলাফল - ভারত ৮৬ রানে জয়ী
আরও একটি টি-টোয়েন্টি, আরও একটি অসহায় আত্মসমর্পণ। দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে যেখানে রানবন্যার দেখা মেলে, ম্যাচের আগেও যেখানে রানের সমারোহ ছিল আলোচনার মুখ্য বিষয়, ভারতও যেটা করে দেখাল - সেখানেই বাংলাদেশ যেন ভিন্ন কোনো এক মাঠে খেলল। নিতিশ কুমার রেড্ডি, রিঙ্কু সিং, হার্দিক পান্ডিয়াদের বেধড়ক পিটুনির জবাব বাংলাদেশ দিল সেই গড়পড়তা দলীয় সংগ্রহ দিয়ে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা তাই রীতিমত শাসন করেই নিশ্চিত করল সিরিজ জয়। ২০১৯ সালের পর থেকে দেশের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে অপরাজিত থাকার ধারা তাই দাপটের সাথেই অব্যাহত রাখল ভারত।
২২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে বাংলাদেশকে রেকর্ড গড়তে হত। প্রথম ওভারে ১৪ রান তুলে শুরু করার পর বাংলাদেশের ব্যাটাররা খোলসে ঢুকে সেই কচ্ছপের গতিতেই এগুলো। আবারও আরশদীপের শিকার হয়ে ইমন ১৬ রানে ফেরার পর বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাছে ভারতীয় স্পিনাররা যেন জুজু হিসেবে ধরা দিল। বাঁহাতি শান্তকে থামাতে সুন্দরকে আক্রমণে আনার সাথে সাথেই ফল এনে দেন তিনি। পরের ওভারে বরুণ বল হাতে নিয়েই দারুণ এক গুগলিতে লিটনের স্টাম্প উপড়ে ফেললেন। পাওয়ারপ্লেতে তবুও বাংলাদেশ খুব একটা পিছিয়ে ছিল না এক অর্থে; ভারতের স্কোরবোর্ড যেখানে বলছিল ৪৫/৩ সেখানে বাংলাদেশেরটা বলছিল ৪৩/৩।
তবে এরপর থেকেই আকাশ পাতাল তফাৎ। একেকজন স্পিনার বল হাতে নিচ্ছেন, আর উইকেট পেয়ে যাচ্ছেন। অভিষেক বল হাতে নিয়ে ফেরালেন হৃদয়কে; তো পরাগ বল হাতে নিয়ে ভাঙলেন মিরাজ-মাহমুদউল্লাহ জুটি। মিরাজের বিদায়ের পর অন্য দিকে চলেছে আসাযাওয়ার মিছিল। আর আরেকদিকে মাহমুদউল্লাহ খেললেন শ্লথগতির এক ইনিংস। শেষ ওভারে থামার আগে ৩৯ বলে ৪১ রানের ইনিংসে মান বাঁচালেন, না নিজের রানটা একটু বাড়িয়ে নিলেন সেটা এই অভিজ্ঞ ব্যাটার ভালো জানেন। বাংলাদেশের ইনিংস গুটাতে না পারলেও বিশাল জয়ে ভারত তাই এক অর্থে অপমান করেই হারাল বাংলাদেশকে।
এর আগে তাসকিন আর তানজিম সাকিবের সুবাদে বাংলাদেশ শুরুটা ভালোই করেছিল। তবে পাওয়ারপ্লে শেষ হতে স্পিনাররা আসতেই নিতিশ-রিঙ্কু রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন। ৭-১৬ ওভারের মধ্যে তারা নিজ ইতিহাস সর্বোচ্চ ১১টি ছয় মেরেছেন! যেই উইকেটে বাংলাদেশ স্পিনারদের পড়তেই পারল না সেখানে রিশাদ-মিরাজকে তুলোধোনা করে ছেড়েছেন মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা নিতিশ। ৩৪ বলে ৭৪ রানের অসামান্য এক ইনিংস খেলে ভিত গড়ে দিয়েছেন তিনি। পরে রিঙ্কুও পেয়েছেন ৫৩ রানের দেখা। সেই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ১৮ বলে ৩২ রানে হার্দিক আরও একবার দেখিয়েছেন কারিশমা।
স্পিনারদের বধ্যভূমিতে তাসকিন ছিলেন উজ্জ্বল। দুটো উইকেট নিয়ে যেখানে তিনি গুনেছিলেন মোটে ১৬ রান, সেখানে অন্য বোলারদের নাজেহাল করে ভারত পেয়ে যায় সুবিশাল সংগ্রহ। শেষ ওভারে রিশাদের তিন উইকেট তাই শুধু তার উইকেটের সংখ্যাটাই বাড়িয়েছে। দিন শেষে অবশ্য প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ সেসব নিয়ে আলোচনার সুযোগও রাখেনি।