'গুডবাই, বিলি বাউডেন?'
ইতিহাসের দ্বিতীয় আম্পায়ার হিসেবে নেমেছিলেন ২০০তম ওয়ানডেতে। গত ফেব্রুয়ারির চ্যাপেল-হ্যাডলি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে। বিলি বাউডেন কি জানতেন, সেটাই তাঁর শেষ! ওয়েলিংটনের সেই ম্যাচটাই হয়তো হয়ে থাকবে বাউডেনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ, নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের সদ্য প্রকাশিত আম্পায়ারের আন্তর্জাতিক প্যানেল থেকে বাদ পড়েছেন এই ‘বিনোদনদায়ী’ আম্পায়ার।
আম্পায়ারের চিরায়ত ভাবগম্ভীর প্রথাকে ভেঙ্গে বাউডেন এনেছিলেন নতুন এক মাত্রা। প্রত্যেকটা সংকেতেই মিশে থাকে আলাদা একটা ‘মজা’ করার প্রবণতা। কয়েকধাপে দেন ছয়ের সংকেত, চারের সংকেতে ব্যবহার করেন দুইহাত। ইতিহাসের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে গ্লেন ম্যাকগ্রা আন্ডারআর্ম বল করতে চেয়েছিলেন, বিলি পকেট থেকে বের করেছিলেন লাল কার্ড! তবে সব ছাপিয়ে বোধহয় চোখে লেগে থাকার কথা আউটের সংকেত, বিলির ‘ক্রুকেড-ফিংগার’। আঙ্গুল বাঁকা করে দেয়া সেই আউট তো একটা সময়ের ক্রিকেট আম্পায়ারিংয়েরই একটা বড় অংশ!
হলোটা কী! দিল্লী টেস্টে মৌমাছির আক্রমণে বন্ধ ছিল খেলা, বিলি উঠে দাঁড়াতে বলছেন ক্রিকেটারদের।
এই ‘ক্রুকেড-ফিংগারের’ পেছনের ইতিহাসটা অবশ্য ‘মজার’ নয়। একুশ বছর বয়সে আরথ্রাইটিস ধরা পড়েছিল। ক্রিকেট খেলার স্বপ্নটাও বিসর্জন দিতে হয়েছিল তখনোই। বাউডেনের তারপরই আম্পায়ারিংয়ে আসা। ১৯৯৫ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কার ম্যাচে ওয়ানডে অভিষেক, টেস্ট অভিষেক ২০০০ সালে, অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ সেবার অস্ট্রেলিয়া। ৮৪ টেস্টে আম্পায়ারিং করেছেন, ষষ্ঠ সর্বোচ্চ হিসেবে। ওয়ানডে ম্যাচের সংখ্যাই তাঁর চেয়ে এগিয়ে আছেন শুধু রুডি কোয়ার্টজেন(২০৯)।
২০১৩ সালে আইসিসির এলিট প্যানেল থেকে বাদ পড়েছিলেন, স্বদেশী টনি হিলের অবসরের পর ফিরেছিলেন আবার ২০১৪ সালে। আবার বাদ পড়েন ২০১৫ সালে, তবে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের আন্তর্জাতিক প্যানেলে। এবার বাদ পড়তে হলো সেখান থেকেও।
বয়স ৫৩ হয়ে গেছে, বাউডেনের সামনে অবশ্য ঘরোয়া ম্যাচ ও মহিলাদের আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ আছে এখনও। সে সুযোগটা কতদিন নেবেন, সেই প্রশ্ন তোলা থাকবে সময়ের কাছে।
তবে কি সময় এখন বলার, ‘গুডবাই, বিলি!’
আরও পড়ুনঃ
কাগতাড়ুয়া, সাদা হ্যাট আর কয়েকটি স্বপ্নের গল্প