• " />

     

    ভাইয়ের হাত ধরেই নাটকীয় শেষ!

    ভাইয়ের হাত ধরেই নাটকীয় শেষ!    

    ক্লান্ত ব্রাইটন জনি ব্রাউনলিকে নিজের কাঁধে ভর করিয়ে ফিনিশিং লাইনে পৌঁছে দিচ্ছেন আরেক ভাই অ্যালিস্টার। প্রথম স্থান হাতছাড়া হয়ে গেছে জনির। ভাইকে পৌঁছে দিয়ে অ্যালিস্টার দৌড় শেষ করলেন তৃতীয় হয়ে। তাতে কি? ট্রায়াথলন ওয়ার্ল্ড সিরিজ ততক্ষণে দেখে ফেলেছে ইতিহাসেরই অন্যতম রোমাঞ্চকর ঘটনা। ভ্রাতৃত্বের এমন নিদর্শন তো খুব বেশি ঘটেনি ক্রীড়া জগতেও!   

    ট্রায়াথলন ওয়ার্ল্ড সিরিজের ফাইনাল চলছিল মেক্সিকোর কজুমেল শহরে। তীব্র দাবদাহে নাজেহাল অ্যাথলেটদের সবাই। দৌড়ের ৭০০ মিটার বাকি থাকা পর্যন্তও এগিয়ে ছিলেন জনি। গরমে নাজেহাল ২৬ বছর বয়সী ব্রিটিশ দৌড়বিদ তখন একটু একটু করে ঢলে পড়ছেন। কিছুতেই যেন শরীর চলছে না তাঁর। পানিশুন্যতা তো ছিলই সাথে মেক্সিকোর বাতাসের আর্দ্রতাও কাবু করে ফেলেছে জনিকে।



     

    পেছন থেকে এই ঘটনা দেখে আরেক ভাই অ্যালিস্টার এগিয়ে এসে ধরেন জনিকে। দুই বছরের বড় ভাই অ্যালিস্টারের কাঁধে হাত রেখেই বাকি পথটা পাড়ি দেন জনি। ফিনিশিং লাইনের কাছে এসে জনিকে ছেড়ে দিয়ে নিজের আগে জায়গা দিয়ে দেন অ্যালিস্টার। জনি দৌড় শেষ করেন দ্বিতীয় হয়ে, আর অ্যালিস্টার তৃতীয়। অথচ ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা না করলে নিজেই প্রথম হয়ে রেস শেষ করতে পারতেন অ্যালিস্টার!



     

    ব্রনলি ভাতৃদ্বয়ের এমন ঘটনায় আসলে ঢাকা পড়ে গেছে রেসে প্রথম হওয়া সাউথ আফ্রিকার হেনরি শোম্যানের কৃতিত্ব। এই দৌড়ে জয়ী হলে র‍্যাংকিংয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে প্রথম হতেন জনি। দ্বিতীয় হওয়ায় চার পয়েন্ট পিছে থেকে প্রথম স্থানটা রয়ে গেছে স্প্যানিয়ার্ড মালোর অধীনেই। ওয়ার্ল্ড টাইটেলটাও তাই পেয়েছেন মালোই। যিনি এই দৌড় শেষ করেছেন পঞ্চম হয়ে।

    ওয়ার্ল্ড টাইটেলটা ধরে রাখলেও এভাবে জিতে মোটেই খুশি নন এই স্প্যানিয়ার্ড। সবাইকে সুস্থ দেখতে চাইলেও, অ্যালিস্টারের এমন কাজে নাখোশ হয়েছেন তিনি। নিজের জয়টা নাকি এতে ঢাকা পড়ে গেছে বলে দাবি করেছেন তিনি! 

    মালো যাই বলুক, ছোট ভাইকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়া অ্যালিস্টার অবশ্য বলছেন ভ্রাতৃত্ববোধ থেকে নয়, মানবিকতার খাতিরেই এমনটি করেছেন তিনি। "জনি নয়, ওর জায়গায় যে কেউ থাকলেও আমি একই কাজ করতাম।"- বলে মালোর কথার জবাব দিয়েছেন অ্যালিস্টার।



    তবে জনিকে প্রথম স্থানে দেখতে না পেয়ে যে কষ্ট পেয়েছেন তিনি সেটা স্বীকার করতে অবশ্য ভুল করেননি অ্যালিস্টার। খানিকটা 'দাদাগিরিও' খাটিয়েছেন পরে! "বোকাটা প্রথম হলেই খুশি হতাম! শেষ দুই কিলোমিটার জগিং করে দৌড় চালিয়ে গেলেও জনিই প্রথম হত। আপনাকে এমন অবস্থায় প্রকৃতির সঙ্গেও লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। আমি যথেষ্ট পরিমাণ পানি পান করেছি, নিজেকে ঠান্ডা রেখেছি। সে তেমনটা করেনি"।

    পরে টুইট করে নিজেই নিজের সুস্থতার কথা জানিয়েছেন ২০১৬ অলিম্পিকেও রৌপ্য জেতা জনি। প্রথম দফায় সেবা শুশ্রূষা নেবার পরই অনেকটাই ধকল কাটিয়ে উঠেছেন তিনি।