ওই রেকর্ড গড়ারই কথা ছিল না ডি ভিলিয়ার্সের!
গত বছর জানুয়ারি মাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে করেছিলেন অতিমানবীয় এক কীর্তি। ৩১ বলে ওই সেঞ্চুরি ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসেরই দ্রুততম। অথচ ওই ম্যাচে তিন নম্বরে ব্যাট করারই কথা ছিল না এবি ডি ভিলিয়ার্সের। ডি ভিলিয়ার্সকে একরকম জোর করেই ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। নিজের আত্মজীবনী ‘এবিঃ দা অটোবায়োগ্রাফি’ তে ওই দিনের ঘটনা মনে করেছেন।
ম্যাচের তখন ৩৯ তম ওভারের খেলা চলছে। উদ্বোধনী জুটির পার্টনারশিপ দেখে ওয়ান ডাউনে ডেভিড মিলারকে পাঠানোর জন্য কোচকে পরামর্শ দেন এবি, “আমাদের রান যখন ২০০ পার করেছিল তখন ড্রেসিং রুমে কোচের কাছে গেলাম। বললাম, “কোচ, ডেভিড মিলারকে পরবর্তী উইকেটে নামতে দিন, এটা তাঁর জন্য উপযোগী হবে।” তখন কোচ আমাকে বললেন, “না অ্যাবস, তুমিই নামবে।””
কেন নিজেকে সরিয়ে মিলারকেই আগে পাঠাতে চেয়েছিলেন সেটাও লিখেছেন তিনি, “আমি কোচকে বললাম, “এটার কোন মানেই হয় না। সুলিমান বেনের এখনো দুই ওভার বাকি। যদি কেউ আউট হয় তাহলে মিলারের নামা উচিত এবং সে যেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যানদের ভিতরের দিকে টার্ন করানো বেনের উপর চড়াও হয়। পরিস্থিতিটা তাঁর জন্য ওরকমই ছিল। আমরা ৫ ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আছি , এবং আমরাই হয়তো জিতব। কিন্তু আমাদের সব ধরনের সুযোগ নিতে হবে। আমলা এবং রুশো এখন দারুণ খেলছে, তারা স্কোর ২২০ এর উপরে নিয়ে যাবে। একটা চেষ্টা করে দেখা উচিত। আমি সিরিয়াস কোচ, মিলারেরই নামা উচিত এরপর।” কোচ তখন আমাকে বললেন, “না, এই পরিস্থিতির জন্যই তুমিই সেরা।””
কোচের এই সিদ্ধান্তে পর ড্রেসিংরুমে নিজেদের অবস্থার কথা তুলে ধরেন এবি, “আমি ড্রেসিং রুমের ফিজিওথেরাপিস্টের বিছানায় বসা ছিলাম। স্টেইন, ডু প্লেসিস, বেহারদিয়েনরা পাশেই ছিল। আমরা ওয়ান্ডারাসের ‘গোলাপি রবিবার’ উপভোগ করছিলাম, এদিন স্তন ক্যান্সারের সচেতনতার জন্য বেশিরভাগ দর্শক গোলাপি জামা পরে আসে। কেমন যেন নার্ভাস ছিলাম। হোক না সেটা ১৭৭তম ওয়ানডে, আমার কাছে মনে হচ্ছিল প্রথম ম্যাচের মতোই। “এই অবস্থাটা আসলে কাটবে নামার”- কথাটা স্বগোক্তির মতো বলে উঠলাম। ডু প্লেসিস বলে উঠলো কেন এরকম বলছি। আমি উত্তর দিলাম ব্যাটিং করার আগে সবসময়ই এরকম নার্ভাস হই আমি।” কথা বলতে বলতে রুশো ১২৮ রানে আউট হয়ে গেল, আমাদের স্কোর তখন ২৪৭। আমি ব্যাট হাতে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলাম।”
মাঠে নামার পর ঝড় তুললেন এবি। নিজের প্রথম বলেই চার মারলেন। এরপর তান্ডব চালিয়ে ৪৪ বলে ৯টি চার ও ১৬টি ছক্কায় ১৪৯ রান করে সাজঘরে ফেরত আসেন তিনি। অস্ত্রেলিয়ার বিপক্ষে করা রোহিত শর্মার ১৬ ছক্কার রেকর্ডও স্পর্শ করেন সেদিন।
ভাগ্যিস কোচ তাঁর কথা কানে তোলেননি! নাহলে ক্রিকেট বিশ্ব কি দারুণ একটা ইনিংস মিস করত ভাবুন একবার!