• " />

     

    আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ব্র্যাড হগ!

    আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন ব্র্যাড হগ!    

    কী ছিল না তাঁর জীবনে। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ২০০৩, ২০০৭ বিশ্বকাপ জয়ী অজি দলে রেখেছিলেন দারুণ ভূমিকা। মাঠে তাঁর প্রানবন্ত উপস্তিতি জয় করে নিয়েছিল দর্শকের হৃদয়। কিন্তু এতকিছুর মাঝেও জীবনের নির্মম বাস্তবতায় হতাশার সাগরে ডুবে গিয়েছিলেন ব্র্যাড হগ। ছাড়তে হয়েছিল ক্রিকেট, এমনকি আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার!

     

    কিন্তু সদা হাস্যজ্জল এই মানুষটি কেনো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? কী এমন ঘটেছিল তাঁর জীবনে? আত্মজীবনী ‘দা রং ওয়ানে’ উঠে এসেছে এসব কথাই। গত শনিবার ফেয়ারফ্যাক্স থেকে প্রকাশিত এই বইটির প্রচারনা অনুষ্ঠানে নিজের সেই দুঃসময়ের কথা স্মরণ করেন এই বাঁহাতি স্পিনার।

     

    মাঠের বাইরের জীবনটা একেবারেই মসৃণ ছিল না হগের জন্য। স্ত্রী আন্দ্রেয়ার সাথে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। বিয়েটা বাঁচিয়ে রাখার জন্যই ২০০৮ সালে জাতীয় দল থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তবে এতে খুব একটা লাভ হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে বিষাদে নিমজ্জিত হয়ে গিয়েছিলেন। নেশায় বুদ হয়ে থাকতেন, কোথাও চাকরিও পাচ্ছিলেন না। এতেই আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় চলে এসেছিল, “মাঝে মাঝেই আমি ফ্রেমান্টলে চলে যেতাম। গাড়ি পার্ক করে বীচে হাঁটা শুরু করতাম। সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে ভাবতাম, যদি আমি অনেক দূরে ভেসে যেতে পারতাম! ফিরে আসতে পারলে ভালো, কিন্তু ফেরত না আসলেও ক্ষতি নেই। আমি সবকিছু ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। খুব বেশি বিষাদের মাঝে ছিলাম।”

     

    একবার না, এরকম চারবার করেছিলেন হগ! প্রতিবারই নিজের ঘরে ফিরে যাওয়ার আর ইচ্ছা ছিল না তাঁর ভিতরে, “ প্রতিবার গিয়েই আমি এরকম ভাবতাম। ব্যাপারটা ভয়ানক ছিল।”

     

    ভেবেছিলেন মেয়ে এরিনের জন্মের পর দুজনের ভালোবাসাটা আগের মতো গাড় হবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত কিছুতেই কিছু হয়নি। ক্রিকেটের প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসাই হয়ত কাল হয়েছে তাঁর জন্য, “ক্রিকেট আমার কাছে একটা নেশার মতো। জীবনের একটাই লক্ষ্য ছিল, সেটা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা। আমি জানতাম আমার স্ত্রীর জীবনটা দুর্বিষহ ছিল। আমিই ছিলাম এটার কারণ।”

     

    বইটি পড়ে সাবেক অজি ফাস্ট বোলার মিচেল জনসনও নিজের আবেগকে ধরে রাখতে পারেননি। সতীর্থের ওই দুঃসময়ের কথা জানতে পেরে ব্যথিত হয়েছেন তিনিও, “আসলে আপনি টিভিতে দেখে বুঝতে পারবেন না কার জীবনে কী চলছে! একজন পেশাদার খেলোয়াড় হিসাবে আপনি এসব কাটিয়ে উঠতে পারেন। ওই সময়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউই ছিল না হয়ত।”

     

    অন্ধকারের শেষেই থাকে আলো। হগের জীবনের আঁধারও কেটে গিয়েছে। ২০১১ সালে ক্যারিয়ারটাও নতুন করে শুরু করেছেন, জায়গা করে নিয়েছেন টি-টোয়েন্টি দলেও। গত বছর খেলেছেন আইপিএলে। এ মৌসুমে হগকে দেখা যাবে বিগ ব্যাশের মেলবোর্ন রেনেগেডসের জার্সি গায়ে। নতুন করে ভালোবাসাও খুঁজে পেয়েছেন ৪৫ বছর বয়সী এই স্পিনার, চেরিল ব্রেসল্যান্ডের সাথে ভবিষ্যৎ জীবনের সংসার সাজানোর স্বপ্ন দেখছেন।