পরিবারের চেয়ে ক্রিকেটই আগে শামির কাছে
বাবার মৃত্যু সংবাদটা পেয়েছেন ব্যাঙ্গালুরুর অনুশীলন ক্যাম্পে বসে। তৌসিফ আলী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন দীর্ঘদিন। অনুশীলনে যোগ দেয়ার আগে খুব অল্প সময়ের জন্য অসুস্থ বাবাকে দেখতে গিয়েছিলেন ছেলে। যে কোনো সময় যে কিছু একটা ঘটে যেতে পারে বলে পরিবারের সদস্যরা জোর করছিলেন ক’টা দিন থেকে যাওয়ার জন্য। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে তাঁকে ফিট দেখতে চায় দল। দেশের স্বার্থে তাই প্রিয় পিতাকে মৃত্যুশয্যায় রেখেই চলে এসেছিলেন অনুশীলন ক্যাম্পে। বাবার প্রয়াণের খবরটা তাই পেতে হল তাই হাজার দুয়েক কিলো দূরত্বে বসে। গণমাধ্যম এড়িয়ে চলা মোহাম্মদ শামির দেশের জন্য এমন ত্যাগের গল্পটা শোনালেন তাঁর ভাই মোহাম্মদ আসিফ।
ভারতীয় ক্রীড়াবিষয়ক গণমাধ্যম স্পোর্টসকিডাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কথা বলেন ভাইয়ের ত্যাগ স্বীকারের বিষয়ে, “মুরাদাবাদে বাবার শরীরটা ভালো যাচ্ছিল না অনেকদিন ধরেই। তাঁর চিকিৎসার জন্য তাই আমাদের দিল্লী চলে আসতে হয়। ব্যাঙ্গালুরু যাওয়ার আগে ভাই বাবাকে দেখতে এসেছিলেন জানুয়ারিতে। পরিবারের লোকজন তখন তাঁকে অনেক অনুরোধ করে থেকে যাওয়ার জন্য। কিন্তু শামির কথা ছিল, তাঁর দেশও তাঁর কাছে বাবার মতোই। দেশের জন্য দায়িত্বটা তাই সে এড়িয়ে যেতে পারে না।”
“সে নিজেও আসলে মনঃকষ্টে ছিল খুব। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে তাঁর পুরোপুরি ফিট হওয়াটা দলের জন্য খুব দরকার, এমনটা জানার পর সে আসলে অনুশীলন ক্যাম্পেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এখন আমি জানি, আগামী সিরিজে সে তাঁর সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করবে।”
শামির এমন কর্তব্যবোধে তাঁর বাবার পূর্ণ সমর্থন ছিল বলেই জানাচ্ছেন আসিফ, “আমি নিশ্চিত সে এখন এই ভেবে অনুশোচনায় পুড়ছে যে তাঁর আসলে বাবার পাশে থেকে যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের পিতার পূর্ণ শ্রদ্ধা ছিল ছেলের কাজের প্রতি। এবং তিনি নিজেও চাইতেন তাঁর ছেলে কাজটাকেই আগে রাখুক। বাবার অনুপ্রেরণাটুকু আমরা খুব মিস করবো। বিশেষ করে ভাই যখন খুব চাপে থাকতো, বাবাই তাঁকে সবচেয়ে বেশী সাহস যোগাতেন।”