রোদনভরা বসন্তে বাংলাদেশের আক্ষেপ

স্কোর
ভারত ৬৮৭ ও ১৫৯/৪
বাংলাদেশ ৩৮৮ ও ১০০.৩ ওভারে ২৫০ (মাহমুদুল্লাহ ৬৪, সৌম্য ৪২, মুমিনুল ২৭, মিরাজ ২৩, সাব্বির ২২; অশ্বিন ৪/৭৩, জাদেজা ৪/৭৮ )
ফল: ভারত ২০৮ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচঃ বিরাট কোহলি
হলো না, বসন্তের প্রথম দিনটা শেষ পর্যন্ত রাঙিয়ে দিতে পারল না বাংলাদেশ। চা বিরতির ঠিক আগেই বাংলাদেশ অলআউট হয়ে গেল ২৫০ রানে। টেল এন্ডাররা মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থেকে ম্যাচটাই শুধু একটু দীর্ঘায়িত করলেন। শেষ পর্যন্ত ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট বাংলাদেশ হেরে গেল ২০৮ রানে।
পরিসংখ্যান বলছে, এই ফলটা খুব খারাপ নয়। সত্যি বলতে, ভারতের মাটিতে দ্বিতীয় ইনিংসের হিসেবে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স রাখতে হবে শুরুর দিকেই। চতুর্থ ইনিংসে ভারতে মাঠে কোনো সফরকারী দলের সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড ২৭৬ রানের, ১৯৮৭ সালে ওই টেস্টটা ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছিল। বাংলাদেশের চেয়ে চতুর্থ ইনিংসে ভারতের মাটিতে বেশি রানের কীর্তি আছে মাত্র ছয়টি। তবে এই ম্যাচে রানের চেয়ে উইকেটে সময় কাটানোটাই ছিল মুখ্য। সেদিক দিয়েও বাংলাদেশের সান্ত্বনাটা খুব কম। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০০ ওভার খেলেছেন মিরাজরা, চতুর্থ ইনিংসে ভারতের মাঠে সফরকারী দলের এর চেয়ে বেশি ওভার খেলার কীর্তি আছে মাত্র সাতটি। বছর দেড়েক আগে দিল্লিতে রেকর্ড ১৪৩ ওভার খেলেও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটা বাঁচাতে পারেনি। ভারতের সঙ্গে এ পর্যন্ত নয় টেস্টেও এবারই বাংলাদেশ দুই ইনিংস মিলে সবচেয়ে বেশি ওভার খেলেছে।
তবে এসবই দিন শেষে শুধু সান্ত্বনাই জাগাবে। বরং বাংলাদেশ আক্ষেপ করতেই পারে, আরেকটু “দায়িত্ব” নিয়ে খেললে ম্যাচের ফলটা হয়তো অন্যরকমও হতে পারত। পঞ্চম দিনের সকালে মুশফিকুর রহিমের মাথায় ভূত চেপে না বসলে তো ওভাবে উইকেট ছেড়ে খেলতে এসে আউট হন না। ভালো খেলতে খেলতে শর্ট পিচ বলে মাহমুদউল্লাহ ক্যাচ তুলে দেন না।
সকালে মুশফিকের বিদায়ের পর সাব্বিরের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহই আশা দেখাচ্ছিলেন। ৩৮ রানের জুটিটা বাংলাদেশের স্বপ্নে একটু একটু করে রঙ ফিরিয়ে আনছিল। কিন্তু প্রথম ইনিংসের মতো আবারও বলের লেংথ বুঝতে না পেরে এলবিডব্লু সাব্বির, এবার ঘাতক ইশান্ত শর্মা।
১৩ রান পর মাহমুদউল্লাহর বিদায়েই পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। প্রথম ইনিংসে ফিফটির পর মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসেও ২৩ রান করে ফেলেছিলেন। কিন্তু জাদেজার হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে খুব বেশি কিছু করার ছিল না। জাদেজার বল পুল করতে গিয়ে আউট হয়েছেন তাইজুল, তাসকিনকে রিভিউ নিয়েই এলবিডব্লু করেছেন অশ্বিন। কামরুল ইসলাম রাব্বি তো একাই প্রায় ৭০ বল খেলে ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। আফসোস, সিনিয়রদের কেউ শেষ পর্যন্ত সঙ্গ দিতে পারেননি।
কে জানে, সেটা হলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারত। ভারত থেকে প্রথমবার বাংলাদেশ ফিরতে পারত সুখস্মৃতি নিয়েই।