দেড় বছরেই সেই ভোজেসের অবসর
টেস্ট অভিষেকটা ছিল স্বপ্নের মতো। ‘বুড়ো’ বয়সে দলে সুযোগ পেয়েই করেছিলেন সেঞ্চুরি। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি বয়সে অভিষেকে (৩৫ বছর) সেঞ্চুরির রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছিলেন। তবে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরুর মাত্র দেড় বছরের মাথায় সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান অ্যাডাম ভোজেস। আগামীকাল সফরকারী শ্রীলংকার বিপক্ষে প্রাইম মিনিস্টার একাদশের ম্যাচে নামার আগেই জানিয়েছেন সিদ্ধান্তটা।
অথচ মাত্র ২০ টেস্টের ক্যারিয়ারে ভোজেসের দুর্দান্ত রেকর্ড দেখে যে কেউ ভাবতে পারেন, হুট করে এরকম সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? আসলে ইনজুরি ও বাজে ফর্মের কারণেই ধীরে ধীরে দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন। নিজেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরিয়ে নেওয়ার এটাই উত্তম সময় বলেই মানছেন, “আমার মনে হয় অবসর নেওয়ার সময়টা এসে গেছে। অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত দারুণভাবে উপভোগ করেছি। সবাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই কঠিন সময়ে আমার পাশে থাকার জন্য।অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলাটা অনেক মিস করবো।”
‘কঠিন সময়টাই’ আসলে ভোজেসের ক্যারিয়ারের ইতি টানার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী। নাহলে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের পর (অন্তত ২০ টেস্টের ক্যারিয়ারে ) সবচেয়ে বেশি গড়( ৬১.৭৮) নিয়ে ভোজেস কেন এত দ্রুত বিদায় বলবেন? প্রথম কয়েক টেস্টে রানের বন্যা বইয়ে দিলেও গত বছর ছন্দ হারিয়ে ফেলেন। সাথে যোগ হয় ইনজুরি। অন্যদিকে অজিদের দলে সম্ভাবনাময় তরুণ ক্রিকেটারের সংখ্যাও বাড়তে থাকে প্রতিনিয়তই। সবকিছু মিলিয়েই দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েন। গত নভেম্বর শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছেন। এরপরেই গুঞ্জন উঠেছিল, আর হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন না। নিকট ভবিষ্যতে জাতীয় দলে ফেরার আশাটা ছেড়ে দিয়েই বিদায় বলতে বাধ্য হচ্ছেন ভোজেস।
২০০৭ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক। ৬ বছরের ব্যবধানে ৩১টি ওয়ানডে খেলেছেন। শেষবার ভোজেসকে রঙ্গিন জার্সিতে দেখা গিয়েছিল ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে। যখন ভেবেছিলেন হয়তো কখনোই টেস্টে সুযোগ পাবেন না, তখনই 'মিরাকল' ঘটিয়ে দলে ডাক পান। ক্ষুদ্র এই টেস্ট ক্যারিয়ারকে বিদায় বলা ভোজেসের নামের পাশে থেকে যাবে গর্ব করার মতো এক কীর্তি। হাজার হোক, ডন ব্র্যাডম্যানের ঠিক পরেই অবস্থান করা তো চাট্টিখানি কথা নয়!