ব্রাভোই ফাইনালে নিলেন চিলিকে
পর্তুগালকে টাইব্রেকারে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে কনফেডারেশনস কাপের ফাইনালে উঠেছে চিলি। নির্ধারিত সময় শেষে খেলা গোলশূন্য থাকার পর অতিরিক্ত সময়েও গোলের দেখা পেতে ব্যর্থ হয় দুই দল। টাইব্রেকারে নেয়া পর্তুগালের তিনটি কিকই ঠেকিয়ে দিয়ে চিলির সেমি জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ক্লদিও ব্রাভো।
টাইব্রেকারে প্রথম কিকটি নিয়েছিলেন ভিদাল। এরপর একে একে সফল পেনাল্টি কিক নেন আরাঙ্গুইজ ও অ্যালেক্সিস সানচেজ। অন্যদিকে পর্তুগালের কোরেসমার নেয়া প্রথম কিকটি ঠেকিয়ে দিয়েই ম্যাচে চিলিকে মানসিকভাবে কিছুটা এগিয়ে দেন ব্রাভো। এরপর হুয়াও মোটিনহোর দ্বিতীয় কিকটিও একই ভাবে নিজের ডান দিকে ঝাপ দিয়ে ঠেকিয়ে দেন চিলিয়ান গোলরক্ষক। তৃতীয়বার ডাইভ দেন বা দিকে। এবার ব্যর্থ হন ন্যানি। আর প্রথমবারের মতো ফিফার কোনো টুর্নামেন্টে ফাইনালে ওঠার আনন্দে মেতে ওঠে চিলি। অথচ এই ব্রাভোই প্রিমিয়ার লিগে সিটির হয়ে নিজের ফর্ম ফিরে পেতে লড়াই করেছেন গেল মৌসুমে। মৌসুম জুড়ে ঠেকাতে পেরেছিলেন মাত্র তিনটি পেনাল্টি। আজ এক ম্যাচেই ফিরিয়ে দিলেন টানা তিনটি স্পট কিক!
খেলা টাইব্রেকারে গড়ানোয় অবশ্য নিজেদের কিছুটা ভাগ্যবানই ভাবতে পারে পর্তুগাল। ১১৯ মিনিটে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে ভিদাল ও রদ্রিগেজের শট পর্তুগালের বারপোস্টে লেগে ফেরত না আসলে আরও আগেই ম্যাচ জিতে নিতে পারত চিলি।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট অবশ্য লড়াইটা হয়েছে সমানে সমান। প্রথম দশ মিনিটেই দুই দল পেয়ে গিয়েছিল গোলের সহজ সুযোগ। এক প্রান্তে ভার্গাসের শট ঠেকিয়ে দেন রুই প্যাট্রিসিও। অন্য প্রান্তে রোনালদোর ক্রস থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন আন্দ্রে সিলভা। আন্দ্রে সিলভার কাছে অবশ্য পুরো ম্যাচেই এসেছিল দারুণ সব সুযোগ। তবে কাজের কাজটা করতে পারেননি তিনি।
প্রথমার্ধে বলের দখলে এগিয়ে থাকলেও ফাইনাল থার্ডে সুবিধা করতে পারছিল না চিলি। অ্যালেক্সিজ সানচেজ ত্রাস ছড়িয়েছেন পুরো ম্যাচেই। তবে গোলের দেখা পেতেও তিনি ব্যর্থ। দ্বিতীয়ার্ধে বারপোস্টে লেগে বাইরে দিয়ে চলে যায় সানচেজের নেয়া একটি শটও। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম সুযোগটা অবশ্য এসেছিল ভিদালের কাছে। হেড করে মেরেছিলেনও বিউসেজোয়ের একটি ক্রস। কিন্তু লক্ষ্যে আঘাত আনতে পারেননি। ম্যাচের এক ঘন্টা পার হওয়ার কিছুক্ষণ আগে রাতে প্রথমবারের মতো গোলের সামনে দেখা মেলে রোনালদোর। বক্সের ভেতর কিছুটা জায়গাও পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর প্রচেষ্টাও ফিরিয়ে দেন ব্রাভো। এরপর বাকিটা সময় দুই দলের সতর্ক অবস্থান আর নির্ভুল খেলায় গোলশুন্যভাবেই শেষ হয় দ্বিতীয়ার্ধও।
অতিরিক্ত সময়ে পর্তুগাল নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরিতে ব্যর্থ হলেও চিলি বেরিয়ে আসে নিজেদের খোলস ছেড়ে। আক্রমণাত্মক খেলে ৯৫ মিনিটে সাজানো এক আক্রমণ থেকে সানচেজের হেড এবার চলে যায় বারপোস্টের একটু উপর দিয়ে। এরপর ১১৯ মিনিটে প্রথমে ভিদাল ও পরে রদ্রিগেজ আঘাত আনেন বারে। দিনশেষে অবশ্য ফাইনালে ওঠার আনন্দে সব আফসোসই ম্লান হয়ে গেছে ভিদাল, সানচেজদের।