মাহেলার একটা 'শেষ', আরেকটা 'চ্যালেঞ্জ'
ইংল্যান্ডের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের এবারের আসরে ল্যাঙ্কাশায়ার লাইটনিংসের হয়ে খেলার কথা ছিল মাহেলা জয়াবর্ধনের। শেষ পর্যন্ত খেলেননি, ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে সরিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। এর আগেই ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কোচ ছিলেন, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খুলনা টাইটানসের কোচ হিসেবেও আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল তার নাম। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়ও করে দেয়া হলো। তবে কি শেষই হয়ে গেল প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে মাহেলা জয়াবর্ধনের ক্যারিয়ার?
‘হ্যাঁ। ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে খেলাটা হতো আমার শেষ কাজের মতো, ক্রিকেটার হিসেবে’, খুলনার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন জয়াবর্ধনে, ‘কিন্তু অবশ্যই, আইপিএল বা যা কিছু হয়েছে এর আগে, আমাকে বেশ ব্যস্ত থাকতে হয়েছে সেসব নিয়ে। আমার একটা বিরতি দরকার ছিল। আর আগে যেমন বলেছি, আমার একটা সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য আছে, ব্যক্তিগত একটা লক্ষ্য। আমার মনে হয় প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে আর নিজেকে খেলতে দেখবো না আমি।’
‘তবে প্রদর্শনী ম্যাচ আছে, দাতব্য ম্যাচ আছে। আবার অবসর নেয়া ক্রিকেটারদের জন্য অলস্টারস টুর্নামেন্ট আছে। যেটা আমরা সবাই উপভোগ করি। তবে সবকিছুর পরও, প্রথম শ্রেণি, আন্তর্জাতিক যে নামেই ডাকুন না কেন, আমার খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ার আসলে শেষ হয়ে গেছে।’
সেই ক্যারিয়ারটা শেষ হয়ে গেলেও আরেকটা ক্যারিয়ার শুরু হয়ে গেছে আগেই। তবে সেই কোচিং নিয়ে ‘ব্যাক্তিগত লক্ষ্যে’র মতো একটা ‘ব্যক্তিগত মত’ আছে জয়াবর্ধনের। সেটা অবশ্য কোচ খুঁজে বেড়ানো শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলের সঙ্গে কিছু নয়। ম্যাথিউসদের কোচ হওয়ার খবরটাকে গুঞ্জন বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ‘কোচিং(স্থায়ীভাবে) আসলে আমার মনে সেভাবে নেই। আমি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক দলগুলোর সাথে কাজ করছি। আমি সবসময় বলেছি, অবসরের পর ক্রিকেট আমার জন্য পূর্ণ মেয়াদের কোনো চাকরি হবে না। জীবনে আমার আরও অনেক কিছু করার আছে। এটা আমার জন্য আনন্দের একটা বিষয়। এই খেলার একটা অংশ হওয়া, উপভোগ করা। এটা কোনো চাকরি নয়, এটা খেলার প্রতি আমার একটু অবদান রাখা।’
শুধু ক্রিকেটকে কিছু ফিরিয়ে দেয়া নয়, কোচিংয়ের কাজটা তার কাছে একটা চ্যালেঞ্জও, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খেলে বেড়িয়েছি। যে কাউন্টিতে ব্যস্ততার কারণে খেলতে পারিনি, সেখানেও খেলেছি। বিভিন্ন দেশের নানা সংস্কৃতি জেনেছি। এটাই আমি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করি। এ কারণে এটা আমার জন্য কোনো চাপ মনে হয় না। যখন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কোচ ছিলাম, সেটা বোধহয় সবচেয়ে বড় ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর একটা। আমি এটাকে কোচিং হিসেবে দেখি না। এটাকে ক্রিকেটের প্রতি নিবেদন হিসেবে দেখি, নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানানোর একটা উপায় হিসেবে দেখি। বলতে পারেন, কোনো কিছুকে অন্য একটা দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার উপায় এটা।’
সেই দৃষ্টিতে এবার খুলনা টাইটানসকে দেখবেন তাদের ‘কোচ’ জয়াবর্ধনে। ক্রিকেটকে কিছু ফিরিয়ে দেবেন। নতুন চ্যালেঞ্জ জানবেন। মাঠের ক্রিকেটের প্রতিযোগিতাটা উপভোগ করবেন মাঠের বাইরে থেকেই। শুধু নামবেন না ওই ব্যাট হাতেই।