'বার্সা তো এখন ঘুমুচ্ছে'
ছোট ছোট পাসের দৃষ্টিনন্দন ‘টিকি-টাকা’য় ফুটবলবিশ্বকে সম্মোহিত করে রেখেছিল গার্দিওলার বার্সা। শৈল্পিক ফুটবলের পাশাপাশি ‘লা মাসিয়া’ থেকে তরুণদের পর্যাপ্ত সু্যোগ দেওয়ার ফলাফলটাও হাতেনাতে পেয়েছিল কাতালানরা। পুয়োল, ইনিয়েস্তা, জাভিও, মেসিদের হাতেই উঠেছিল ট্রেবল, হেক্সা। কিন্তু গার্দিওলা-পরবর্তী যুগে টিকিটাকার প্রস্থানের পাশাপশি মূল দলে একাডেমীর তরুণদের খেলার সুযোগও কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। চিরাচরিত দর্শন থেকে প্রিয় ক্লাবের এভাবে সরে আসাটা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না কিংবদন্তী জাভি হার্নান্দেজ। প্রাণের ক্লাবের বর্তমান অবস্থায় হতাশ হয়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “বার্সা তো এখন ঘুমুচ্ছে!”
জাভির সময় বার্সার স্কোয়াডের বেশীরভাগই ছিলেন ‘একাডেমী গ্র্যাজুয়েট’। কিন্তু এখন যেন ব্যাপারটা একেবারেই উল্টো। সুযোগের অভাবে ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে ক্লাব ছেড়েছেন প্রতিশ্রুতিশীল একাধিক তরুণ, মূল স্কোয়াডে জায়গা পেয়েছেন কেবল দেনিস ও রবার্তো। ক্রুইফের দর্শনের বিপরীত পথে হাঁটতে থাকা বর্তমান বার্সার সম্পর্কে জাভি বলেছেন, “আত্মতুষ্টিই বার্সাকে পুড়িয়েছে। আমাদের সময়ে একাডেমীর খেলোয়াড় দিয়েই একাদশ নামানো যেত। সবাই ভাবছিল, ভবিষ্যতেও এমনটাই হবে। কিন্তু ফুটবল এমন না। তরুণদের মূল দলে সুযোগ না দেওয়াটা হতাশাজনক। এভাবে চলতে থাকে লা মাসিয়াতে প্রতিভাবান কেউই থাকবে না। বার্সা-বি দ্বিতীয় বিভাগে ফিরলেও প্রমোশন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত না। তরুণদের বার্সার দর্শনে, মূল দলে খেলার উপযোগী করে তোলাটাই মূল উদ্দেশ্য। গার্দিওলা যখন এসেছিলেন, তখন বার্সা-বি চতুর্থ বিভাগে ছিল। সেখান থেকে তিনি বুস্কেটস, পেদ্রোদের মূল দলে সুযোগ দিয়েছিলেন”।
লা মাসিয়া থেকে প্যালেন্সিয়া, কুকুরেলা ও অ্যালেনা মূল দলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক-মৌসুমের প্লেন ধরলেও জাভির কাছে সংখ্যাটা নেহায়েতই কম। বলেছেন, “বি দলে কমপক্ষে ৮-৯ জন খেলোয়াড় থাকা উচিত যারা যেকোনো সময় দলের প্রয়োজনে মূল দলের হয়ে মাঠে নামতে পারে। সংখ্যাটা এত কম হওয়া আসলেই হতাশাজনক”।
দলবদলে কাতালানদের নিষ্ক্রিয়তায়ও হতাশ জাভি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল যেখানে অনূর্ধ্ব-২১ ইউরোর সেরা খেলোয়াড় দানি সেবায়োসকে দলে ভিড়িয়েছে, সেখানে চাইনিজ লিগের পাউলিনহোকেই দলে ভেড়াতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে বার্সা। দলে এসেছেন কেবল সেমেদো ও দেউলোফেউ। এখনো একজন বিশ্বমানের মিডফিল্ডারকে দলে ভেড়াতে মরিয়া বার্সা। ভেরাত্তি, কৌতিনহোর নাম শোনা গেলেও এখনো সেই সম্ভাবনা জোরালো নয় বলেই মনে হচ্ছে।