• লা লিগা
  • " />

     

    'কাতালান মানেই স্পেন বিরোধী নয়'

    'কাতালান মানেই স্পেন বিরোধী নয়'    

    স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার কাতালুনিয়ায় চলছে আন্দোলন। গণভোট ঘিরে স্পেন ও কাতালুনিয়ার মধ্যে যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়েছিল, সেখানে ভোট দিয়েছিলেন জেরার্ড পিকেও। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ খেলতে এখন স্পেন দলের সঙ্গেই আছেন বার্সেলোনা ডিফেন্ডার। স্পেনের হয়ে খেলার সময় দুয়ো শুনেছেন আগেও, তবে এবার অনুশীলনের সময়ও সমর্থকদের দুয়ো শুনতে হয়েছে তাকে। পিকের ছবি সংবলিত পোস্টার বিকৃতির ঘটনাও ঘটেছে স্পেনের বিভিন্ন শহরে।

    আলবেনিয়ার সঙ্গে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সবচেয়ে আরাধ্য খেলোয়াড় পিকেই। আজ অনুশীলন শেষে পিকে নিজেই এসেছিলেন, নিজের মনের কথাগুলোই খুলে বলেছেন তিনি প্রেসের সামনে।

    ‘শুরুতেই একটা ব্যাপার পরিষ্কার করতে চাই। এখানে আমি নিজের ইচ্ছাতে এসেছি। আমার মনে হয়েছে কিছু ব্যাপারে কথা বলা দরকার।‘ – স্বেচ্ছায় সংবাদ সম্মেলনে আসার কথাটা প্রথমেই বলে নিয়েছেন পিকে। এরপরই কথা বলেছেন সমর্থকদের তার প্রতি দেখানো বিরূপ আচরণ নিয়ে। পরিস্থিতিটা যে তার জন্য কঠিন সেটা অকপটেই স্বীকার করে নিলেন তিনি।

    ‘প্রথম অনুশীলনটা কঠিন ছিল। যারা আপনাকে সমর্থন যোগাত তাদের বিদ্রুপ ভালো না লাগাটাই স্বাভাবিক। তারাই এখন আমার বিপক্ষে। তবে এটাকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছি, আমাকেই এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। স্পেনে অনেক মানুষ, তাদের নানান মত। আর আমি যখন ‘স্পেন’ বলছি তখন অবিভক্ত স্পেনেকে বোঝাচ্ছি।



    ‘ আমার কোচ এবং সতীর্থরাই জানিয়েছে তাদের আমাকে প্রয়োজন। আমার লক্ষ্য ঠিক রাখতে হবে, বিশ্বকাপের খুব কাছাকাছি আমরা। দলের সুবিধা হলে আমি জাতীয় দল থেকে অবসর নিতেও রাজি ছিলাম। কিন্তু তাতে বিদ্রুপ করা লোকগুলোই খুশি হত কেবল’। - জানাচ্ছেন পিকে।

    সমর্থকদের অনেকেই পিকের জাতীয় দলে পিকের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পিকের কাছে সেই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে পেশাদারিত্বের কথাই বলেছেন তিনি। জাতীয় দলকে অভিহিত করেছেন ‘একটা পরিবার’ বলে।

    ‘এটা অসম্ভব! দলে আমার দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে না। আমি এখানে খেলার জন্য লড়াই করেছি। এই দলটা আমার কাছে একটা পরিবারের মতো। ১৫ বছর বয়স থেকেই দলের সাথে আছি। এ কারণেই এখনও রয়ে গেছি। জাতীয় দলের হয়ে খেলতে পারা আমার জীবনের অন্যতম সেরা অর্জন।‘

     


                                    আরও পড়ুনঃ রুদ্ধ ন্যু ক্যাম্পে 'শুদ্ধ' কাতালুনিয়া



    কাতালুনিয়া নাকি স্পেন, কোন দলে খেলতে চান? কাতালুনিয়ার স্বাধীনতা চাইলে কেনই বা স্পেনের জার্সি গায়ে চড়াতে চান? এমন প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন পিকে।

    ‘একজন স্বাধীনতাকামী স্পেনের হয়ে খেলতে পারে। কারণ কাতালান কোনো দল তো নেই। যেহেতু নেই তাই এই প্রশ্ন অবান্তর। আমার জাতীয়তা কাতালান মানে এই নয় আমি স্পেন বিরোধী।‘ – তার ‘বিপক্ষের’ সমর্থকদের এক হাত নিয়েছেন পিকে। স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীন হোক বা হোক কাতালুনিয়াবাসীর ভোট দেয়াটা গণতান্ত্রিক অধিকার, এবং সেই অধিকারের প্রতি সম্মান জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

    কাতালুনিয়া আলাদা হয়ে গেলে কোন দলে খেলবেন সে প্রশ্ন অবশ্য এড়িয়েই গেছেন পিকে। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন শেষ করেছেন দারুণ এক উদাহরণ টেনে। ‘স্পেন আর কাতালুনিয়ার সম্পর্ক পিতা-পুত্রের মতো। ছেলের বয়স ১৮ হয়ে গেছে- সে বাড়ি ছাড়তে চায়, আলাদা হতে চায়। কিন্তু স্পেনের কাছে বিকল্প আছে। সে চাইলে ছাড়তেও পারে, ধরে রাখতে পারে। কিন্তু সবকিছুই হতে পারে সমঝোতার ভিত্তিতে। একসাথে কথা বলে।’ – কাতালুনিয়া আর স্পেনের সঙ্কট নিরসনে দুই পক্ষের এক সাথে বসা উচিত বলেই মনে করছেন পিকে।