চোখের জলেই বিদায় বললেন কাকা
অরল্যান্ডো সিটির স্টেডিয়ামে গতকাল রাতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রায় ২৬ হাজার দর্শক। স্টেডিয়ামের যে প্রান্তেই ক্যামেরা ঘুরছে, ভক্তদের গায়ে কেবল একজনের নামের জার্সি, হাতে তাঁর নামেরই প্ল্যাকার্ড। পুরো স্টেডিয়ামই তো কাল ছিল কাকা-ময় । মেজর সকার লিগে অরল্যান্ডোর হয়ে শেষবারের জন্য মাঠে নেমে নিজের আবেগটা ধরে রাখতে পারেননি কাকা। অশ্রুভেজা চোখেই বিদায় বলেছেন ক্লাবকে। পরের ঠিকানা কোথায় হবে, তা জানাননি এখনো। বুটজোড়া পাকাপাকি তুলে রাখলেন কি না, সেই ফিসফাসও তাই উঠে যাচ্ছে।
তিন মৌসুম কাটানোর পর ক্লাবের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলার ঘোষণা গত সপ্তাহেই দিয়েছিলেন। ক্লাবের হয়ে ৭৩ ম্যাচে ২৪ গোল করা কাকার বিদায়ের দিনে ভক্তরাও তাই ‘প্রস্তুতি’ নিয়েই দেখতে এসেছিলেন অরল্যান্ডো সিটি- কলম্বাস ক্রুর ম্যাচ। যতবারই কাকার মুখে ক্যামেরা ধরা হচ্ছিল, পুরো স্টেডিয়ামই ভরে উঠছিল করতালিতে। এসব দেখে কাকাও খানিকটা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। রেফারির ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজানোর আগে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি। তাঁর ভেজা চোখ নজর এড়ায়নি কারোর।
শেষ ম্যাচটা অনুমেয়ভাবেই স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন কাকা। ম্যাচের ২০ মিনিটে এসেছিল সেই সুযোগও। ট্রেডমার্ক ফ্রি কিকে গোল হতে হতেও হয়নি, অল্পের জন্য পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায় বল। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় কাকাকে।
ম্যাচ শেষে কাকা বলছেন, বিদায় বলাটা তাঁর জন্য সহজ ছিল না, “এই ম্যাচটা আমার জন্য খুব বেশি আবেগের ছিল। মাঝে মাঝে তো খেলতেই পারছিলাম না, অনেক কিছু ঘুরপাক খাচ্ছিল মাথায়। বিশেষ একটা ম্যাচ ছিল এটা। জয় দিয়েই শেষ করতে চেয়েছিলাম, সেটা হয়নি। তবে বিদায়টা কিন্তু কোনো অংশেই খারাপ হয়নি আমার জন্য। এই ক্লাব আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে। তাদের ছেড়ে যাওয়া আমার জন্য অনেক কষ্টের।”
ম্যাচের ফলাফলের চেয়েও মুখ্য হয়ে উঠেছিল কাকার বিদায়। ম্যাচের সময় মাঠে ঢুকে পড়ে দুই ক্ষুদে ভক্ত, কাকাকে জড়িয়ে ধরে বেশ কিছুক্ষণ কথাও বলেছে তারা। রেফারিও এতে বাধা দেননি! শেষ বাঁশি বাজার পর ভক্তদের কাছে গিয়ে বিদায় বলেছেন। ভক্তরাও চোখের জলে বিদায় জানিয়েছেন কাকাকে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণাটা এখনও আসেনি। তবে কাকার সাম্প্রতিক কথায় ইঙ্গিতটা স্পষ্ট। সেটা সত্যি হলে গতকালই শেষ হলো ‘কাকা-অধ্যায়ের’।