• বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ ২০১৫
  • " />

     

    নতুন করে লেখা হলো যেসব রেকর্ড!

    নতুন করে লেখা হলো যেসব রেকর্ড!    

    শেষ দুইদিনে পাকিস্তানি বোলারদের নাকানিচুবানি খাওয়ায়ে তামিম-ইমরুলরা মেতে উঠেছিলেন একের পর এক রেকর্ড ভাঙাগড়ার খেলায়। এক ঝলকে দেখে নিন উল্লেখযোগ্য রেকর্ডগুলো... 

     

     

    - প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ৫৫০ রান সংগ্রহ। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ঢাকা টেস্টে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে ৫২১ রানের বিশ্বরেকর্ড চেজের পথে ছুটছিলো বাংলাদেশ। সে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ৪১৩ করে অল আউট হয় বাংলাদেশ। দলীয় দ্বিতীয় ইনিংসের হিসেবে সেটাই ছিল এতোদিন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান। সেই রেকর্ড ভেঙে আজকের টেস্টে বাংলাদেশ করলো ৫৫৫/৬।

     

    - আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব শাখায় বাংলাদেশের পক্ষে ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন তামিম। (টেস্টে ২০৬ রান বনাম পাকিস্তান, ওয়ানডেতে ১৫৪ রান বনাম জিম্বাবুয়ে আর টিটুয়েন্টিতে ৮৮ রান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

     

    - ২০৬ রান করে টেস্টে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করার পথে তামিম ছাড়িয়েছেন ২০১৩ সালের গল টেস্টে মুশফিকের ২০০-কে। এক টেস্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড হিসেবেও সেই গল টেস্টেরই আশরাফুলের ২১২ (১৯০+২২) কে ছাড়িয়ে তামিম এই টেস্টে করলেন ২৩১ রান (২৫+২০৬)।

     

    - টেস্টে ৭টি সেঞ্চুরি নিয়ে আশরাফুলকে ছাড়িয়ে এককভাবে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরির মালিক তামিম। সাথে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৮০০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তিনি।

     

    - ৩০২৬ রান নিয়ে টেস্টে বাংলাদেশের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান হাবিবুল বাশারের। ২৯৭৪ রান নিয়ে সুমনের ঘাড়ের কাছেই নিঃশ্বাস ফেলছেন তামিম। হাবিবুলকে ছাড়িয়ে যেতে প্রয়োজন আর মাত্র ৫২ রান। আশা করা যায়, তামিম পরের ম্যাচেই এই রেকর্ডেরও মালিক হয়ে যাবেন। তবে টেস্ট গড় নিয়ে হাবিবুল বাশারের একটা আফসোস আছে। হাবিবুল চেয়েছিলেন তার ক্যারিয়ার শেষে ন্যূনতম গড় হবে ৪০ রান। মুমিনুলের অবিশ্বাস্য ব্যতিক্রমী ক্যারিয়ার বাদ দিলে বাংলাদেশের পক্ষে তামিমই প্রথম ৪০ এর গড় পার করলেন।

     

    - বাংলাদেশে কেউ আগে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি করতে পারেননি। তামিম করলেন টানা ৩ টেস্টে সেঞ্চুরি আর ইমরুলও সেঞ্চুরি পেলেন টানা ২ টেস্টে।

     

    - জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঠিক আগের টেস্টেই তামিম-ইমরুল দুইজনই করেছিলেন শতরান, গড়েছিলেন দ্বিশতক রানের জুটি। বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয়বারের মতো ওপেনিংয়ে নেমে দুই ব্যাটসম্যানই সেঞ্চুরি পেলেন। পাকিস্তানের সাথে দ্বিতীয় ইনিংসে আগে কোন দলের দুই ওপেনারই সেঞ্চুরি করতে পারেনি। তামিম-ইমরুলই প্রথমবারের মতো তা করে দেখালেন। একইসাথে, ১৯৩৬ সালে ম্যানচেস্টার টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের বিজয় মার্চেন্ট (১১৪) আর মুশতাক আলীর (১১২) পরে এশিয়ান কোন দল হিসেবে টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দুই ওপেনারই সেঞ্চুরি পেলেন।

     

    - পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে আগে সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিলো ১৯৭৮ সালের লাহোর টেস্টে সুনীল গাভাস্কার (৯৭) আর চেতন চৌহানের (৯৩) ১৯২ রানের জুটিটি। বলাই বাহুল্য, তামিম-ইমরুল এই রেকর্ডও ভেঙ্গেছেন (৩১২)।  

     

    - তামিম-ইমরুলের জুটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ৩০০ রানের জুটি। বলাই বাহুল্য যে এই জুটি ২০১৩ গল টেস্টের আশরাফুল-মুশফিকের ২৬৭ রানের জুটিকে ছাড়িয়ে গেছে।

     

    - ম্যাচের তৃতীয় অথবা চতুর্থ ইনিংসে, অর্থাৎ দলীয় দ্বিতীয় ইনিংসে, উদ্বোধনী জুটির সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড এখন তামিম-ইমরুলের! সেই ১৯৬০ সালে ওভাল টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে কলিন কাউড্রে আর জিওফ পুলার উদ্বোধনী জুটিতে ২৯০ রান করেছিলেন। তামিম-ইমরুল তাদের জুটিটাকে টেনে নিলেন ৩১২ পর্যন্ত। তৃতীয়/চতুর্থ ইনিংসের হিসেবে এটা যেকোনো উইকেট জুটিতে দশম সর্বোচ্চ। ১৯৬০ সালের ম্যাচটিতে ওই একই জুটিতে কাউড্রে আর পুলার দুইজনেই করেছিলেন দেড় শতাধিক রান (জিওফ পুলার ১৭৫, কলিন কাউড্রে ১৫৫)। তামিম আর ইমরুল দলীয় দ্বিতীয় ইনিংসে এখন দ্বিতীয় ওপেনিং জুটি যাদের নামের পাশে আছে ১৫০ রান (তামিম ২০৬, ইমরুল ১৫০)। 

     

    - বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিং পার্টনারশিপে আগের টেস্টেই নিজেদের করা সর্বোচ্চ ২২৪ রানের জুটি পার করেছেন নিজেরাই। দ্বিতীয় ইনিংস হিসেবে নিলে ২০১০ সালে লর্ডসে ১৮৫ করেছিলেন তামিম-ইমরুল। খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে তামিম-ইমরুল সেটাও পার করলেন।

     

    - তামিম-ইমরুল বল খেলেছেন ৪৫৪ টি। আশরাফুল-মুশফিকের ২৬৭ রানের জুটি গড়ার সময় তারা খেলেছিলেন ৫১৮ বল। তবে এটা পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ বল খেলার জুটি।

     

    - দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ জুটি এতোদিন ছিল জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার আর মারে গুডউইনের। ১৯৯৮ সালে বুলাওয়ে টেস্টে ২৫ রানে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পর অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার (১০০*) আর গুডউইন (১৬৬*) মিলে যোগ করেছিলেন হার-না-মানা ২৭৭ রান। তামিম-ইমরুল সেটা পার করে করলেন ৩১২ রান।

     

    - একই ইনিংসে দুই ওপেনারের ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে বাংলাদেশের বিপক্ষেই। তবে টেস্ট ইতিহাসে দুই দলের ওপেনারই (তামিম-হাফিজ) ডাবল সেঞ্চুরি করলেন এই প্রথম।

     

    - জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঠিক আগের টেস্টেই দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮২২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। রেকর্ড ছাড়িয়ে আজকে তা দাঁড়িয়েছে ৮৮৭ রানে।