• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    কিক অফের আগেঃ মরিনহোর মৌসুম বাঁচানোর ‘শেষ’ সুযোগ?

    কিক অফের আগেঃ মরিনহোর মৌসুম বাঁচানোর ‘শেষ’ সুযোগ?    

    এবার গেরো কাটাবেন মেসি?

    চেলসি বনাম বার্সেলোনা; প্রথম লেগ; ২০(২১) ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশ সময় ১.৪৫, টেন ২

     

    চ্যাম্পিয়নস লিগে এই দু দলের আগের লড়াইগুলো জন্ম দিয়েছে অনেক ঘটনার। ২০০৯ এ চেলসিকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল বার্সেলোনা। তিন বছর পর ন্যু ক্যাম্পে বার্সার বিদায় ঘন্টা বাজিয়ে দিয়ে প্রতিশোধটা নিয়েছিল চেলসি। এবার আবার মুখোমুখি দুই দল, দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলাতেই! সাম্প্রতিক ফর্মের বিচারে দু'দলের আছে দুই মেরুতে। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বার্সা লা লিগার শীর্ষে আছে প্রায় মাস ছয়েক ধরে, চেলসির  খুঁজছে নিজেদের হারিয়ে।

     

     

    ফর্মের বিচারে এগিয়ে থাকলেও নিজেদের ফেভারিট মানতে নারাজ বার্সা কোচ এর্নেস্তো ভালভার্দে, “চ্যাম্পিয়নস লিগ একেবারেই ভিন্ন ধাঁচের একটি টুর্নামেন্ট। এখানে ফর্মের তেমন প্রভাব পড়ে না। ম্যাচের দিন যে ভাল খেলে, সে-ই জেতে। আমার মনে হয় না এই টাইয়ে আমরা ফেভারিট কারণ চেলসি দুর্দান্ত একটি দল”। ওদিকে লিগে অবস্থা তেমন সুবিধার না হলেও বার্সার বিপক্ষে ম্যাচের আগে বেশ আত্মবিশ্বাসীই মনে হল কন্তেকে, “বার্সা প্রতি মৌসুমেই চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অন্যতম দাবিদার। তারাই এবার পরিষ্কার ফেভারিট। কিন্তু আমরা মনোবল হারাচ্ছি না”।

    সুয়ারেজ বনাম অ্যাজপিলিকুয়েতা, মেসি বনাম হ্যাজার্ড, কান্তে বনাম বুস্কেটস, ফাব্রেগাস বনাম ইনিয়েস্তা, মোরাতা বনাম পিকে- ইউরোপের অন্যতম ‘হাইভোল্টেজ’ ম্যাচে এই একক লড়াইগুলোই গড়ে দিতে পারে ম্যাচের ভাগ্য। চেলসিতে পাড়ি জমানোর পর এবারই প্রথম সাবেক ক্লাব বার্সার বিপক্ষে মাঠে নামছেন সেস্ক ফাব্রেগাস এবং পেদ্রো রড্রিগেজ। ওদিকে রিয়াল মাদ্রিদের একাডেমী থেকে উঠে আসায় নিজের ‘সাবেক’ চিরশত্রুর বিপক্ষে দলকে জেতানোর জন্য বাড়তি এক অনুপ্রেরণা ঠিকই কাজ করবে আলভারো মোরাতা এবং মার্কোস আলোন্সোর মাঝে। দু’দলের মাঝে শেষ ৫ ম্যাচের ৪টিই হয়েছে ড্র, অন্যটিতে জয় চেলসির।

    বার্সার বিপক্ষে মিডফিল্ডার তিয়েমুয়ে বাকায়োকোকে পাচ্ছেন না কন্তে। এছাড়া বাকি সবাই-ই থাকবেন মূল একাদশেই। ইনজুরি কাটিয়ে লেফটব্যাকে খেলবেন আলোন্সো। ওদিকে থমাস ভার্মাইলেন (ইনজুরি) এবং নেলসন সেমেদোকে (বহিষ্কারাদেশ) পাবেন না ভালভার্দে। লিভারপুলের হয়ে ইতোমধ্যেই এই মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলায় বার্সার ইউসিএল স্কোয়াডে জায়গা পাননি ফিলিপ কুতিনিয়ো।

     

    সম্ভাব্য একাদশঃ

    চেলসি (৩-৪-৩): কর্তোয়া; অ্যাজপিলিকুয়েতা, রুডিগার, কাহিল; মোজেস, ফাব্রেগাস, কান্তে, আলোন্সো; উইলিয়ান, মোরাতা, হ্যাজার্ড।

    বার্সেলোনা (৪-৪-২): টার স্টেগেন; রবার্তো, পিকে, উমতিতি, আলবা; বুস্কেটস, ইনিয়েস্তা, পাওলিনিয়ো, রাকিটিচ; মেসি, সুয়ারেজ।

     

    মরিনহোর মৌসুম বাঁচানোর ‘শেষ’ সুযোগ?

    সেভিয়া বনাম ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড; ২১ (২২) ফেব্রুয়ারী, বাংলাদেশ সময় ১.৪৫; টেন ২

     

    নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির সাথে পাল্লা দিয়ে মৌসুমটা দারুণভাবেই শুরু করেছিল ইউনাইটেড। কিন্তু দলের মূল তারকারা ফর্মহীনতায় ভোগায় লিগের আশা শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। বাদ পড়েছে কার্লিং কাপ থেকেও। এফএ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছালেও মূলত চ্যাম্পিয়নস লিগের ফলাফল দিয়েই বিচার করা হবে হোসে মরিনহোকে। সংবাদ সম্মেলনে এমনটাও নিজেও স্বীকার করে নিয়েছেন এই পর্তুগিজ কোচ, “এফএ কাপ জেতাটা অবশ্যই আমাদের জন্য দারুণ। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগে ভাল করাটাই মূল”। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলতে আসলেও প্রতিপক্ষ সেভিয়াকে সমীহই করছেন মরিনহো, “সেভিয়া গত কয়েক বছর ধরে ইউরোপের অন্যতম ধারাবাহিক দল। তারা দু’বার ইউরোপা লিগের শিরোপা ঘরে তুলেছে। চ্যাম্পিয়নস লিগেও তারা বেশ ভালোই করছে। তাদের টপকাতে হলে নিজেদের সেরাটাই দিতে হবে আমাদের”।

     

     

    সেভিয়ার মাঠ স্তাদিও রামোন সানচেজ পিজুয়ানে প্রথম লেগের আগে মূল একাদশের অনেককেই পাচ্ছেন না মরিনহো। ইব্রাহিমোভিচ, ক্রিস স্মলিং, ফিল জোনস, মার্কোস রোহোদের কেউই থাকছেন না- এমনটা নিশ্চিত করেছেন তিনি। ওদিকে পল পগবা, মার্কাস রাশফোর্ড, আন্দার হেরেরাদের ফিটনেসও প্রশ্নবিদ্ধ। সব মিলিয়ে খুব একটা স্বস্তিতে নেই ইউনাইটেড। ইউনাইটেডের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন দৃশ্য সেভিয়ার। মৌসুমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে পূর্ণশক্তির স্কোয়াডই হাতে পাচ্ছেন কোচ ভিন্সেঞ্জো মন্তেয়া।

     

    সম্ভাব্য একাদশঃ

    সেভিয়া (৪-২-৩-১): রিকো; নাভাস, মার্কাদো, লঙ্গলে, লায়ুন; মেসা, এন’জঞ্জি, সারাবিয়া, ভাজকেজ, কোরেয়া; বেন ইয়েদের

    ম্যান ইউনাইটেড (৪-২-৩-১): ডি গেয়া; ভ্যালেন্সিয়া, বাই, লিন্দেলফ, ইয়ং; মাতিচ, ফেলাইনি; মার্শিয়াল, মাতা, সানচেজ; লুকাকু

     

    হেইঙ্কেসের জাদুতে ইউরোপেও

    বায়ার্ন বনাম বেসিকতাস; ২০(২১) ফেব্রুয়ারি; বাংলাদেশ সময় ১.৪৫, সনি সিক্স

     

    বর্ষীয়ান কোচ কার্লো আঞ্চেলত্তির অধীনে গত মৌসুমে বুন্দেসলিগা এবং জার্মান কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু এই মৌসুমের শুরু থেকেই যেন সুরটা কেটে যাচ্ছিল বারবার। একের পর এক গড়পড়তা পারফরম্যান্সে একটা সময় তো জার্মান লিগটেবিলের চার নম্বরেই নেমে গিয়েছিল ‘বাভারিয়ান’রা। পিএসজির বিপক্ষে গ্রুপপর্বে ৩-০ গোলের হারের পর চাকরিচ্যুত হন আঞ্চেলত্তি। প্রিয় ক্লাবের ডাকে অবসর ভেঙ্গে তার স্থলাভিষিক্ত হন ইয়ুপ হেইঙ্কেস, যার অধীনে ১২-১৩ মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জিতেছিল বায়ার্ন।

     

     

    এরপর আর পেছনে তাকানো নয়। দুর্দান্ত ধারাবাহিকতায় বুন্দেসলিগার শীর্ষস্থান পুনরোদ্ধার করেছে তারা, সেই সাথে পৌঁছে গেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলতেও। ১৭-১৮ ইউসিএল মৌসুমের অন্যতম ‘হট কেক’ বেসিকতাসের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে বেশ চাপমুক্তই মনে হল হেইঙ্কেসকে, “গত বছরের শেষদিক থেকেই আমরা দারুণ ফর্মে আছি। বেসিকতাসের বিপক্ষে ম্যাচ দুটি বেশ কঠিনই হবে, কারণ তারা এই মৌসুমে দারুণ খেলছে। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়া নিয়ে আমরা বেশ আশাবাদী”।

     

     

    গোলরক্ষক মানুয়েল নয়্যার বাদে কালকের ম্যাচের জন্য বাকি সবাইকেই পাচ্ছেন হেইঙ্কেস। ওদিকে ইনজুরির জন্য কাভলাক, আন্তিচ, টসিচদের কাউকেই পাচ্ছে না বেসিকতাস।

     

    সম্ভাব্য একাদশঃ

    বায়ার্ন (৪-২-৩-১):  উলরিখ; কিমিচ, বোয়াটেং, আলাবা; মার্টিনেজ, ভিদাল; মুলার, হামেস, কোমান’ লেভানডফস্কি

    বেসিকতাস (৪-২-৩-১): ফাব্রি; গোনুল, পেপে, মেডেল, আদ্রিয়ানো; হাচিনসন, ওজিয়াকুপ; কারেজমা, তালিসকা, বাবেল; ভাগনার লাভ

     

    সাত বছর আগের প্রতিশোধ নেবে রোমা?

    শাখতার দনেৎস্ক বনাম রোমা; ২১(২২) ফেব্রুয়ারি; বাংলাদেশ সময় ১.৪৫; সনি সিক্স

     

    চ্যাম্পিয়নস লিগের ১০-১১ মৌসুমে শেষবার দেখা হয়েছিল দু’দলের। রোমার মাঠে ৩-২ গোলে জয়ের পর নিজেদের মাঠে ৩-০ গোলে জিতে শেষ আটে পৌঁছে গিয়েছিল শাখতার। মাঝে সাত বছর কেটে গেলেও এঈ সময়টায় দু’দলের কেউই শেষ ষোলর গেরো কাটাতে পারেনি। ১৭-১৮ মৌসুমে এসে আবারও সেই শেষ ষোলতেই দেখা হচ্ছে শাখতার এবং রোমার। নিজেদের লিগে দারুণ ফর্মে থাকা দু’দলের মধ্যে আবারও এক জম্পেশ লড়াইয়ের অপেক্ষায় আছেন ফুটবল অনুরাগীরা।

     

     

    নকআউট পর্বের প্রথম ম্যাচের আগে দু’কোচই পাচ্ছেন পূর্ণশক্তির দল। ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে খেলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে উভয় দল। সে হিসেবে মধ্যমাঠে ফ্রেড-স্টেপানেঙ্কো এবং স্ট্রুটম্যান-পেলেগ্রিনির লড়াইটা হবে দেখার মত। চ্যাম্পিয়নস লিগে মোট চারবার একে অপরের সম্মুখীন হয়েছে শাখতার এবং রোমা। এর মধ্যে তিনটি ম্যাচেই জিতেছে ইউক্রেনের চ্যাম্পিয়নরা, রোমার জয় মাত্র একটি।

     

    সম্ভাব্য একাদশঃ

    শাখতার (৪-২-৩-১): পিয়াতোভ; ইস্মাইলি, রাকিৎস্কি, খোচোলাভা, ডোডো; ফ্রেড, স্টেপানেঙ্কো; বার্নার্দ, টাইসন, মার্লোস; ফেরেইরা

    রোমা (৪-২-৩-১): আলিসন; ফ্লোরেঞ্জি, মানোলাস, ফাজিও, কোলারভ; স্ট্রুটম্যান, পেলেগ্রিনি; উন্ডার, নাইঙ্গোলান, পেরোত্তি; জেকো।