• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    সেভিয়াকে ঠেকিয়ে দিলেন ডি গিয়া

    সেভিয়াকে ঠেকিয়ে দিলেন ডি গিয়া    

    ম্যাচশেষে দুই ম্যানেজারের মধ্যে কে বেশি খুশি হলেন সেটা বোঝা গেল না। তবে ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ১১ বার অন টার্গেটে শট করেও গোলের দেখা না পাওয়ায় সেভিয়া ম্যানেজারের আফসোসটাই বেশি হওয়ার কথা। ম্যাচের পরে তাই দলের সর্বোচ্চ গোলদাতা বেন ইয়েদ্দেরকে কেন মাঠেই নামালেন না ভিনসেঞ্জে মন্তেল্লা- সে প্রশ্নটাই বরং বড় হয়ে দেখা দিল। তাতে অবশ্য হোসে মরিনহোর লাভই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। সেভিয়ার মাঠ থেকে গোলশূন্য ড্র নিয়ে ফিরতে পেরেছে তার দল। 

    ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় ঘরের মাঠে শেষবার ২০০৫ সালে গোলশূন্য থেকেছিল সেভিয়া! ভুলতে বসা অনুভুতিটা সেভিয়া সমর্থকদের মনে করিয়ে দিয়েছেন আসলে ডেভিড ডি গিয়া। পুরো ম্যাচে সবমিলিয়ে ৮ টি সেভ করেছেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক। চ্যাম্পিয়নস লিগের এক ম্যাচে ইউনাইটেডের হয়ে সবশেষ এতোগুলো সেভ করেছিলেন এডউইন ভ্যান ড্যার সার, ২০১১ সালে।



    এস্তাদিও সানচেজ পিযজুয়ানে প্রথম লেগ শুরুর আগে মন্তেল্লার চেয়ে বড় চমকটা মরিনহোই দেখিয়েছিলেন। আগের ম্যাচে অসুস্থ্যতার কারণে দলে ছিলেন পল পগবা। আর আজ সেভিয়ার বিপক্ষে মরিনহোর দলে পগবার ঠাঁই হল বেঞ্চে। তার জায়গায় শুরু করলেন স্কট ম্যাকটমিনে। অবশ্য খুব বেশিক্ষণ বসে থাকতে হয়নি পগবাকে। ১৭ মিনিটে অ্যান্ডার হেরেরা ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়লে তার জায়গায় নামেন ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার। 

    পগবা মাঠে নামার আগে থেকেই দূরপাল্লার শটে ইউনাইটেডের রক্ষণের পরীক্ষাটা ভালোভাবেই নিচ্ছিল সেভিয়া। রক্ষণ গলে বেরুতে পারলেও ইউনাইটেডের গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী ডেভিড ডি গিয়াকে খুব একটা ঝামেলায় ফেলতে পারেননি লুইস মুরিয়েল, জিসাস নাভাসরা। বল দখলের লড়াইয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, ইউনাইটেডও অন্য প্রান্তে গোলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। ২৫ মিনিটে অ্যালেক্সিস সানচেজের উড়িয়ে মারা বলটা ভালো জায়গাতেই পেয়েছিলেন রোমেলু লুকাকু। কিন্তু বেলজিয়ান স্ট্রাইকারের করা ভলি চলে যায় অনেক বাইরে।  

    বিরতির কিছুক্ষণ আগে ইউনাইটেডের রক্ষণের ওপর দিয়ে ছোটখাটো একটা ঝড়ই বয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সেই ঝড় শক্ত হাতে একাই সামাল দিয়েছেন ডি গিয়া। ৪২ মিনিটে প্রথমে হুয়াকিন কোরেয়ার দুর্বল শট ঠেকিয়ে দিয়ে শুরু। এরপর ৪৫ মিনিটে দুবার করলেন অতিমানবীয় দুই সেভ। প্রথমে স্টিভেন এনজঞ্জির হেড ঠেকিয়ে দিলেন, এর কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সেটাকেও  ছাপিয়ে গেলেন ডি গিয়া। একেবারে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সেভিয়ার স্ট্রাইকার মুরিয়েল। ডান দিক থেকে আসা ক্রসে লাফ দিয়ে হেডটাও করেছিলেন ঠিকঠাক। কিন্তু ডি গিয়া হাতে বাধা পড়ল সেই বলও। আরও একবার দারুণ সেভ করে ইউনাইটেডকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখলেন ডি গিয়া।

    প্রথমার্ধের মতো পরের অর্ধ অবশ্য এতোটা ঘটনাবহুল ছিল না। কিন্তু স্বরূপে হাজির ছিলেন ডি গিয়া। ৬৩ মিনিটে আরও একবার সেভিয়াকে গোলবঞ্চিত করেন রুটিন সেভ করেই। সে দফায় হেড করেছিলেন ক্লেমেন্ত ল্যাংলেট। এর মিনিট খানেক পরই কোরেয়াও একটা সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু ডি গিয়া পর্যন্তও যেতে পারেননি তিনি। দুইজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডিবক্সের ভেতর থেকে শট করেছেন অনেক বাইরে দিয়ে। 

    মাঠে বেন ইয়েদ্দেরের অভাবটা তখন আরও বেশি টের পাচ্ছিল সেভিয়া। বিশেষ করে ৭০ আর ৭৩ মিনিটে দুইবার ভালো সুযোগ তৈরি করেও নিখুঁত ফিনিশের অভাবে ইউনাইটেডের জালে বল জড়ান হয়নি সেভিয়ার। পাবলো সারাবিয়ার ডান দিক থেকে ক্রসটা যে কোনো স্ট্রাইকারের জন্যই লোভনীয় ছিল, কিন্তু দৌড়ে গিয়ে পা ছোঁয়াতে পারেননি মুরিয়েল। এর ৩ মিনিট পরই অবশ্য সারাবিয়াকেই গোলের সুযোগটা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মুরিয়েল, কিন্তু তিনিও ফিরলেন ব্যর্থ হয়েই। 

    সেভিয়ার তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে আরও বিবর্ণ ছিল ইউনাইটেডের আক্রমণভাগ। শেষ ১৫ মিনিটে মার্কাস র‍্যাশফোর্ড আর অ্যান্থনি মার্শিয়ালকে নামিয়ে একটা অ্যাওয়ে গোল পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছিলেন মরিনহো। র‍্যাশফোর্ড আশা দেখালেও গোল করতে পারেননি। তবে সেভিয়ার আরেক বদলি মাঠে নেমেই বদলে দিতে পারতেন ম্যাচের চেহারা। সান্দ্রো রামিরেজ ভালো জায়গা থেকে বল পেয়েও শটই করতে পারেননি ৮৬ মিনিটে। শেষ পর্যন্ত তাই কোনো গোল ছাড়াই শেষ হয় ম্যাচ। আজকের পর স্পেনে খেলা শেষ ৭ চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে ইউনাইটেড গোলশূন্য থাকল ৫ বারই।   
     
    স্পেনে গোলের দেখা না পাওয়া গেলেও রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে ইউক্রেনের ম্যাচ। ঘরের মাঠে এএস রোমার সাথে প্রথমে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলে ম্যাচ জিতেছে শাখতার দোনেতস্ক।