মেসির তিনে তিনে আরও কাছে বার্সা
ম্যাচের আগে ডিয়েগো সিমিওনে বলেছিলেন, লিওনেল মেসিকে আটকানোর চেষ্টা বৃথা! ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনা-অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ম্যাচেও আরও একবার নিজের কথার প্রমাণই পেলেন সিমিওনে। আগের দুই ম্যাচে ফ্রি কিকে গোল করেছিলেন মেসি, আজও করলেন। আর ওই একটা মুহুর্তই ব্যবধান গড়ে দিল দুই দলের ম্যাচে, সাথে পয়েন্ট তালিকাতেও। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে শীর্ষস্থানে ৮ পয়েন্টে এগিয়ে গেল বার্সা।
৪-৪-২ নাকি ৪-৩-৩ কোন ফরমেশনে দল নামাবেন এর্নেস্তো ভালভার্দে- সেটা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। মেসি, লুইস সুয়ারেজদের সাথে ফিলিপ কুতিনিয়োকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত আক্রমণাত্মক দলই নামিয়েছিলেন বার্সা ম্যানেজার। শুরু থেকেই বার্সার খেলায় সেই ছাপও ছিল। তবে অ্যাটলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান অবলাকের পরীক্ষা নিতে পারছিল কমই বার্সা। ২৬ মিনিটে ডিবক্সের ঠিক বাইরে মেসিকে ফাউল করে বসেন অ্যাটলেটিকো মিডফিল্ডার থমাস। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় ডিয়েগো সিমিওনের দলের জন্য। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া বাঁকানো ফ্রি কিক জালে জড়িয়ে ক্যারিয়ারের ৬০০ তম গোলের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলেন মেসি, ম্যাচে এগিয়ে যায় বার্সাও।
এগিয়ে যাওয়ার পর আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে বার্সার আক্রমণ। প্রথমার্ধে কুতিনিয়ো দুবার গোল করার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথমবার নিয়েছিলেন দুর্বল শট, পরেরবার মারলেন বুলেট গতিতে। কোনোবারই অবশ্য অবলাককে বোকা বানাতে পারেননি কুতিনিয়ো। প্রথমার্ধে বার্সা আক্রমণাত্মক খেললেও অন্যদিকে অ্যাটলেটিকোর ডিয়েগো কস্তা, আঁতোয়া গ্রিজমানরা ছিলেন নিষ্প্রভ। বার্সার ৬ শট অন টার্গেটের বিপরীতে অ্যাটলেটিকোর ছিল শূন্য। প্রতিপক্ষের চেয়ে ভালো খেললেও প্রথমার্ধে অবশ্য চিন্তামুক্ত থাকতে পারেননি ভালভার্দে। ৩৩ মিনিটে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়ায় শুরুতেই বদলি নামিয়ে কৌশল বদলে ফেলতে হয়েছিল ভালভার্দেকে।
বিরতির পর অবশ্য খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করে অ্যাটলেটিকো। তবে প্রথম ১৫ মিনিটে বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগানকে বিপদে না ফেলতে পেরে কৌশল বদলে ফেলেন সিমিওনেও। ৫ মিনিটের ব্যবধানে অ্যানহেল কোরেয়া ও কেভিন গ্যামেইরোকে নামিয়ে দেন অ্যাটলেটিকো ম্যানেজার। দুই স্ট্রাইকারকে মাঝে রেখে গ্রিজমান চলে যান আরও বাঁ দিকে। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর আধ ঘন্টা ম্যাচে এগিয়ে ছিল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদই। বার্সার ওপর চাপ প্রয়োগোর কাজটা ভালোভাবে করলেও অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়েই তাল-গোল পাকিয়ে ফেলছিল অ্যাটলেটিকোর আক্রমণগুলো। অ্যাটলেটিকোর নিষ্ফলা আক্রমণের সুযোগ নিয়ে অবশ্য শেষদিকে ম্যাচেও ফিরেছিল বার্সা। কিন্তু কুতিনিয়ো, মেসি, সুয়ারেজরা বাকিটা সময়ে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি আর। শেষদিকে যা একটু সুযোগ ছিল অ্যাটলেটিকোর সামনে সেটা আরও কঠিন বানিয়ে দিয়েছিলেন ভালভার্দে, পাউলিনিয়োকে নামিয়ে। বার্সার আরও আঁটসাঁট মাঝমাঠ পেরিয়ে ৮৬ মিনিটে একবার জালে বল জড়ালেও, রেফারির অফসাইড সিদ্ধান্তে বাতিল হয় গোল। ওই শট বাদে, পুরো ম্যাচে মাত্র একবারই গোলে শট নিতে পেরেছিল অ্যাটলেটিকো।
বার্সার বিপক্ষে খেলা ২২ ম্যাচে মাত্র দুবার জয় পেলেও এতোদিন ভালভার্দের বিপক্ষেই অপরাজিতই ছিল সিমিওনে। আজ ম্যাচ শেষে হাতছাড়া হল সিমিওনের সেই রেকর্ডও।