প্রিমিয়ার লিগে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
আবাহনী-রুপগঞ্জ, বিকেএসপি
আবাহনী ৩৭৪/৬, ৫০ ওভার (নাসির ১২৯, শান্ত ১১৩, বিজয় ৫৭, রসুল ৩/৪২, শহীদ ২/৮১)
রুপগঞ্জ ২৮০, ৪২.৪ ওভার (নাঈম ৭০, মুশফিক ৬৭, নাঈম ৭৬, মিরাজ ২/২৯, সন্দীপ ২/৫৩, সানজামুল ২/৬৩)
ফল- আবাহনী ৯৪ রানে জয়ী ও প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন
আবাহনীর জন্য হিসাবটা ছিল সরল। ম্যাচ জিতলেই শিরোপা। অন্য ম্যাচে শেখ জামাল খেলাঘরের কাছে হেরে যাওয়ায় রুপগঞ্জের সুযোগটা তৈরী হয়েছিল, ক্ষীণ হলেও। তবে নিজেদের দিনে আর কাউকে সুযোগ দিল না আবাহনী, নাজমুল হোসেন শান্ত ও নাসির হোসেনের সেঞ্চুরিতে ৩৭৪ রান করার পর রুপগঞ্জকে ৯৪ রানে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে তারা।
বার্তাটা শুরুতেই দিয়েছিলেন আবাহনীর দুই ওপেনার- শান্ত ও এনামুল হক বিজয় মিলে ১২.১ ওভারে তুললেন ৯২ রান। ৮ চার ও ১ ছয়ে ৪৯ বলে ৫৭ রান করে এনামুল ক্যাচ দিয়েছেন পারভেজ রসুলের বলে, এরপর দুই উইকেট আবাহনী হারিয়েছে দ্রুতই। হনুমা বিহারি ও মোহাম্মদ মিঠুন দুইজনই বনেছেন রসুলের শিকার, ২৫ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে আবাহনী কিছুটা ব্যাকফুটে তখন।
এরপরই নাসিরের সঙ্গে শান্তর এক্সেলেরেটরে ভর করা। চতুর্থ উইকেটে দুইজন যোগ করেছেন ১৭৭ রান। নাজমুল করেছেন লিগে ৪র্থ সেঞ্চুরি, তারই ওপেনিং সঙ্গী বিজয়কে সর্বোচ্চ রানের তালিকায় ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। শান্ত ও নাসির, দুইজনই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন একই ওভারে। আসিফ হোসেনের বলে চার মেরে নাসিরের সেঞ্চুরি এসেছে, আর শান্ত পৌঁছেছেন ডাবলসে।
সেই আসিফের বলেই স্টাম্পড হওয়ার আগে নাসির করেছেন ৯১ বলে ১২৯ রান, ১৫টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ৪টি ছয়। দুই ওভার পরে মোহাম্মদ শহীদের বলে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন শান্ত, যিনি করেছেন ১১ চার ও ২ ছয়ে ১০৭ বলে ১১৩ রান। তবে রুপগঞ্জকে এরপরও স্বস্তি দেননি মাশরাফি বিন মুর্তজা। আট নম্বরে নেমে ৮ বলে তিনি করেছেন ২৮ রান, ছয়ই মেরেছেন চারটি। এর মধ্যে আশিকুজ্জামানের এক ওভারেই তিনটি। শেষ ৩ ওভারে ৪১ রান তুলে আবাহনী পৌঁছেছে ৩৭৪ রানে।
শেখ জামাল মিরপুরে হেরেছে আগেই, রুপগঞ্জের শিরোপা জয়ের পূর্বশর্ত ছিল যেটা। সেটা থেকে প্রেরণা তারা পাক বা পাক, আবাহনীর বড় সংগ্রহের সামনে তাদের আসলে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের বিকল্প ছিল না। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই মিরাজের বলে ক্যাচ দিলেন আব্দুল মজিদ, শূন্য রানেই। আরেক প্রান্তে মোহাম্মদ নাঈম ঝড় তুলেছিলেন, তবে অভিষেক মিত্র তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি বেশিক্ষণ।
১৯তম ওভারে নাঈম বোল্ড হয়েছেন নাসিরের বলে, ৫৪ বলে ৭০ রান করে, ৬ চার ও ৪ ছয়ে। এরপর ৬৬ বলে ৬৭ রান করে মুশফিকুর রহিম, ৬৮ বলে ৭৬ রান করা নাঈম ইসলাম আর ২৫ বলে ২৯ রান করা পারভেজ রসুল- চেষ্টাটা করেছেন সবাই। তবে বিফলেই গেছে সেসব।
৩৮তম ওভারে ২৫১ রানে ৬ষ্ঠ উইকেট হারিয়েছে রুপগঞ্জ, অসম্ভব এক রান-তাড়া তখনও মিলিয়ে যায়নি। তবে অভিশাপ হয়ে এল ২৮০ সংখ্যাটাই। এ রানেই যে চার চারটি উইকেট হারিয়ে বসলো রুপগঞ্জ। আর এই শেষটা দিয়েই যেন টুর্নামেন্টে নিজেদের পারফরম্যান্সের ছাপটা শেষবারের মতো রাখল আবাহনী।
প্রিমিয়ার লিগে যে তারাই চ্যাম্পিয়ন এবার!