রাঙিয়ে দিলেন বোলাররা
ওয়ানডেতে গত কিছুদিন থেকেই বাংলাদেশ বদলে গেছে। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটের মেজাজটা তো আলাদা। দক্ষিণ আফ্রিকা এখানে অবিসংবাদিত এক নম্বর, আগের দিন হাশিম আমলা সেটাই মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশ দল ওয়ানডের ফর্মটা এবার টেস্টেও টেনে নিয়ে এলো। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনে মুশফিক যখন হাসতে পারছেন, আমলার কপালে চিন্তার ভাজ। প্রথম ইনিংসে ২৪৮ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অলআউট করে বাংলাদেশই এগিয়ে।
টেস্টের প্রথম দিনের এর আগে প্রতিপক্ষকে মাত্র দুইবারই অলআউট করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। একবার ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে, আরেকবার গত বছর জিম্বাবুয়েকে।ধারে, ভারে এদের কারও সঙ্গেই দক্ষিণ আফ্রিকার তুলনা হয় না। এবি ডি ভিলিয়ার্স না থাকলেও আমলা, ডু প্লেসি-ডুমিনিরা নিজেদের দিনে তো একাই ব্যবধান গড়ে দিতে পারেন। কিন্তু দিনটা ছিল আসলে বাংলাদেশের বোলারদের। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং প্রথম দিনেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছে।
পাদপ্রদীপে অবশ্যই মুস্তাফিজই থাকবেন। টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডের আলো ঝলমলে অভিষেকের পর টেস্টে বাংলাদেশের তরুণ পেসারের মঞ্চটা সাজানোই ছিল। তবে চট্টগ্রামে দিনটা নিজের করে নিলেন একটা ওভারেই। চৌদ্দতম ওভারের প্রথম বলেই বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে আমলা আউট। পরের বলটা লাগল ডুমিনির প্যাডে, আম্পায়ার খারিজ করে দিলেন আবেদন। পরে রিভিউ চেয়ে হাসি ফুটল মুস্তাফিজের মুখে, ডুমিনি এলবিডব্লু। পরের বলটা ঠেকিয়ে দিলেন ডি কক। কিন্তু আয়ু ওই এক বল। এর পরের বলেই মুস্তাফিজের দারুণ এক কাটারে উড়ে গেল ডি ককের স্টাম্প। ৩ উইকেটে ১৭৩ থেকে এক ওভারেই দক্ষিণ আফ্রিকা হয়ে গেল ৬ উইকেটে ১৭৩। পরে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র হাফ সেঞ্চুরিয়ান বাভুমার উইকেটও পেয়েছেন।
তিন উইকেট নিয়ে জুবায়েরও ছিলেন যোগ্য সারথীর ভূমিকায়। তবে বাংলাদেশ লেগ স্পিনারের এই প্রাপ্তি অনেক বেশিই অপ্রত্যাশিত। ফিল্যান্ডারে পাওয়া উইকেটটা বাদ দিলে বাকি দুই উইকেটই এসেছে বাজে বল থেকে। হার্মারের বলটা কীভাবে যেন ধরেছেন মুনিনুল, আর স্টেইন একটা লং হপে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন লং অফে।
তবে দিনের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ, বিপজ্জনক হয়ে উঠতে থাকা ফন জিলকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এরপর এলগারকে আউট করেছেন তাইজুল, আর ডু প্লেসি সাকিবের নিচু হয়ে আসা একটি বলে হয়ে গেছেন এলবিডব্লু । বাকি গল্পটা মুস্তাফিজুর ও জুবায়েরের। তবে সেটা হতে পারত শহীদেরও। ম্যাচে দুর্দান্ত বল করেও একটই উইকেটও না পাওয়ার দায়টা ইমরুলের ওপর চাপাতে পারেন শহীদ। তাঁর বলে যে একাধিকবার ক্যাচ ছেড়েছেন ইমরুল। শেষ পর্যন্ত টানা ৫০ বলে কোনো রান না দিয়েও উইকেটশুন্য থেকেই সন্তষ্ট থাকতে হয়েছে শহীদকে। স্কোরকার্ড যে আস্ত গাধা, ক্রিকেটের পুরনো কথাটা শহীদের জন্য তো আজ প্রাসঙ্গিকই।