প্রকৃতির নিয়ন্ত্রণে চট্টগ্রাম টেস্ট
বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা; চট্টগ্রাম টেস্ট, তৃতীয় দিন শেষে
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস ৮৩.৪ ওভারে ২৪৮/১০ (এলগার ৪৭, ফন জিল ৩৪, দু প্লেসি ৪৮, আমলা ১৩, বাভুমা ৫৪, দুমিনি ০, ডি কক ০, ফিল্যান্ডার ২৪,হারমার ৯, স্টেইন ২, মরকেল ৩*; মুস্তাফিজ ৪/৩৭, জুবায়ের ৩/৫৩,মাহমুদউল্লাহ ১/৯, সাকিব ১/৪৫, তাইজুল ১/৫৭)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ১১৬.১ ওভারে ৩২৬ (তামিম ৫৭, ইমরুল ২৬, মুমিনুল ৬, মাহমুদউল্লাহ ৬৭, মুশফিকুর ২৮, সাকিব ৪৭, লিটন ৫০, শহীদ ২৫, তাইজুল ৯, মুস্তাফিজুর ৩, জুবায়ের ০*; স্টেইন ৩/৭৮, হারমার ৩/১০৫, ফিল্যান্ডার ২/৪০, এলগার ১/৬, ফন জিল ১/২৩)
দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংস ২১.১ ওভারে ৬১/০ (এলগার ২৮*, ফন জিল ৩৩*)
চার চারজন ব্যাটসম্যান থিতু হয়ে সাজঘরে ফিরলেন বড় ইনিংস খেলতে না পাড়ার আক্ষেপ নিয়ে। ফলশ্রুতে বড় লিড গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করেও সেটা ৭৮ রানেই সীমাবদ্ধ রেখে সন্তুষ্ট থাকতে হল বাংলাদেশকে। প্রথম দুই দিন আর তৃতীয় দিনের দুই সেশনের মতো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটা বেশীরভাগ বাংলাদেশের দিকেই ছিল। তবে তৃতীয় দিনের শেষভাগে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ৬১ রান তুলে নিয়ন্ত্রণের অনুপাত কিছুটা হলেও নিজেদের দিকে টেনে নিল দক্ষিণ আফ্রিকা। চট্টগ্রাম টেস্টের ভাগ্য তাই তৃতীয় দিন শেষেও অনিশ্চিতই থেকে গেলো। চতুর্থ দিনের খেলার উপর নির্ভর করছে এখন অনেক কিছুই। তবে তারচেয়েও বেশী নির্ভর করছে বৃষ্টির উপর। মোটা দাগে তাই প্রকৃতিই এখন চট্টগ্রাম টেস্টের নিয়ন্ত্রক।
আগের দিনের ৪ উইকেটে ১৭৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ভাগেই অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমকে (২৮) এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে চলতি সফরে নিজের প্রথম উইকেটটি তুলে নেন প্রোটিয়া পেসার ডেল স্টেইন। তবে এরপর সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ৮২ রানের অনবদ্য জুটিতে নিজেদের টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে লিড নিতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। হারমারের বলে শর্ট মিডউইকেটে ডুমিনির হাতে দৃষ্টিকটু ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে সাকিব করেন ৪৭ রান।
দিনের অপর সফল ব্যাটসম্যান লিটন দাস ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম অর্ধশতক তুলে ওই হারমারের বলেই উইকেটের পিছনে ধরা দেন ডি ককের হাতে। এর আগে সপ্তম উইকেটে লিটনের সঙ্গী হয়ে ছোটখাটো ক্যামিও খেলে ফিরে যান মোহাম্মদ শহীদ। ১৯ বল মোকাবেলায় ৪টি চার ও ১টি ছয়ে শহীদ করেন ২৫ রান। এর মধ্যে আবার ৩টি চার ও ছয়ের মারটি আসে হারমারের এক ওভারেই।
সবক’টি উইকেট খোয়ানোর আগে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ৩২৬ রান। পরে আরও দুটিসহ মট তিন উইকেট নিয়ে ৪০০ টেস্ট উইকেটের মাইলফলক থেকে এক ধাপ পিছিয়ে রইলেন ডেল স্টেইন।
দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করতে নেমে দিনের বাকি সময়টা বিনা খরচায়ই পার করতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফন জিল ও ডিন এলগারের উদ্বোধনী জুটিতে এ পর্যন্ত আসা রানসংখ্যা ৬১।
দিনশেষের সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো দলের প্রতিনিধি হয়ে এসে লিটন দাস এখনও বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখলেন। সঙ্গে এ-ও জানালেন যে লক্ষ্যটা দেড়-দুশো রানের মধ্যে আটকে রাখতে পারলে বাংলাদেশের জেতার দারুণ সম্ভাবনাই থাকবে। তবে শেষ দু’দিন প্রকৃতির মেজাজ ঠিক থাকলে তবেই আসবে রান-উইকেটের হিসেবনিকেশ।