• ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজ
  • " />

     

    দলে ডাক পাওয়াটাই যখন 'কাল' রশিদের

    দলে ডাক পাওয়াটাই যখন 'কাল' রশিদের    

    ১ আগস্ট এজবাস্টনে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে যদি খেলতে নামেন আদিল রশিদ, তার জন্য শুধু উইকেট নেওয়ার নয়, চ্যালেঞ্জটা থাকবে আরও বেশি কিছু। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের পর আর টেস্ট খেলেননি এই লেগস্পিনার। শুধু তাই নয়, এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দীর্ঘ সংস্করণের ঘরোয়া ক্রিকেট থেকেও। ইয়র্কশায়ারের লাল-বলের ম্যাচের চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। 

    সীমিত ওভারে সাম্প্রতিক সাফল্যই তাকে ডেকে এনেছে টেস্ট দলে। ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে তার অন্তর্ভুক্তিতে তাই বেশ সরব হয়েছেন অনেকেই, কাউন্টির কাঠামোর প্রতি এটা একটা আঘাত বলেও মনে করছেন তারা। দ্য টেলিগ্রাফে নিজের কলামে মাইকেল ভন রশিদকে বলেছেন ‘অপেশাদার’, কারণ হিসেবে “টেস্টে ডাক পাওয়ার ভাল সুযোগ আছে জেনেও ইয়র্কশায়ার থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেওয়াটাই” বলেছেন। আর “হতাশ” হওয়ার সঙ্গে “বিস্মিত”ও হয়েছে রশিদের কাউন্টি ইয়র্কশায়ার কর্তৃপক্ষ। 

    দুই পক্ষের সমালোচনারই অবশ্য কড়া জবাব দিয়েছেন রশিদ। তার মতে, “মাইকেল ভনদের কথা কেউ শোনে না”, এমন মন্তব্যর জন্য ভনকে ‘স্টুপিড’ও বলেছেন তিনি। “আমার মনে হয় না, আমার বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশ আছে তার। আমি তার অধীনে খেলেছি। তবে সাবেক ক্রিকেটাররা মাঝে মাঝে বর্তমান ক্রিকেটারদের নিয়ে নিরর্থক কথা বলে। যদি বিরক্ত হয়ে সে যা ইচ্ছা তাই বলতে থাকে তাহলে আমার কিছু করার নেই, এটা তার ব্যাপার। আর অপছন্দ করবে, এমন লোক থাকবেই, যেমন কিছু বিশেষজ্ঞ এটাকে কলঙ্ক বলছে। আমার দোষ কী এখানে!”  ভনের অধীনে শুধু খেলেনইনি রশিদ, টেস্ট অভিষেকের ক্যাপটাও তার হাত থেকেই নিয়েছিলেন তিনি। 

    আর ইয়র্কশায়ারের কাছ থেকে আরেকটু ‘ভাল’ কিছু শুনতে চেয়েছিলেন তিনি, নিজ কাউন্টি তাকে নিয়ে এমন মনোভাব পোষণ করলে ভবিষ্যতে কোন কাউন্টিতে খেলবেন সেটাও ভাববেন বলে জানিয়েছেন রশিদ। 

    আদিল রশিদের সঙ্গে দলে আরেক স্পিনার হিসেবে ডাক পেয়েছেন মইন আলি, গত অ্যাশেজের পর বাদ পড়েছিলেন যিনি। সাদা বলের ক্রিকেটের ফর্মটা প্রভাবক হয়েছে তার ক্ষেত্রেও। রশিদ-মইনকে দলে নিতে বাদ পড়তে হয়েছে সমারসেটের দুই স্পিনার জ্যাক লিচ ও ডম বেসকে, দুজনেরই অভিষেক হয়েছিল সম্প্রতি। 

    স্কাই স্পোর্টসে নাসের হুসেইন বলেছেন, “প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়া একজনের দলে ডাক পাওয়াটা কাউন্টি ক্রিকেটের মূলে আঘাত করার মতো, বিশেষত যখন জ্যাক লিচ ও ডম বেসের মতো স্পিনার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন ইংল্যান্ডের শার্ট গায়ে চাপিয়ে খেলার জন্য।” 

    রশিদ জবাব দিয়েছেন সেসব সমালোচনারও, “বেশ হাহুতাশ চলছে। আমি বুঝছি না, ব্যাপারটা কী, আমি অবসর নিয়েছি, লোকজন এসব বলছে কেন। আমি অবসরের ব্যাপারে কিছুই বলিনি, কিছু বিশেষজ্ঞ যেমন বলছেন। এটা সহজ সিদ্ধান্ত ছিল না, তবে আপনার দেশ যখন আপনাকে চায়, আপনি যদি প্রস্তুত থাকেন, তবে আপনি স্রেফ না বলে দিতে পারেন না।” 

    সীমিত ওভারের ক্রিকেট সাফল্যে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া দ্বিতীয় ইংলিশ ক্রিকেটার হলেন রশিদ, প্রধান নির্বাচক হিসেবে এড স্মিথ দায়িত্ব নেওয়ার পর। এর আগে দলে ডাকা হয়েছিল জস বাটলারকে, যদিও বাটলার লাল বলে কাউন্টি খেলা শুরু করেছেন আবার। ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ম্যাচে খেলেছেন তিনি, পেয়েছেন কাউন্টি ক্যাপও। অবশ্য রশিদের ব্যাপারে স্মিথ বলেছেন, ২০১৯ পর্যন্ত টেস্ট খেলতে চাইলে তাকে অবশ্যই কাউন্টির সঙ্গে দীর্ঘ সংস্করণের ক্রিকেটের চুক্তি করতে হবে। 

    রশিদের টেস্ট দলে ডাক পাওয়ার সিদ্ধান্তে ইয়র্কশায়ারের হতাশ হওয়াটা অবশ্য খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ম্যাচে স্পিনার-সঙ্কটে ভোগা ‘হোয়াইট রোজ’দের এক ম্যাচের জন্য একজন লেগস্পিনার ধার করে আনতে হয়েছিল। আবার ইংল্যান্ড টেস্ট দলে রশিদের ডাক পাওয়ার অর্থ, টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের শেষের অংশটা মিস করবেন রশিদ। অথচ রশিদকে শুধু সীমিত ওভারের জন্যই পাচ্ছিল ইয়র্কশায়ার। 

    এত কিছু মাথায় নিয়ে ঠিক কেমন পারফর্ম করবেন রশিদ?