• ইংল্যান্ড-ভারত সিরিজ
  • " />

     

    ওকস-বেইরস্টোতে লর্ডসে ইংল্যান্ডেরই রাজত্ব

    ওকস-বেইরস্টোতে লর্ডসে ইংল্যান্ডেরই রাজত্ব    

    দ্বিতীয় টেস্ট, লর্ডস
    তৃতীয় দিনশেষে
    ভারত ১ম ইনিংস ১০৭ অল-আউট
    ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস ৩৫৭/৬*
    ইংল্যান্ড ৪ উইকেট নিয়ে ১ম ইনিংসে ২৫০ রানে এগিয়ে 


    ভারত ম্যাচে ফিরেছিল দারুণভাবেই। ইংল্যান্ডের টপ-অর্ডার ভাল শুরুর পর ভারতীয় ফাস্ট বোলারদের নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে ধরা পড়ল, মিডল অর্ডারও তাই। ৮৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। এলেন জনি বেইরস্টো। লিড পেল ইংল্যান্ড, ১৩১ রানে ৫ উইকেট গেল। এলেন এবার ক্রিস ওকস। দুজন মিলে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে দিলেন ভারতকে। ওকসের অভিষেক সেঞ্চুরির সঙ্গে ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা জনি বেইরস্টোর ১৮৯ রানের জুটিতে শুধু হতাশই হলো ভারত। আলোকস্বল্পতায় খেলা শেষ হওয়ার আগে স্যাম কারানকে নিয়ে অপরাজিত আছেন ওকস, ১২০ রানে। লর্ডসে এরই মাঝে টেস্টের প্রায় অর্ধেক ওভার খেয়ে ফেলেছে বৃষ্টি, তবুও ৪ উইকেট রেখে ইংল্যান্ডের ২৫০ রানের লিডটা বলছে, ২-০তে তাদের সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল! 

    সে সম্ভাবনার মূল কারিগর অবশ্যই ওকস। ১০ম ক্রিকেটার হিসেবে বোলিং-ব্যাটিং, দুই অনার্স বোর্ডেই নাম তুললেন তিনি। বেন স্টোকসের জায়গায় দলে এসেছিলেন, সুযোগটা কাজে লাগালেন কী দারুণভাবে! ইংলিশ পেসারদের মতো বিশাল সুইং পেলেন না ভারতীয়রা, তবে শুরুর ৫ উইকেটের জন্য যথেষ্ট হয়েছিল সেটাই। কাজে লাগলো না সেসব শুধু ওকস-বেইরস্টো জুটির জন্যই। সঙ্গে কুলদীপ যাদবকে সেভাবে ব্যবহার করতে পারলেন না কোহলি, এই রিস্টস্পিনার তো গুডলেংথে বলই করতে পারলেন না! আশ্বিনকেও ৩৯তম ওভারের আগে আনেননি ভারতীয় অধিনায়ক। ইশান্ত, শামি, পান্ডিয়াদের আলগা ডেলিভারিতে ওকস-বেইরস্টো তুললেন পুরো ফায়দা। দুজন মিলে মেরেছেন ৩০টি বাউন্ডারি। ভারতীয় পাঁচ বোলারের ইকোনমি প্রায় চারঘেঁষা। 

    ১২৫ বলে প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন ওকস, এর আগে ম্যাচে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিফটি করেছেন বেইরস্টো। এক সময় বেইরস্টোই এগিয়ে ছিলেন ওকসের চেয়ে। তবে ওকস সেঞ্চুরি পেলেন, বেইরস্টোর আলিঙ্গনেও সিক্ত হলেন। আর নিজের দোষে সেঞ্চুরিটা মিস করে গেলেন বেইরস্টো। দিনশেষে তাদের আক্ষেপের জায়গা ওই ওইটুকুই। 

    অথচ দিনের শুরুতে ভারতীয় পেসাররা করেছিলেন দারুণ বোলিং। শামির সিমে পড়ে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ জেনিংস, রিভিউটাই শুধু নষ্ট করলেন। গুডলেংথ, শর্ট অব আ লেংথে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা খেলছিলেন ভালই। তাদের কাল হলো অনিয়মিত বলগুলো, কখনও নিচু হয়ে ভেতরের দিকে ঢোকা বল, কখনও ফুললেংথে একটু সুইং করা বল। 

    কুককে এমন সেট-আপেই লেট সুইংয়ে কট-বিহাইন্ড করলেন ইশান্ত শর্মা। অভিষিক পোপ পান্ডিয়ার শিকার, তিনিও নষ্ট করলেন রিভিউ। হঠাৎ নিচু হওয়া বলে নাগাল পেলেন না রুট, শামির দ্বিতীয় শিকার তিনি। বাটলার এগিয়ে এসে খেলছিলেন পেসের বিপক্ষে, শামির বলেও তাই করতে গিয়ে মিস করে হলেন এলবিডব্লিউই। 

    ভারত তখন দারুণভাবে ম্যাচে ফিরেছে। তবে ধীরে ধীরে, বাউন্ডারির পর বাউন্ডারিতে, রানের পর রানে বেইরস্টো-ওকসের জুটি গড়তে লাগলো, আর ভারত ছিটকে গেল। 

    অন দি আপ-এ পান্ডিয়ার বলে ব্যাট ছুঁড়ে কট-বিহাইন্ড হলেন বেইরস্টো। কারান এলেন, যোগ্য সঙ্গ দিলেন ওকসকে। ৮০ ওভারের পরই নতুন বল নিলেন কোহলি, তবে সেই বলে খেলা হলো শুধু এক ওভার। এরপরই ঘনিয়ে এলো আঁধার। 

    ভারতকে এই টেস্টে বাঁচাতে পারে ওই ক্ষ্যাপাটে আবহাওয়াই। আর সেটা যদি ঠিক থাকে, তবে কোহলিদের জন্য সব বেঠিক কাজগুলো করে রেখেছেন ওকস। সঙ্গে বেইরস্টো।