দুই শুন্যে শুরু, ৩০ পেরিয়ে জাতীয় দলে...
৩০ পার করে এসে জাতীয় দলে ডাক পেলেন ফজলে রাব্বি...
শুরুটা কেমন ছিল?
জন্ম বরিশালে, ১৯৮৭ সালে। ২০০৪ সালে রংপুরে রাজশাহীর বিপক্ষে জাতীয় লিগে বরিশালের ম্যাচ দিয়ে লিস্ট ‘এ’-তে অভিষেক তার। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অভিষেকে ওপেনিংয়ে নেমে ৩ বল খেলে আউট হয়েছিলেন শুন্য রানে। প্রথম শ্রেণিতেও অভিষেক সে মৌসুমেই। অনুমান করুন, প্রথম ইনিংসে কতো রানে আউট হয়েছিলেন তিনি? শুন্য। পরের ইনিংসে করেছিলেন ১৫। সে মৌসুমে ওই একটিই প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি।
এরপর হারিয়ে গিয়েছিলেন?
অভিষেকের পর প্রথম ছয় মৌসুমে ফজলের ব্যাট হাসেনি। প্রথম শ্রেণিতে তার ব্রেকথ্রু মৌসুম ছিল ২০১৪-১৫। সেবার ৫৩.৯০ গড়ে করেছিলেন ৫৯৩ রান। লিস্ট ‘এ’-তে তার আগেই অবশ্য হেসেছিল তার ব্যাট, ২০১০-১১ মৌসুমে ৮ ম্যাচে করেছিলেন ৩৯৩ রান, গড় ছিল ৬৫.৫০।
জাতীয় দলের রাডারে এলেন কীভাবে?
প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ মৌসুম ফজলের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট বলা যায় এখন পর্যন্ত। শেখ জামাল ধানমন্ডি থেকে ফজলে এসেছিলেন প্রাইম দোলেশ্বরে। গত মৌসুমে ৭০০ ছুঁয়েছিলেন চারজন, ফজলে তাদের একজন। ১৬ ম্যাচে ৪৭.২০ গড়ে করেছেন ৭০৮ রান, ২টি সেঞ্চুরির সঙ্গে ৩টি ফিফটি। শুরুতে ওপেনিংয়ে খেলেছিলেন, লিটন দাস আসার পর খেলেছেন তিনে।
প্রিমিয়ার লিগের দারুণ মৌসুমের পর ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। একটি ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন, ফিফটি করেছেন তাতেই। এরপর আয়ারল্যান্ড সফরেও ‘এ’ দলের হয়ে গিয়েছিলেন। তিন ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছেন। ফজলে করেছেন ৪১ বলে ৫৩ ও ৬৩ বলে ৭৪ রান। ‘এ’ দলের পর জাতীয় লিগে ফিরে বরিশালের হয়ে খেলেছেন ১৯৫ রানের ইনিংস, দাবিটাও করেছেন জোরালো।
তিনি আদতে কী? পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান?
অলরাউন্ডার বলা যায়। টুকটাক বোলিং-ও করেন, বাঁহাতি অর্থোডক্সে। ২৭ উইকেট আছে লিস্ট 'এ'-তে, ৩৮.২২ গড়ে। প্রথম শ্রেণিতে উইকেট ২৮টি।
এর আগে ডাক পেয়েছিলেন জাতীয় দলে?
ছিলেন এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলেও। তবে শেষ পর্যন্ত দলে জায়গা পাননি, ওপেনিংয়ের সমস্যা মেটাতে দেশ থেকে উড়ে গিয়েছিলেন পরে দুই ওপেনার- ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার। ইমরুলকে এশিয়া কাপে খেলানো হয়েছে নিচের দিকে, আর সৌম্য বাদ পড়েছেন এবার। চোটের কারণে নেই তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান। ওপেনিংয়ের সমস্যা মেটাতে ফজলে হতে পারেন নতুন মুখ।
এখন ফজলের বয়স ৩০ বছর ২৮৫ দিন। অভিষেক হলে সেটা কি রেকর্ড হবে ?
রেকর্ড হবে না, তবে এটা নিয়মিত ঘটনা নয় তো বটেই। ৩০ বছরের ওপরে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে এর আগে পাঁচজনের। জাহাঙ্গীর শাহ, রকিবুল হাসান, সামিউর রহমান, ওয়াহিদুল গণি ও মাহবুবুর রহমানের। এর মধ্যে জাহাঙ্গীর শাহ, সামিউর ও রকিবুল খেলেছিলেন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডেটিতে। ওয়াহিদুল গণিও ১৯৮৮ সালে খেলেছিলেন ক্যারিয়ারের একমাত্র ওয়ানডে। ৩০-এর ওপরে অভিষেক হওয়া শেষ বাংলাদেশী ক্রিকেটার মাহবুবুর, ১৯৯৯ সালে ক্যারিয়ারের একমাত্র ওয়ানডে খেলার সময় তার বয়স ছিল ৩০ বছর ২ মাস।