দ. আফ্রিকার নাটকীয় ধসে ঘুরে দাঁড়ালো পাকিস্তান
জোহানেসবার্গ টেস্ট
প্রথম দিন, স্টাম্পস
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস ২৬২ (মার্করাম ৯০, ডি ব্রুইন ৪৯, আমলা ৪১, হামজা ৪১, ফাহিম ৩/৫৭, আমির ২/৩৬, আব্বাস ২/৪৪)
পাকিস্তান ১ম ইনিংস ১৭/২* (ফিল্যান্ডার ২/১)
পাকিস্তান ৮ উইকেটে ২৪৫ রানে ১ম ইনিংসে পিছিয়ে
এটা হতে পারতো শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকার দিন। দিনটা হতে পারতো এইডেন মার্করামের সেঞ্চুরির। হাশিম আমলা, থিউনিস ডি ব্রুইন, জুবাইর হামজারা পেতে পারতেন ফিফটি। চারজনের পাকিস্তানি পেস আক্রমণে হুট করেই যেন এলোমেলো হয়ে গেল সব। ২২৯ রানে ৩ উইকেট থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা অল-আউট হয়ে গেল ২৬২ রানে। জোহানেসবার্গের উইকেটে শেষবেলায় পরপর দুই বলে দুই সাফল্যে ভারনন ফিল্যান্ডার ইঙ্গিত দিলেন, কাজটা পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানদের জন্যও সহজ হবে না। সঙ্গে ডেল স্টেইনের স্পেলও বলছে, দ্বিতীয় দিনে বেশ বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করে আছে সফরকারিদের। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত হোয়াইটওয়াশের স্বাদ নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য দিনটা আরও বড় স্কোর না করার হতাশার। আর পাকিস্তানের জন্য প্রত্যাবর্তনের।
দিনের দ্বিতীয় ওভারেই অবশ্য সফল হয়েছিল পাকিস্তান। মোহাম্মদ আব্বাসের বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে সরফরাজ আহমেদকে উল্লাসে ভাসিয়েছিলেন ফাফ ডু প্লেসির নিষেধাজ্ঞায় অধিনায়কত্ব পাওয়া ডিন এলগার। তবে মার্করাম ও আমলার জুটিতে সে স্মৃতি মিলিয়ে গেছে পাকিস্তানীদের। লাঞ্চের আগে দুজন মিলে যোগ করেছেন ১০২ রান। এক মোহাম্মদ আমির ছাড়া সেভাবে আর কোনও পাকিস্তানী পেসারই আশা জোগাতে পারেননি সরফরাজকে, বেশ লম্বা সময় ধরে।
লাঞ্চের পর পাকিস্তানকে ব্রেকথ্রু দিয়েছেন প্রথম দুই ম্যাচে একাদশের বাইরে থাকা ফাহিম আশরাফ। তার লেগসাইডের নির্বিষ বলে শেষ হয়েছে মার্করামের সেঞ্চুরির সম্ভাবনা। ১৬ চারের দারুণ এক ইনিংসকে তিন অঙ্কে এই ডানহাতি রুপান্তর করতে পারেননি মাত্র ১০ রানের জন্য। একটু পর ফিরেছেন আমলা, ইয়াসির শাহর বদলে পাকিস্তান দলে আসা শাদাব খানকে পাঞ্চ করতে গিয়ে স্লিপে তিনি ধরা পড়েছেন ৪১ রান করে।
পাকিস্তান বোলারদের এরপর শাসন করেছেন ডি ব্রুইন ও অভিষিক্ত হামজা। চা-বিরতির আগে আর উইকেট হারায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। বিরতির পরই ঘটেছে বিপত্তি। আব্বাসের ফুললেংথের ভেতরের দিকে ঢোকা বলটা খুঁজে নিয়েছে ডি ব্রুইনের ব্যাট ও প্যাডের শূন্যস্থান, ৪৯ রান করে তিনি হয়েছেন এলবিডব্লিউ। তার ব্যাট-প্যাডের শুন্যস্থান যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কোন অতল গহবরে ফেলতে যাচ্ছে, ডি ব্রুইন সেটা যদি জানতেন একবার!
টেমবার বাভুমা ও হামজা কট-বিহাইন্ড আমিরের বলে। ফিল্যান্ডার হলেন এলবিডব্লিউ, কাগিসো রাবাদা পেছনে ক্যাচ দিলেন হাসান আলির বলে। কুইন্টন ডি কক ও ডুয়ান অলিভিয়ারকে ফেরালেন ফাহিম। এক ডি কক ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ৫ ব্যাটসম্যানের কেউই ছুঁতে পারলেন না দুই অঙ্ক।
ফিল্যান্ডারের পর পর দুই বলে শান মাসুদ ও আজহার আলির কট-বিহাইন্ড অবশ্য এরপর ফিরিয়ে আনতে চাইছিল ২০১৩ সালে এই মাঠেই পাকিস্তানের ৪৯ রানে অল-আউট হয়ে যাওয়ার স্মৃতি। ইমাম-উল-হক ও মোহাম্মদ আব্বাস আপাতত সেসব স্মৃতির ঝাঁপি বন্ধ করেছেন।
সেটা নতুন করে খুলতে স্টেইন-ফিল্যান্ডার বা রাবাদা-অলিভিয়ারকে করতে হবে দারুণ কিছু। এদিন পাকিস্তানী পেসাররা যা করলেন, তার চেয়েও অনেক বেশি দারুণ কিছু।