ক্রাইস্টচার্চে নিহতদের স্মরণে ক্যান্টারবুরির শিরোপা স্বপ্ন বিসর্জন!
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় স্তব্ধ পুরো বিশ্ব। নিহতদের স্মরণে নিউজিল্যান্ডে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। হামলায় নিহতদের স্মরণে এবার অভিনব এক কাজ করল দেশটির ক্যান্টারবুরি ক্রিকেট ক্লাব। নিহতদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে শেফিল্ড শিল্ডের শেষ রাউন্ডের ম্যাচ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী ক্যান্টারবুরি। তাদের এই সিদ্ধান্তে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা জিতল সেন্ট্রাল ডিসট্রিক্টস।
দুই দলের মাঝে পয়েন্টের ব্যবধান ছিল ১৫। প্ল্যানকেট শেফিল্ড শিল্ডের শেষ রাউন্ডে শিরোপার লড়াইটা হতো সেন্ট্রাল ডিসট্রিক্টস ও ক্যান্টারবুরির মাঝেই। শেষ রাউন্ডে দুই দল নিজেদের ম্যাচ খেলতে নামত আগামীকাল। তবে গতকাল ক্রাইস্টচার্চে ঘটে যাওয়া হামলাই বদলে দিয়েছে সবকিছু।
ক্যান্টারবুরির ক্রিকেটাররা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এমন ভয়াবহ হামলার পর হ্যামিল্টনে ওয়েলিংটনের বিপক্ষে শেষ রাউন্ডের ম্যাচ তাঁরা খেলবেন না। ক্লাবটি প্রধান নির্বাহী জেজ কারউইন জানিয়েছেন, শিরোপা হাতছাড়া হলেও তাঁরা ক্রিকেটারদের সিদ্ধান্তের পক্ষেই আছেন, ‘এই ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ সবার ওপরেই প্রভাব ফেলেছে। এজন্যই ক্যান্টারবুরির সবাই শেষ ম্যাচ না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। তাদের নিয়ে আমি গর্বিত।’
ক্রিকেট নিউজিল্যান্ডের প্রধান নির্বাহী ডেভিড হোয়াইটও ক্যান্টারবুরির পাশে আছে। তিনি বলছেন, ক্রিকেটের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি, ‘ক্রিকেটের চেয়েই জীবন বড়। এমন অবস্থায় ক্যান্টারবুরির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাচ্ছি।’
ক্যান্টারবুরির এমন সিদ্ধান্তে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শেফিল্ড শিল্ডের শিরোপা নিশ্চিত করল সেন্ট্রাল ডিসট্রিক্টস। তাদের প্রধান নির্বাহী পেট ওয়েট অবশ্য ক্যান্টারবুরির ম্যাচ না খেলা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি, ‘ক্রাইস্টচার্চে ঘটনায় এখনো সবাই শোকের মাঝে আছে। আমরা এমন পরিস্থিতিতে শেফিল্ড শিল্ড নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’
এদিকে অকল্যান্ডের হয়ে শেষ ম্যাচ না খেলার ঘোষণা দিয়েছেন নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটার মার্টিন গাপটিল ও লকি ফার্গুসন। ক্রাইস্টচার্চের ঘটনার পর ডানেডিনে তাঁরা দলের সাথে যাননি। অকল্যান্ডের হাই পারফরম্যান্স দলের ম্যানেজার সাইমন ইনসলে বলছেন, দুজনের কেউই ম্যাচ খেলার মতো মানসিক অবস্থায় নেই, 'মার্টিন ও লকি আমাদের সাথে ডানেডিনে যাচ্ছে না। নিহতদের প্রতি আমদের সমবেদনা রইল।’
১৫ পয়েন্ট পিছিয়ে থাকলেও হয়ত শেষ ম্যাচে দারুণ কিছু করে শিরোপা জিততে পারত ক্যান্টারবুরি। কিন্তু এই শিরোপার চেয়েও যে তাদের কাছে ৪৯ টি প্রাণের মূল্য অনেক বেশি!