কিক অফের আগে: কাতর আর্জেন্টিনার লক্ষ্য শুধু একটা জয়
কবে, কখন
আর্জেন্টিনা-কাতার
রাত ১টা, পোর্তো আলেগ্রে
২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ। এছাড়া কাতারের ফুটবল বিশ্বে পরিচয় ছিল না এক বছর আগেও। এরপর এশিয়ার সেরা হয়ে কাতার সাড়া ফেলেছে ঠিকই, কিন্তু আর্জেন্টিনার মতো দলের বিপক্ষে তাদেরকে লড়াই করার মতো শক্তিশালী দল হিসেবে তাদেরকে হয়ত গণ্য করবেন না কেউ। কোপা আমেরিকা শুরু হওয়ার পর অবশ্য হিসাব গেছে পালটে। এই আর্জেন্টিনাকে এখন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এই কথাটা অন্তত মনে প্রাণেই বিশ্বাস করা উচিত কাতারের। ফুটবল বিশ্বে আরেকটা হুংকার তুলতে এর চেয়ে বড় উপলক্ষ্য আর হতে পারে না তাদের জন্য। আর্জেন্টিনাকে জিততে না দিলেই ১৯৮৩ সালের পর প্রথমবারের মতো কোপার গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়বে আর্জেন্টিনা। সেটা হলে আর্জেন্টানদের দুর্যোগ বাড়বে আরেক প্রস্থ।
আর্জেন্টিনার তাই প্রাথমিক লক্ষ্য এই দুর্যোগ মোকাবেলা করা। যে কোনোভাবে কাতারকে হারাতে পারলে দ্বিতীয় রাউন্ড মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের। আর বাকিটা কলম্বিয়ার ওপর ভরসা রাখতে হচ্ছে, প্যারাগুয়েকে তারা হারিয়ে দিলে রানার্স আপ হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যাবে আর্জেন্টিনা। কাতারকে হারিয়ে দিলেও লিওনেল মেসির দলের কোয়র্টার ওঠার পথ অবশ্য এতোখানি মসৃণও নাও হতে পারে, সেই হিসাব-নিকাশ দেখুন এখানে...
আরও পড়ুনঃ আর্জেন্টিনা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারে যেভাবে
এশিয়ান গেমসে গত বছর বাংলাদেশই কাতারকে হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। যদিও সেই কাতার আর এই কাতার দলে বিস্তর পার্থক্য। সেই দলের তিনজন আছেন এবারের কোপার স্কোয়াডে। পার্থক্য হলেও, কাতারের সবাই খেলেন নিজের দেশের লিগেই। ইতিহাস, ঐতিহ্য তো আছেই, ফুটবলীয় বিচারেও কাতার আর্জেন্টিনার কাছে ধোপে টেকে না। কিন্তু যদি বলা হয়, এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত দুই দলের মধ্যে ভালো ফুটবল কে খেলেছে, জবাব হবে কাতার। পাঁড় আর্জেন্টাইন সমর্থকেরাও এ নিয়ে বিতর্ক করতে আসবেন না হয়ত। বিতর্কের রসদ কোথায়?
কলম্বিয়ার কাছে হার মেনে নিলেও প্যারাগুয়ের বিপক্ষেও আর্জেন্টিনার দুর্বিষহ চেহারার কথা তো আর সহজে ভোলার নয়। মিডফিল্ড, ডিফেন্স, গোলকিপিং- সব জায়গায় যেন কেমন এক অস্বস্তি আর্জেন্টিনা দলে। হয়ত মাঝারি এক দল নিয়েই এবার কোপায় গেছে আর্জেন্টিনা, এরপরও সেই মাঝারি ফুটবলটাই খেলতে পারছে কই তারা? আগের দুই ম্যাচে আর্জেন্টিনার পারফরম্যান্স তাই রাতারাতি ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা নয় কাতারের বিপক্ষে। আপাতত তাই যে কোনো মূল্যে একটা জয়ই কামনা তাদের।
প্রথম ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও কাতার ড্র করেছিল ২-২ গোলে। এরপর কলম্বিয়াকে তারা আটকে রেখেছিল ৮৬ মিনিটে পর্যন্ত। পরে হেরেছে ১-০ ব্যবধানেই। শুরু থেকেই কাতার নিজেদের অর্ধেই খেলবে, কাউন্টার অ্যাটাকে আর্জেন্টিনাকে ঘায়েল করার চেষ্টা করবে। কাতারের জমাট রক্ষণ যে একেবারে অকার্যকর নয় সেটার প্রমাণ তারা দিয়েছে আগের দুই ম্যাচে। আর আর্জেন্টিনার আক্রমণে বিশ্বসেরা নামগুলো থাকলেও তারা যে কতোখানি অসহায় সেটাও এতোদিনে জেনে যাওয়ার কথা কাতারের। তাই আর যাই হোক, একপেশে ম্যাচ যে হবে না সেটা বোধ হয় বলাই যায়।
দলের খবর
মেধা সঙ্কট চলছে আর্জেন্টিনায়। অথচ পাউলো দিবালার মতো একজন মেধাবী ফুটবলারকে এখনও কাজে লাগাতে পারেননি আর্জেন্টিনা কোচ। কোপার দুই ম্যাচ চলে গেছে, এক মিনিটের জন্যও এখনও মাঠে নামানো হয়নি দিবালাকে। লিওনেল স্কালোনির গোঁড়ামি নাকি নিজের যোগ্যতার অভাব? স্কালোনির সিদ্ধান্ত বলছে কোচ হিসেবেই এখনও আনাড়ি তিনি। একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছেন স্কালোনি, ভুগতে থাকা আর্জেন্টিনা ভুগছে তাই আরও।
শোনা যাচ্ছে কাতারের বিপক্ষেও একাদশে ঠাঁই হচ্ছে না দিবালার। তবে ফিরতে পারেন সার্জিও আগুয়েরো। মেসি, আগুয়েরোর সঙ্গে মার্টিনেজকে নিয়ে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে ফেরত যেতে পারেন স্কালোনি। আগের দুই ম্যাচে মূলত ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলেছিল তার। এবার তাই একজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার দরকার স্কালোনির। প্রথম ম্যাচে খেলা রদ্রিগেজকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারেন তিনি একাদশে।
সম্ভাব্য একাদশ
আর্জেন্টিনা
আর্মানি, কাস্কো, পেতজেলা, অটামেন্ডি, টালিয়াফিকো, পারেদেস, রদ্রিগেজ, লো সেলসো, আগুয়েরো, মেসি, মার্টিনেজ
হেড টু হেড
২০০৫ সালে প্রথমবারের মতো কাতার আর আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয়েছিল ফুটবল ম্যাচে। এরপর এবারই প্রথম। সেই ম্যাচে হুলিও ক্রুস, হুয়ান রোমান রিকেলমে, রবার্তো আয়ালার গোলে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল আর্জেন্টিনা।
প্যাভিলিয়ন প্রেডিকশন আর্জেন্টিনা ১-১ কাতার